ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ট্র্যাজেডির আরেক সূচনা ব্রিটেনে হামলা

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১১ এপ্রিল ২০১৭

ট্র্যাজেডির আরেক সূচনা ব্রিটেনে হামলা

ব্রিটেনের হার্ট লন্ডনের হাউস অব পার্লামেন্টের বাইরে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে আঘাত হানার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বর্তমান পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। প্রতীকীবাদ থেকে পালিয়ে বেড়ানো অসম্ভব। গণতন্ত্রের বাড়িতে তথা কেন্দ্রস্থলে হামলা এক ধরনের অদ্ভুত প্ররোচনাকে উদ্দীপিত করেছে। হামলায় একজন পুলিশসহ কয়েক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ধরনের হামলা মর্মান্তিক। এখন পর্যন্ত হামলার মোটিভ সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। বলা যেতে পারে, হামলাকারী পার্লামেন্টে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পথচারীদের হত্যা করা হয়েছে এবং কয়েকজন পথচারী আহত হয়েছেন। তবে এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য যেভাবে আরও ব্যাপক নিরাপত্তার প্রয়োজন ছিল, সে ক্ষেত্রে কিছুটা ঘাটতি ছিল। একটি ব্যস্ত আধুনিক নগরীতে অসীম ও অবাধ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অবস্থা বা সুবিধা থাকে না। তবে পুলিশ বলতে পারে, তাদের সিস্টেম বা ব্যবস্থা পরীক্ষিত। কিন্তু অপরাধী মনে হয় কেবল একটি দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত করতে অথবা মৃত্যু ও জখম করতে চায়নি। আমরা ধরে নিতে পারি, সে তার কাজের ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারের প্রত্যাশী ছিল। হতে পারে তার উদ্দেশ্য ছিল ভয়ভীতি ছড়িয়ে দেয়া। গণতন্ত্রের দৃঢ়তা পরীক্ষা করতেই হয়তো সে ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছিল। এভাবে সম্ভব হলে যেন গণতন্ত্রের আচরণে পরিবর্তন আনা যায়। এ ধরনের ঘটনায় আমাদের সাড়া বা প্রতিক্রিয়া অবশ্যই অতিরঞ্জিত হওয়া চলবে না। চলতি সপ্তাহে দায়েশের (আইএস) জন্মবার্ষিকী। আমরা দেখেছি আগে আইএস বার্ষিকীতে বেলজিয়ামের যোগাযোগ সিস্টেমে একটি সমন্বিত হামলায় ৩২ ব্যক্তির জীবনহানির পর ব্রাসেলস বিমানবন্দরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। এরও আগে প্যারিসে হামলা হয়েছিল। তখন ব্যক্তিক্রমধর্মী প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছিল। ইউরোপের মিডিয়া এবং রাজনীতিবিদরা হিস্টিরিয়াগ্রস্ত হওয়ার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছিলেন। বিবিসির সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল থেকে কয়েক দিন ধরে ভয়ভীতি, হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন এবং ভয়াবহ বিপদের কথা ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রচার করতে থাকেন। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ ঘোষণা করেন, ‘ইউরোপের সবাই আক্রান্ত’। তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ঘোষণা করেন, ‘যুক্তরাজ্য সত্যিকারভাবে অত্যধিক সন্ত্রাসী হুমকির মুখে’। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার উৎফুল্ল সমর্থকদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন, ‘বেলজিয়াম ও ফ্রান্স সর্বতোভাবে নানা অংশে বিভক্ত হয়ে খণ্ড খণ্ড হয়ে যাচ্ছে। মিডিয়ার সহায়তা ছাড়া সন্ত্রাসীরা অসহায়। মিডিয়াই কথা আর কাজের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের উদ্দীপিত করছে।’ শিক্ষাবিদ রিচার্ড ইংলিশ তার চিন্তাশীল ও বুদ্ধিবৃত্তিক ম্যানুয়েল, ‘সন্ত্রাসবাদ : কিভাবে এর জবাব দিতে হবে’- তে এ কথা বলতে গিয়ে বলেন, রাজনীতিবিদরা এ ধরনের সময়ে কথিত গণতন্ত্রের হুমকির নামে যা বলতে চান, তা কোন রক্তপাত অথবা ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়ে না। ‘অবিচারে প্ররোচিত করা, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অসংযত ও পাল্টা জবাব’ ইত্যাদি হচ্ছে অত্যধিক বিপজ্জনক। যারা অদ্ভুত ও সমঝোতামূলক অবস্থান গ্রহণের মাধ্যমে প্ররোচিত করতে চায় তাদের ব্যাপারে এ কথা বলা হয়েছে। মিডিয়া কোন নির্ধারিত পন্থায় সাড়া দিলেই কেবল সন্ত্রাসীরা যে কোন কৃত্রিম বা ভেজাল লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়। আমাদের স্মরণ করা উচিত, তেরেসা মে যখন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তখন প্যারিস ও বেলজিয়াম হামলার ব্যাপারে তিনি নাক গলিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে সেটা ছিল মারাত্মকভাবে অনধিকার চর্চা। পশ্চিমা বিশ্বে যেখানেই কোন ঘটনা ঘটেছে তাতে বিনা কারণে নাক গলানো হয়েছে। আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা বিল বেনি এসব ব্যাপারে এভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) কেন থাকা উচিত? অন্যভাবে বলা যায় তারা উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর জন্য মুক্ত ও স্বাধীন থাকবে। এ জন্য হয়ত সন্ত্রাসের হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে গত দু’বছরে ব্রিটেনে ৫টি জঙ্গী হামলার পরিকল্পনা ভণ্ডুল করে দিয়েছে পুলিশ। সন্ত্রাসীরা ব্রিটেনের রাজপথে এমন হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এ জন্য তারা হাতে অস্ত্র পাওয়ারও চেষ্টা করে। এ তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। তারা স্বীকার করেছে এ সময়ে আইনগতভাবে বৈধ ৮০০ অস্ত্র খোয়া গেছে। এ জন্য ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি এবং স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সন্ত্রাসবিরোধী কমান্ড জনগণের প্রতি বিরল একটি আর্জি জানিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, অপরাধ বিষয়ে অস্ত্রের হাতবদল অথবা আইনগতভাবে বৈধ অস্ত্রের অধিকারী যদি অস্ত্রের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে থাকেন তাহলে তারা যেন বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। ব্রিটেনে সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা শাখাগুলো কাজ করে যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হলো ২০১৫ সালের নবেম্বরে প্যারিস হামলার মতো হামলা প্রতিরোধ করা। পুলিশের আশঙ্কা, অপরাধীদের কাছ থেকে অস্ত্র পাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। লন্ডনের রাজপথে ও অন্য বড় শহরগুলোতে দৃশ্যত সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থাগুলো উদ্বিগ্ন। পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী শাখার ইনচার্জ, এ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার মার্ক রোলে বলেছেন, আমরা জানি সীমান্ত অতিক্রম করে অথবা ডিলারদের কাছ থেকে অথবা অন্য অনেক উপায়ে ক্রিমিনাল মার্কেটে অস্ত্র প্রবেশ করতে পারে। এসব অস্ত্রের সন্ধান, সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবেলা ও জনগণকে নিরাপদ রাখতে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। সঙ্গে রয়েছে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এক হয়ে তারা এ কাজটি করে যাচ্ছে। মার্ক রোলি আরও বলেছেন, গত দু’বছরে ১০টি হামলা পরিকল্পনা তারা ভণ্ডুুল করে দিয়েছেন। তবে তার মধ্যে অর্ধেক পরিকল্পনা ছিল জঙ্গীদের। তারা অস্ত্র হাতে পাওয়ার চেষ্টা করছিল। ব্রিটেনে অস্ত্র আইন কঠোর। ফলে এখানে হাতে অস্ত্র পাওয়া খুব সহজসাধ্য নয়। তবে তারা যেসব সম্প্রদায়ে পরিচিত সেখানকার অপরাধীদের কাছ থেকেই সন্ত্রাসীরা বেশিরভাগ অস্ত্র পেয়ে থাকে। পশ্চিম লন্ডনে একটি গ্রুপকে এমন কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ব্রিটেনে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় জঙ্গী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। তাদের টার্গেট ছিল পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বেসামরিক মানুষ। এসব সন্ত্রাসী লন্ডনভিত্তিক অপরাধীদের কাছ থেকে বন্দুক, সাইলেন্সার ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করতে চেয়েছিল। এ গ্রুপের মূল হোতা তারিক হাসান (২২) ও তার বন্ধু সুহায়েব মাজিদ (২২) কে গত মার্চে সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অন্য দু’জন নিয়াল হ্যামলেট, নাথান কাফিকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তারিক হাসানকে মোহাম্মদ ইমওয়াজির সহযোগী হিসেবে সন্দেহ করা হয়। উল্লেখ্য, মোহাম্মদ ইমওয়াজি বিশ্বব্যাপী আইসিসের ‘জিহাদি জন’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তারপর থেকে অস্ত্র সংক্রান্ত অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত লন্ডন থেকে ২০২টি অস্ত্র প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। গত বছর একই সময়ে এর সংখ্যা ছিল ৮৭। ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির মহাপরিচালক লিন ওয়েন বলেছেন, বর্তমানে আমরা বিশ্বাস করি আমরা এগিয়েছি অনেকটা। ইউরোপীয় অন্যান্য দেশ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের তুলনায় এখন ব্রিটেনে অবৈধ অস্ত্রের প্রাপ্যতা খুব কম। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা যে অগ্রগতি সাধন করেছি, সে বিষয়ে চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। এই মানকে ধরে রাখতে আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরে সন্ত্রাসীদের ডিএনএ প্রক্রিয়াজাত করতে ১৪৩ দিন লাগবে। আর ইইউর ভেতরে এর জন্য লাগবে মাত্র ১৫ মিনিট। এখনো কি তিনি সেই কথা বলেন? যারা আমাদের পক্ষে বলেন, আমাদেরকে তাদের সম্মান করতে হবে। তবে সন্ত্রাসবাদ একটি অদ্ভুত পাগলামিকে প্ররোচিত করছে। ব্রিটিশ সরকার তার আগের কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তারা ‘নন-ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম’ বা অহিংস চরমপন্থার কাউন্টার করার জন্য তাদের কর্মসূচী উপস্থাপন করছে, যা সন্ত্রাসবাদের পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হতে পারে। আমলাতন্ত্র এখন প্রকাণ্ড ও ব্যাপক। মাত্র এক সপ্তাহ মেট্রোপলিটন পুলিশ আগন্তুকদের ভীতি প্রদর্শন করে দেয়ার জন্য হুঁশিয়ার করে দেয়নি। বিবিসির সাম্প্রতিক একটি ‘ড্রামা ডকুমেন্টারির’ শিরোনাম ছিল হামলা হচ্ছে পুলিশের জন্য অধিক অর্থ উপার্জনের একটি খারাপ ছদ্মবেশী প্রচারণা। এ ধরনের ঘটনা আনুপাতিকহারে কমিয়ে আনার জন্য আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, সন্ত্রাস দমনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। এই অর্থ অসামঞ্জস্যপূর্ণ বা অনুপাতহীন বলার সময় এখন নয়। বরং বলা যায়, সব অর্থ এখন সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যেই পূরণ করছে। সত্যিকার অর্থে এতে প্রত্যেকেই জড়িত। সাংবাদিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, পুলিশ ও নিরাপত্তা লবিস্টরা সবাই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। সর্বগ্রাসী বা একনায়কতান্ত্রিক দেশগুলোতে কম সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটে। সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পৃক্ত খবরাখবর নিয়ন্ত্রণ বা সেন্সর করা হয়। খবর প্রচারে সেন্সর সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বলা হয়ে থাকে, মুক্ত সমাজে এ ধরনের খবর নিয়ন্ত্রণ বা সেন্সর করা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। এমনকি নিজে নিজে সেন্সরশিপ আরোপ করার বিষয়টি স্বীকার করতেও অনীহা প্রকাশ করা হয়। গত বছর ফরাসী পত্রিকা লা মন্ডে সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ডের জন্য কারা দায়ী, তাদের নাম পত্রিকায় প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে তাও সমালোচিত হয়। নিহত ব্যক্তিদের জন্য যারা সরকারকে অর্থসহায়তা দিয়েছিলেনÑ তারা প্রচার না পাওয়ায় সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু খবরের প্রত্যেক আইটেম প্রকাশ করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অবশ্যই যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে। এটা ‘সেন্সরশিপ’ নয়। কেউ যদি তাদের খারাপ কাজের প্রচারণা চায়, সেটা কি প্রচার করা যায়? কিছু লোককে হত্যা করার ইচ্ছা না থাকলেও ওই ধরনের সংবাদে কিন্তু অনেকেই ভীতসন্ত্রস্ত হয়। মিডিয়াকে একটি অত্যাবশ্যকীয় গুণসম্পন্ন হতে হবে। মিডিয়ার কাজ ভয়ভীতি ছড়ানো নয়, মিডিয়াকে সম্পাদনার মাধ্যমে রিপোর্ট সম্প্রচার করতে হবে। সন্ত্রাসবাদের সব বিশ্লেষক এই অভিমত ব্যক্ত করেন যে, এটা কোন আদর্শ নয়। বন্দুক বা বোমা কোন দেশ বা সমাজের জন্য ‘বিরাজমান’ হুমকি নয়। যেসব রাজনীতিবিদ বন্দুক আর বোমার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের কায়েমি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ভীতি ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেয়, তারা সমাজের জন্য ক্ষতিকর। তারাই মানুষের মাঝে হতাশা ছড়াতে চায়। সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের একটি পদ্ধতি। যে পাগল হত্যাকাণ্ড ঘটায় তার বিরুদ্ধে সত্যিকারের কোন প্রতিরোধ, প্রতিরক্ষা বা আত্মরক্ষা হয় না। লন্ডনের সড়কগুলোও সম্ভবত অধিকতর নিরাপদ নয়। মৃত্যু যে এসে গেছে, তা জানান দেয়ার জন্য যানবাহনের ব্যবহার মোটরকারের মতোই পুরনো। ১৯২০ সালে মারিও বোদা ওয়ালস্ট্রিটে তার কারবোম্ব বা গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর পর থেকে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। ইলেকট্রনিকসের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অগ্রগতি সুস্পষ্টভাবে এটাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। তাই বিমানে ল্যাপটপ বহনের ব্যাপারেও নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বিমান এখনও যানবাহনের চেয়ে নিরাপদ। তাই ব্রিটিশ সরকার ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে আইরিশ রিপাবলিকান আর্মির (আইআরএ) ঘটনাগুলোর ব্যাপারে তাদের আপাতত রাজনৈতিক ইশারা না দিয়ে তাদের কর্মকাণ্ডকে যে এলোপাতাড়ি অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সত্যিকারভাবে সেটাই সঠিক ছিল। বর্তমানে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটছে তার চেয়ে আইআরএর সন্ত্রাসবাদ অনেক বেশি মারাত্মক হুমকি। বিচার ছাড়াই ডিটেনশন এবং জনগণের আইআরএ বিষয়ক বক্তব্যকে সেন্সর করা হচ্ছে কিছু স্বাধীনতা খর্ব করা। আতঙ্ক বা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে হয়ত ছোটখাটো জয়লাভ করা যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্রিটিশ স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করা যায় না। লেখক : কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য ৎধরযধহ৫৬৭@ুধযড়ড়.পড়স
×