ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৭৭ ভাগ গার্মেন্টস কারখানায় সংস্কার সম্পন্ন

প্রকাশিত: ০৫:০২, ৯ মে ২০১৭

৭৭ ভাগ গার্মেন্টস কারখানায় সংস্কার সম্পন্ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রানা প্লাজা ধসের পর ৭৭ ভাগ গার্মেন্টস কারখানা সংস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউরোপের ক্রেতাজোট এ্যাকর্ড। গত চার বছর ধরে ১ হাজার ৫৩৪টি তৈরি পোশাক কারখানার অগ্নি, বৈদ্যুতিক ও ভবনের কাঠামোগত ত্রুটি কাজ করছিল এ্যাকর্ড। জোটের সদস্য চার শতাধিক কারখানার ৯০ শতাংশ ত্রুটি সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। প্রাথমিক পরিদর্শনে পাওয়া সব ত্রুটি সংশোধনের কাজ সম্পন্ন করেছে ৬৫টি পোশাক কারখানায়। এছাড়া সব ধরনের সংস্কারকাজ শেষ করার সাফল্য অর্জন করেছে সাতটি কারখানা। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ্যাকর্ড অন ফায়ার এ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা পরিদর্শক রব ওয়েজ। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে এ্যাকর্ড গঠিত হয়। বর্তমানে এ্যাডিডাস, ম্যাঙ্গো, পুমা, কেরিফোর, সিএ্যান্ডএ, ইন্ডিটেক্স, লোবল, টার্গেট অস্ট্রেলিয়াসহ ২২০টির বেশি ইউরোপীয় ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এবং দুটি বৈশ্বিক ইউনিয়ন এ্যাকর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আছে। এ্যাকর্ডের পাশাপাশি প্রায় একই সময়ে উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট এ্যালায়েন্স গঠিত হয়। পাঁচ বছরের জন্য এ্যাকর্ড গঠিত হয়। সেই হিসাবে আগামী বছরের মে মাসে সংস্থাটির কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা। তবে কারখানার সংস্কারকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় এ্যাকর্ড তাদের সময়সীমা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রব ওয়েজ সাংবাদিকদের বলেন, কয়েক মাস ধরেই এ্যাকর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ব্র্যান্ড ও গ্লোবাল ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনেক বৈঠক হয়েছে। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে বলে জানান তিনি। সংস্কারের বিষয়ে অগ্রগতির বিস্তারিত তুলে ধরেন রব ওয়েজ। এ সময় সংস্কারে পিছিয়ে থাকা কারখানার জন্য অর্থায়ন প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ করার ঘোষণাও দেয়া হয়। বর্তমানে আইএফসি (ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন) তৃতীয় পক্ষ অর্থাৎ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সংস্কার কাজের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। কিন্তু এ ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি জটিল হওয়া ও সুদের হার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় উদ্যোক্তারা এ ঋণের সুবিধা নিতে পারছিলেন না। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এ্যাকর্ড কারখানাগুলোর অবশিষ্ট সংস্কার কাজের মোট খরচের অর্ধেক সরাসরি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অবশ্য এই সহায়তা সীমিত হওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে দেয়ার কথাও জানানো হয়েছে। এ্যাকর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ্যাকর্ডভুক্ত কোম্পানির কাছে রফতানিকরা মোট কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৯২৩টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৫২৪টি পরিদর্শন করা হয়েছে। এসব কারখানা মধ্যে ৬৫টি ইতিমধ্যে সব ধররে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে। আর যথাসময়ে সংস্ক্রার কাজে ব্যর্থ হওয়া কিংবা এ্যাকর্ডকে সহযোগিতা না করার অভিযোগে ৭১টি কারখানার সঙ্গে ব্যবসা বাতিল করেছে এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ২২৮টি ব্র্যান্ড। রব ওয়েজ বলেন, কোম্পানিগুলো কোন ঝুঁকিপূর্ণ কারখানার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে না। অন্যদিকে শ্রমিকদেরও অধিকার রয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ কারখানায় কাজ না করার।
×