ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মেসিকে ম্লান করে নেইমারের গোলের সেঞ্চুরি

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৪ এপ্রিল ২০১৭

মেসিকে ম্লান করে নেইমারের গোলের সেঞ্চুরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বপ্নের সময় অতিবাহিত করছেন। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে একের পর এক গোল করে যাচ্ছেন। ক্লাব বার্সিলোনার জার্সিতেও রূপকথার মতো সময় কাটছে নেইমারের। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে পিএসজি থেকে লা লিগায় সর্বশেষ গ্রানাডা ম্যাচেও গোল পেয়েছেন। তাতে কাতালান ক্লাবটির হয়ে গোলের সেঞ্চুরিই উদযাপন করে ফেললেন এই ওয়ান্ডার বয়। রবিবার রাতে লা লিগায় এ্যাওয়ে ম্যাচে বার্সিলোনা ৪-১ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক গ্রানাডাকে। এই ম্যাচে এক গোল করে বার্সার হয়ে গোলের সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন নেইমার। এক্ষেত্রে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন লিওনেল মেসিকেও। একই রাতে সহজ জয় পেয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে গ্যালাক্টিকোরা ৩-০ গোলে হারিয়েছে আলাভেসকে। এই জয়ে ২৮ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রিয়াল। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সিলোনা। ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের অবস্থান তিন নম্বরে। বার্সার জয় নিয়ে কোন সংশয় ছিল না। তবে দেখার বিষয় ছিল, মেসিবিহীন ম্যাচে কেমন খেলেন সুয়ারেজ-নেইমাররা। সেই পরীক্ষায় বেশ ভালভাবেই উতরে গেছেন এমএসএন ত্রয়ীর ‘এসএন’ জুটি। ম্যাচের সাত মিনিটেই গোলের সুযোগ পায় বার্সা। তবে নেইমার ও সুয়ারেজের জোড়া আক্রমণ রুখে দেন গ্রানাডার ম্যাক্সিকান গোলরক্ষক ওচোয়া। সুয়ারেজের শট ক্রসবারে লাগে আর ফিরতি বল নেইমার জালে পাঠালেও অফসাইডে ফাঁড়ায় পড়ে গোল বাতিল হয়। ১৭ মিনিটে ইনজুরিতে পড়ে রাফিনহা মাঠের বাইরে চলে গেলে লুইস এনরিকের কপালে বেশ বড় একটা ভাঁজ পড়ে। বার বার আক্রমণ করে গ্রানাডার রক্ষণভাগ কাঁপালেও গোল পাচ্ছিল না বার্সিলোনা। প্রথমার্ধটা যখন গোলশূন্য ড্রয়ের দিকে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দেন সুয়ারেজ। জর্ডি আলবার বলে ডি বক্সের বাইরে থেকে ওচোয়ার মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। বিরতি থেকে ফিরেই বার্সাকে অবাক করে দিয়ে গোল করে গ্রানাডা। ৫০ মিনিটে জেরেমি বোগা দলকে সমতায় ফেরান। এরপর আবার গোলে জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন নেইমাররা। ৬৪ মিনিটে আলকেসার এগিয়ে দেন কাতালান ক্লাবটিকে। সুয়ারেজের উঁচু করে বাড়ানো বল পেয়ে ডি বক্সে ঢুকে গোল করেন আলকাসের। ৮২ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় গ্রানাডা। আর এরই সুযোগে ৮৩ মিনিটে গোল করে বসেন বার্সার মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচ। গোলের সেঞ্চুরি অপেক্ষায় থাকা নেইমার দারুণ খেললেও গোল পাচ্ছিলেন না। অবশেষে অতিরিক্ত সময়ে গোলের দেখা পান ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। আরেক ম্যাচে আলাভেসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ড টানা ৫০ ম্যাচে গোল করার রেকর্ড গড়ে রিয়াল। রিয়ালের জয়ে গোলগুলো করেন করিম বেনজেমা (৩১ মিনিট), ইস্কো (৮৫ মিনিট) ও নাচো (৮৮ মিনিট)। বার্সার হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মাত্র ১৭৭ ম্যাচে ১০০ গোলের দেখা পেয়েছেন নেইমার। এখানে মেসির চেয়েও এগিয়ে তিনি। মেসির যেখানে গোলের সেঞ্চুরি করতে ১৮৮ ম্যাচ লেগেছিল, সেখানে নেইমার ১১ ম্যাচ কম খেলেই এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন। এমএসএন ত্রয়ীর মধ্যে সুয়ারেজও চলতি বছর এক শ’ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। আর মেসি তো বার্সার হয়ে ৫০০ গোলের মাইলফলকই অর্জন করেছেন। কাতালানদের হয়ে ব্রাজিলের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে শততম গোলের মাইলফলকে পা রাখলেন ২৫ বয়সী নেইমার। এর আগে রিভাল্ডো ১৩০ ও ইভারিস্টো ১০৬ গোল করেছিলেন ন্যুক্যাম্পের দলটির হয়ে। ক্লাব বার্সার হয়ে ২০১৩ সালে সুপার কোপায় এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথম গোলটি করেছিলেন নেইমার। আর পরশু রাতে গ্রানাডার বিপক্ষে ম্যাচের যোগ করা সময়ে গোল করে নিজস্ব ভঙ্গিতে ‘১০০’ গোল উদযাপন করেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত নেইমার লা লিগায় ৬১, কোপা ডেল রে’তে ১৪, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ১৯, সুপার কোপায় ১ এবং প্রীতি ম্যাচে ৫ গোল করেছেন। শততম গোলের মাইলফলক অর্জনের উচ্ছ্বাস ঝরেছে নেইমারের কণ্ঠে। জানিয়েছেন, সব কৃতিত্ব তার সতীর্থদের। যারা তাকে গোল করতে সহায়তা করেছেন। নেইমার বলেন, আমি জানতাম না একটা গোল পেলেই আমার শততম গোল পূর্ণ হবে। এক শ’ গোলের মাইলফলক আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই মুহূর্তে আমার বার্সার হয়ে প্রথম গোল, সম্ভবত সুপার কোপায় এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে, গোলটার কথাই খুব মনে পড়ছে। প্রিয় শিষ্যের মাইলফলকে উচ্ছ্বসিত বার্সা কোচ লুইস এনরিকে বলেন, প্রতি ম্যাচেই নেইমার নিজেকে সেরা প্রমাণ করে যাচ্ছেন। তাকে সামলানোটা প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। সে যেভাবে এগোচ্ছে তাতে আমি আশা করি, বার্সার জার্সিতে সে হাজার গোল করবে।
×