ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেড় বছরেও হয়নি মিউচুয়াল ফান্ডের আইন সংশোধন

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ১ মে ২০১৭

দেড় বছরেও হয়নি মিউচুয়াল ফান্ডের আইন সংশোধন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডে লভ্যাংশ হিসেবে রি-ইনভেস্টমেন্ট বন্ধ করতে আইনের সংশোধন খসড়া প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত হলেও গত দেড় বছরেও নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পায়নি। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খসড়া চূডান্ত হওয়ার পরও বেশকিছু মিউচুয়াল ফান্ড রি-ইনভেস্টমেন্ট ঘোষণা করেছে। অভিযোগ রয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনাকারী একাধিক সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি চায় না, আইনের প্রস্তাবিত সংশোধন চূড়ান্ত হোক। মূলত সে সকারণেই আইন সংশোধনের বিষয়টি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, একই দিনে আইপিও আইনে (পাবলিক ইস্যু রুলস) সংশোধন খসড়া অনুমোদনের পর জনমত যাচাই শেষে তা চূড়ান্ত ও কার্যকর করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নতুন আইনে আইপিও অনুমোদনও পেয়েছে একাধিক। পরবর্তী সময়ে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে দর প্রস্তাবে প্রাতিষ্ঠানিক যোগসাজশের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবারে আবারও নতুন সংশোধনী এনে তা জনমত যাচাইয়ের জন্য প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কমিশন। তবে এখনও আলোর মুখ দেখেনি মিউচুয়াল ফান্ডের আইন সংশোধন। আরও একটি সুযোগ নিয়েছে সম্পদ ব্যবস্থাপকগুলো। বিশেষ করে রেস পরিচালিত সবকটি ফান্ডই রি-ইউনিট ঘোষণা করে বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়েছে। অন্যদিকে ফান্ডগুলো নিজেদের ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাড়িয়েছে। যদিও আগে রি-ইউনিটের বিধান ছিলই না। এর আগে প্রস্তাবিত সংশোধন খসড়ায় বলা হয়েছে, কোন মিউচুয়াল ফান্ড থেকে বিনিয়োগকারীদের কখন লভ্যাংশ হিসেবে রি-ইনভেস্টমেন্ট বা পুনর্বিনিয়োগ দিতে পারবে, তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। সংশোধনী খসড়ায় বলা হয়েছে, কোন মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি সম্পদ মূল্য ওই ফান্ডের বাজারদরের তুলনায় কম হলে সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি লভ্যাংশ আকারে রি-ইনভেস্টমেন্টের প্রস্তাব করতে পারবে না। তাছাড়া লভ্যাংশ আকারে রি-ইনভেস্টমেন্ট অনুমোদন হলেও বিনিয়োগকারীকে নগদ বা রি-ইনভেস্টমেন্ট, এ উভয় পদ্ধতির মধ্যে যে কোন একটি বেছে নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। গত কয়েক বছর একাধিক সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি রি-ইনভেস্টমেন্ট আকারে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিচ্ছে। এতে ইউনিট হোল্ডারদের অন্তত ৩০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। জেনে বুঝেই সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি এমন লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করেছিল। ফান্ডগুলো ট্রাস্টি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা না করে ওই লভ্যাংশ অনুমোদন করে। এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনার প্রেক্ষাপটে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ সংক্রান্ত আইনের ধারায় সংশোধন আনার উদ্যোগ নেয়। সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনাকারী একাধিক সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি চায় না, আইনের প্রস্তাবিত সংশোধন চূড়ান্ত হোক। তারা প্রস্তাবিত সংশোধনে ব্যাপক রদবদল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যোগাযোগ করা হলে সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানিগুলোর এ বিষয়ে মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নতুন সংশোধন খসড়ায় মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বমোট মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছর রাখার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বর্তমানে এ নীতি কমিশনের একটি নির্দেশনা অনুসারে কার্যকর রয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, চাইলে মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডকে বেমেয়াদীতে রূপান্তরের সুযোগ বহাল থাকবে।
×