ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথমদিনে সেরা দলগুলোর জয়

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

প্রথমদিনে সেরা দলগুলোর জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (ডিপিএল) এবারের মৌসুম শুরু হয়েছে বুধবার। প্রথমদিনে তিনটি খেলা হয়েছে। সেরা দলগুলোই প্রথমদিনে জয় তুলে নিয়েছে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সেঞ্চুরিতে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। মুশফিকুর রহীমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জয় পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। আর আরাফাত সানির স্পিন ঘূর্ণিতে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ৭৮ রানে জয় পেয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে আবাহনীর সামনে ভালই টার্গেট ছুড়ে দেয় খেলাঘর। অধিনায়ক নাফিস ইকবালের ৭৮, ওপেনার রবিউল ইসলাম রবির ৭৪, অমিত মজুমদারের ৪১, নাজিমউদ্দিনের ৩৭ ও মাসুম খানের অপরাজিত ৩১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৯৩ রান করে খেলাঘর। সাইফউদ্দিন ৩ উইকেট নেন। ৩ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর দ্বিতীয় উইকেটে রবি ও নাফিস মিলে যে ১৪৯ রানের জুটি গড়েন এবং চতুর্থ উইকেটে অমিত ও নাজিমউদ্দিন মিলে যে ৭৮ রানের জুটি গড়েন, সেখানেই খেলাঘর এত বড় স্কোর গড়ার ভিত পেয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে গিয়ে মাসুম ১৮ বলে ঝড়ো ইনিংসটি খেলে খেলাঘরকে মজবুত অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দেন। কিন্তু এই রানও যে আবাহনীর কাছে কঠিন কিছু হয়ে দাঁড়ায়নি, তা ফলেই প্রমাণ হয়। ৮৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায় আবাহনীর। কিন্তু এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সৈকত মিলে যে চতুর্থ উইকেটে ১২৭ রানের জুটি গড়েন, আবাহনীর জয়ের সম্ভাবনা সেখানেই জেগে যায়। ২১২ রানে গিয়ে মাহমুদুল্লাহ (৫৯) আউট হলেও এরপর মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন সৈকত। ৭৯ বলে সেঞ্চুরিও পূরণ করে ফেলেন। জিততে যখন ১ রান দরকার, এমন মুহূর্তে গিয়ে ৮৫ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১১০ রান করে আউট হয়ে যান সৈকত। মিঠুন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৭ বলে অপরাজিত ৪২ রান করার সঙ্গে আবাহনীকে জিতিয়েও দেন। ৫ উইকেট হারিয়ে ৪৭.৩ ওভারে ২৯৭ রান করে জিতে লীগে শুভ সূচনা করে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। এই ম্যাচটিতেই লীগের উদ্বোধন করা হয়। ঘরোয়া কোন আসরে একই দলে এবার প্রথমবারের মতো খেলছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মুশফিকুর রহীম। স্বাভাবিকভাবেই লীগ যেহেতু হচ্ছে ওয়ানডে ফরমেটে, মাশরাফিরই অধিনায়ক থাকার কথা। কিন্তু সদ্যই টি২০ থেকে অবসর নেয়া মাশরাফি নেতৃত্ব নিতে চাননি। আর তাই মুশফিককে অধিনায়ক করা হয়েছে। বিকেএসপি-৪ নম্বর মাঠে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন মুশফিক। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত করে দলকে জেতালেন। ম্যাচটিতে ব্রাদার্স আগে ব্যাট করে অধিনায়ক মাইশুকুর রহমানের ৬৫ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২০৬ রান করে। শরীফ ৩ উইকেট নেন। মাশরাফিও টানা ৮ ওভার বল করে ২ উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে অধিনায়ক মুশফিকের অপরাজিত ৭৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৬.১ ওভার খেলে ২০৭ রান করে ম্যাচ জিতে যায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। বিকেএসপি-৩ নম্বর মাঠে প্রাইম দোলেশ্বর সহজ জয়ই পেয়েছে। আরাফাত সানি দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। একাই ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। আগে ব্যাট করে প্রাইম দোলেশ্বর আব্দুল মজিদের ৭৭, মার্শাল আইয়ুবের ৬৩ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৮৭ রান করে। গোলাম কবির ৩ উইকেট নেন। জবাবে ভারতের যশ পাল সিং ৭৪ রান করলেও জিততে পারেনি পারটেক্স। সানির স্পিন ঘূর্ণিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভার খেলে ২০৯ রানের বেশি করতে পারেনি। পারটেক্সের হারও হয় তাই বড় ব্যবধানেই। গত আসরের রানার্সআপ দল প্রাইম দোলেশ্বর বড় জয় পেয়েই লীগ শুরু করে এবার। স্কোর ॥ আবাহনী-খেলাঘর ম্যাচÑ ফতুল্লা খেলাঘর ইনিংস ২৯৩/৬; ৫০ ওভার (নাফিস ৭৮, রবি ৭৪, অমিত ৪১, নাজিমউদ্দিন ৩৭, মাসুম ৩১*; সাইফউদ্দিন ৩/৪৫, অনিক ২/৬৯)। আবাহনী ইনিংস ২৯৭/৫; ৪৭.৩ ওভার (সৈকত ১১০, মাহমুদুল্লাহ ৫৯, নাজমুল ৪৫, মিঠুন ৪২*; তাজিন ২/৩৬)। ফল ॥ আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (আবাহনী)। রূপগঞ্জ-ব্রাদার্স ম্যাচÑ বিকেএসপি-৪ ব্রাদার্স ইনিংস ২০৬/৯; ৫০ ওভার (মাইশুকুর ৬৫, ধীমান ৩০*, কামরুল ২৯; শরীফ ৩/২৫, মাশরাফি ২/২৮)। রূপগঞ্জ ইনিংস ২০৭/৬; ৪৬.১ ওভার (মুশফিক ৭৫*, হাসানুজ্জামান ৩১, নাঈম ২৫; অভিষেক ২/২২)। ফল ॥ রূপগঞ্জ ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মুশফিকুর রহীম (রূপগঞ্জ)। প্রাইম দোলেশ্বর-পারটেক্স ম্যাচÑ বিকেএসপি-৩। প্রাইম দোলেশ্বর ইনিংস ২৮৭/৯; ৫০ ওভার (মজিদ ৭৭, মার্শাল ৬৩, ইমতিয়াজ ৩৮; কবির ৩/৪১)। পারটেক্স ইনিংস ২০৯/৯; ৫০ ওভার (যশ পাল ৭৪, সাজ্জাদুল ৪৩; সানি ৫/৩৩)। ফল ॥ প্রাইম দোলেশ্বর ৭৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ আরাফাত সানি (প্রাইম দোলেশ্বর)।
×