ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

হামিদ মীর, পাকিস্তানীই মানুষ নয়!!

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১০ মে ২০১৭

হামিদ মীর, পাকিস্তানীই মানুষ নয়!!

পাকিস্তানের সাংবাদিক হামিদ মীর শেষ পর্যন্ত তার আসল চেহারাটা দেখালেন। দুঃখজনকভাবে সেই চেহারার পুরোটাই ‘সাধারণ’ মানের এক পাকিস্তানীর, কোন রুচিশীল সংস্কৃতিবান মানুষের নয়। ১৯৭১ সালে তার বাবা ওয়ারিশ মীরকে দেয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা বাংলাদেশকে ফেরত দিয়েছেন হামিদ মীর। যে পুত্র তার পিতার সম্মাননার ভার বহন করতে পারে না সেই পিতার চেয়ে হতভাগা আর কে? মরহুম ওয়ারিশ মীর আশা করি পুত্রকে ক্ষমা করবেন!! কেন হামিদ মীর তার বাবাকে দেয়া সম্মাননা ফেরত দিলেন? পাকিস্তানের এক টিভিতে তিনি বলেছিলেন : পাকিস্তানীদের কয়েকজনকে ওই সম্মাননা দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ‘ধোঁকা’ দিয়েছেন। শেখ হাসিনার আমলেই বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। তিনি এই যুক্তিতে থাকলে আলোচনা এক রকম হতে পারত। কিন্ত সেই ঘোষণার পর তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠলে তিনি পথ পাল্টে নতুন করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে নিয়ে পাকিস্তানের মিথ্যাচারের মতোই। হঠাৎ হামিদ মীরের কণ্ঠে ইয়াহিয়া বা টিক্কা খানের সুর শুনতে পাই। পাকিস্তানের পত্রিকায় তার লেখার অনুবাদ দেখে জানতে পারি, এখন তিনি বলছেন : তার বাবাকে সম্মাননা জানিয়ে বাংলাদেশ নাকি তার ‘মুখ বন্ধে’র চেষ্টা করেছে। একটি মিথ্যাকে ঢাকতে অনেক মিথ্যার আয়োজন করতে হয়, সাংবাদিক হামিদ মীর শেষ পর্যন্ত সেই পথেই হাঁটলেন। হামিদ মীরের বাবাকে বাংলাদেশ কেন সম্মাননা জানিয়েছিল: পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ওয়ারিশ মীর ১৯৭১-এ নানা বাধা সত্ত্বেও তার ছাত্রদের নিয়ে সে সময়কার পূর্ব পাকিস্তান সফর করেছিলেন। সরেজমিনে দেখেছিলেন পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নারকীয়তার চিত্র। পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে শিক্ষক ওয়ারিশ মীর সেই চিত্র তুলে ধরেছিলেন তার লেখায়, কথায়। পাকিস্তানের পশ্চিম অংশে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্যই ওয়ারিশ মীরের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ। ওয়ারিশ মীরের সাংবাদিক পুত্র হামিদ মীর ২০১৩ ‘মুক্তিযুদ্ধে বন্ধু’র সম্মাননা গ্রহণ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে। হামিদ মীর বাংলাদেশে পরিচিতি পান ১৯৭১ সালের কৃতকর্মের জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলে। কিন্তু তার এই আহ্বানকে এখন নিছক ‘নাটক’ বলে মনে হয়। কারণ, বাবার সম্মাননা ফেরত দেয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে যখন তিনি বলেন : গোলাম আযমকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে দ- দেয়া হলে, কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সেই বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কলাম লিখলে বাংলাদেশ নাকি তাকে এ বিষয়ে কথা না বলতে অনুরোধ করেন!! প্রথম প্রশ্নটি হচ্ছে : ১৯৭১ সালে গোলাম আযমদের ভূমিকা জানার জন্য তাকে ব্যবহার করতে হচ্ছে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার বর্ম। হামিদ মীর তো একাধিক সাক্ষাতকারে বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জেনেছেন তার বাবার লেখা পড়ে। তার বাবা নিশ্চয়ই পূর্ববাংলায় পাকবাহিনীর বর্বরতার চিত্র তুলে ধরার সময় আলবদর, রাজাকারদের কথাও লিখেছিলেন? অথবা হামিদ মীর যখন নিজে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলে ‘হিরো’ হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তখন ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদারদের অপকর্ম সম্পর্কে সবটা জেনেই সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি যদি সবটা জেনেই থাকেন তা হলে গোলাম আযম-নিজামীদের নাম ও কুকর্ম সম্পর্কে জানেননি এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন। এখানেই মানুষ না হয়ে হামিদ মীরের পাকিস্তানী হওয়ার বিষয়টি দৃশ্যমান। এ এক অসাধারণ বৈপরীত্য হামিদ মীরের। একদিকে বাংলাদেশে গণহত্যার জন্য মায়াকান্না অন্যদিকে সেই গণহত্যার সবচাইতে বড় সহযোগী, দ-িত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের পাশে দাঁড়ানো ও তার পক্ষে কথা বলা। আপনার কোন্ অবস্থানকে বিশ্বাস করব, হামিদ মীর? ১৯৭১ সম্পর্কে পাকিস্তান তার নতুন প্রজন্মকে যে মিথ্যাচারের মধ্য দিয়ে গড়ে তুলছে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক উচ্চমাত্রায় নিয়ে যেতে সেটিই বড় বাধা। স্বাধীনতার প্রায় পাঁচ দশক পরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দৃঢ় অবস্থানের কারণে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে বাংলাদেশ। একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে এ ধরনের যে কোন উদ্যোগ নেয়া বাংলাদেশের একান্ত নিজস্ব বিষয় ও অধিকার। কিন্তু যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায় যখন একেকটি যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হলো তখন পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াটি দেখুন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে শিশু ও নারী হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ আর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রমাণিত সত্যের ভিত্তিতে, অপরাধীদের ফাঁসিতে ঝুলালে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব ওঠে, সকল কূটনৈতিক রীতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের মন্ত্রী বা কতিপয় রাজনীতিক বাংলাদেশের একবারে নিজস্ব বিষয়ে নাক গলান, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হুমকি দেন বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে যাওয়ার। পাকিস্তানের ওই প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে বাংলাদেশেও জনপ্রতিক্রিয়া হয়। দাবি ওঠে: যদি ওই দুর্বৃত্তদের পাকিস্তান তার নাগরিক বলে মনে করে, পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিক; ওদের পরিবার-পরিজনকে পাকিস্তানী নাগরিক হিসেবে সসম্মানে পাকিস্তানে নিয়ে যাক। দাবি ওঠে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবেই কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখার পক্ষেই মত দেন। কাজেই হামিদ মীরের ভাষায়, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক যদি তলানিতে গিয়ে ঠেকেই তার জন্য দায়ী পাকিস্তান, বাংলাদেশ নয়। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ উগড়ে দেয়ার জন্য হামিদ মীর প্রয়োগ করেছেন একজন ‘অতি সাধারণ পাকিস্তানী’ হিসেবে সবচাইতে ‘সস্তা’ অস্ত্রটি। তিনি বলছেন : বাংলাদেশ কি ভারতের আনুগত্য মেনে নিয়েছে? বাংলাদেশের ক্রিকেট দল পাকিস্তানে না যাওয়াতে তিনি এই সরল সমীকরণ তার। ক্রিকেটবিশ্বের নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের সরল সমীকরণে পৌঁছা একজন সাংবাদিকের পেশাদারিত্বের পরিচয় বহন করে না। নিজের ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশকে ভাবতেই হবে। যে পাকিস্তানের আকাশ আমেরিকান ড্রোনের দখলে: কখন-কোথায় ড্রোন হামলা করবে পাকিস্তান নিজেও জানে না, যে পাকিস্তানের অর্ধেক সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে পাকিস্তানী ও আফগান তালিবানরা, যে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা চষে বেড়ায় ধর্মান্ধ উগ্রগোষ্ঠী, যে পাকিস্তানের রাজনীতি আর ব্যবসার পুরো নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনী আর সেনা গোয়েন্দাচক্রের হাতে, যে পাকিস্তান তার উজ্জ্বল কিশোরী কন্যা মালালাকে নিরাপত্তা দিতে পারে না; সেই পাকিস্তানে জাতীয় ক্রিকেট দলকে পাঠাতে বাংলাদেশকে তো তিনবার ভাবতে হবেই। কিন্তু এই সফর কখনই হবে না এমন তো নয়। এই ক্রিকেট দলের সফর নিয়ে যে সস্তা মন্তব্যটি হামিদ মীর করেছেন তার জবাবে, দেখুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান। উপমহাদেশে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে দুই শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তান যখন পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা চালাল তখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে শান্তির দূত হয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লী ও ইসলামাবাদ সফর করেন। এ সময় দুই দেশকে এই বলে সতর্ক করে দেন যে, এই উন্মাদনা গোটা অঞ্চলের জন্য হুমকি ও আতঙ্কের। তিনি দিল্লী ও পিন্ডিকে স্পষ্ট বার্তা পাঠানÑ দুই দেশই যেন এই ভয়ঙ্কর খেলা থেকে সরে আসে। যথার্থ রাজনৈতিক নেতার মতোই তিনি আহ্বান জানান: পারমাণবিক বোমা তৈরির চাইতে ওই অর্থ যেন এ অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। মুম্বাইতে তাজ হোটেলে হামলার পর সন্ত্রাসবাদ যখন ভয়াবহ চেহারা নিয়ে হাজির হয়, ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের দিকে আঙ্গুল তুলে কথা কয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সে সময় কোন পক্ষেই না গিয়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আঞ্চলিক টার্স্কফোর্স গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। গত বছর সীমান্তে হত্যা নিয়ে চিরশত্রু পাকিস্তান ও ভারত যখন চূড়ান্ত রণ প্রস্তুতি নিয়ে উপস্থিত, সেই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেও স্থির কণ্ঠে শেখ হাসিনা দুই ‘ক্ষমতাধর’কে এই উন্মাদনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘নিশ্চয়ই দুই পক্ষকে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে, বুঝতে হবে যুদ্ধ কোন সমাধান নয়।’ বিশেষ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় সার্ক সম্মেলন স্থগিত হয়ে গেলে সার্কের অস্তিত্বই যখন সঙ্কটে, নানামুখী চাপের মধ্যেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তখন রাষ্ট্রনায়কোচিত ভাষায় বলেন : সার্কের প্রয়োজন এখনও ফুরিয়ে যায়নি, সময়ই বলবে সার্ক টিকে থাকবে কি-না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগের তালিকা আরও দীর্ঘ করা যায়। সব উদ্যোগেই দেখা যাবে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রতি সম্মান দেখিয়েই তার দূরদর্শী ও পরিমিত অবস্থান তুলে ধরেছেন। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেমন নাক গলাননি তেমনি ভারতের দিকেও ঝুঁকে পড়েননি। বজায় রেখেছেন অসাধারণ ভারসাম্য। পেশাদার সাংবাদিক হামিদ মীর কি বলবেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই কোন্ অবস্থানটিতে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের আনুগত্য প্রমাণিত হয়েছে? অবশ্যই ভারতের প্রতি বাংলাদেশের বিশেষ কৃতজ্ঞতাবোধ রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া আর সর্বাত্মক সহায়তার জন্যই শুধু নয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈনিকদের অকাতরে রক্তদান এই দুই দেশকে রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। বাংলাদেশ গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তার মূল্য দেয়। কিন্তু নিশ্চয়ই কোন ধরনের আনুগত্য দিয়ে নয়। হামিদ মীরকে খেয়াল রাখতে বলি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা পুরুষের কন্যা। তিনি শুধু রাষ্ট্র পরিচালনা করেন না, রাষ্ট্রের মর্যাদা রক্ষাকেও তিনি তার প্রধান কর্তব্য মনে করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের হুমকি, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বের ক্ষমতাধর অর্থনৈতিক সংস্থার দুর্নীতির ভুয়া অভিযোগ বা একজন ব্যাংকারের চাকরি রক্ষায় ক্ষমতাশালী দেশের দাপটশালী রাজনীতিকের পরামর্শ শেখ হাসিনাকে দেশের মর্যাদার প্রশ্নে তার অবস্থান থেকে এতটুকু টলাতে পারেনি। দেশের মর্যাদার প্রশ্নে কারো কাছে নতশির হওয়া শেখ হাসিনার রক্তের মধ্যেই নেই। কাজেই বাংলাদেশ ভারতের ‘অনুগত’ হয়ে গেছে এমন অভিযোগ একবারেই ঠুনকো। হামিদ মীর তার ‘মুখবন্ধ’ করার যে চটুল অভিযোগটি এনেছেন, সে সম্পর্কে বলি : ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেই বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে ‘বাংলাদেশ কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ নীতি নিয়েই পথ চলে। এই নীতিতে যারা বাংলাদেশকে সম্মান জানাবে বাংলাদেশও তার প্রতি সম্মান জানাবে। এখানে পুরস্কার দিয়ে কাউকে ভাড়া করার কোন উদ্দেশ্য নেই। অনেক রক্তে ভেজা বাংলাদেশের সংস্কৃতি হচ্ছে বন্ধুদের সম্মান জানানো, সে জন্যই ওয়ারিশ মীরকে পাকিস্তানের মতো দেশ থেকে খুঁজে বের করে সম্মাননা জানানো হয়েছে। একজন প্রয়াতকে সম্মান জানানোর মধ্যে কোন প্রাপ্তির প্রত্যাশা নেই। হামিদ মীর ওয়ারিশ মীরের পুত্র না হলেও বাংলাদেশ ওয়ারিশ মীরকে সম্মাননা জানাত ১৯৭১ সালে তার ভূমিকার জন্যই। এটিই বাংলার সংস্কৃতি। আন্তঃরাষ্ট্রিক সম্পর্ক নির্ধারিত ও পরিচালিত হয় কূটনীতির স্বাভাবিক নিয়মে। এখানে কারো মুখ ভাড়া করা বা মুখ বন্ধ করার কোন স্থান নেই। হামিদ মীর, আপনি যদি আপনার বাবার আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশে পাকিস্তানের গণহত্যাকে ঘৃণা করেন, আপনার কণ্ঠ যদি সত্যিই উচ্চকিত হয় এর বিরুদ্ধে, তা হলে বাংলাদেশ আপনাকে বন্ধু মনে করবে। আর যদি আপনার কণ্ঠে উঠে আসে দ-প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের কণ্ঠস্বর, তা হলে তার বিরুদ্ধে উচ্চারিত হবে বাংলাদেশের অযুত মানুষের দৃপ্তকণ্ঠ। আপনাকে বেছে নিতে হবে আপনি মানুষ হিসেবে সত্যের পথে থাকবেন, নাকি পাকিস্তানের বিভ্রান্ত প্রজন্মের প্রতিনিধি হবেন ! লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- বিএফইউজে
×