ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁদে যাওয়ার রুশ পর্যটন প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১ এপ্রিল ২০১৭

চাঁদে যাওয়ার রুশ পর্যটন প্রকল্প

মহাকাশ গবেষণায় অনেক এগিয়ে থাকলেও কখনও চাঁদে মানুষ পাঠায়নি রাশিয়া। স্নায়ু যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিয়ে দেশটি ১৯৬১ সালে প্রথম পৃথিবীর কক্ষপথে মানুষ পাঠায়। সেই বছরের ১২ এপ্রিল প্রথম মানুষ হিসেবে পৃথিবীর কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করেন রুশ নভোচারী ইউরি গ্যাগারিন। রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমস’এর সাফল্যের কারণেই ১৯৬২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি আগামী ১০ বছরের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর ঘোষণা দেন। তার সেই ঘোষণাকে ১৯৬৯ সালে বাস্তবে রূপ দেয় মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। চাঁদের বুকে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ওড়ে। অবশ্য সেই ঐতিহাসিক ঘটনারও ১০ বছর আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন চাঁদে অভিযানে সফল হয়েছিল। ১৯৫৯ সালে পৃথিবীর উপগ্রহটিতে অবতরণ করে প্রথম মানুষ্যনির্মিত রাশিয়ার যান লুনা ২। তাই রুশ মার্কিন স্নায়ু যুদ্ধের সময় সবার ধারণা ছিল উপগ্রহটিতে রাশিয়াই সবার আগে পৌঁছবে। কিন্তু প্রথমদিকে উৎসাহ দেখালেও রহস্যময় কারণে চাঁদের অভিযান থেকে সরে আসে রসকসমস। অবশ্য দীর্ঘদিন পরে হলেও চাঁদে মানুষ পাঠাতে আবারও আগ্রহী হয়েছে রাশিয়া। এই লক্ষ্যে বিশেষ নভোযান বানানোর পরিকল্পনাও রয়েছে রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থার। যার অর্থের যোগানও দিচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালিত একটি জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তবে ৫৮ বছর পর চাঁদে মানুষ পাঠাতে নিজেদের সংস্থার লোক নয়, বাইরে থেকে আগ্রহী কর্মী খুঁজছে রসকসমস। এজন্য তারা আগ্রহীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করছে। পশ্চিমের বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবর, মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি অন্তত ৮ জন নভোচারী খুঁজছে যারা চাঁদে অভিযানে যেতে ইচ্ছুক। পাশাপাশি চাঁদের উদ্দেশ্যে পাঠানো নতুন প্রযুক্তির মহাকাশযানও চালাতে সক্ষম। আগ্রহীদের মধ্যে যারা মনোনীত হবেন, তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মহাকাশ যাত্রায় তৈরি করবে সংস্থাটি। উৎসাহীদের কাছ থেকে আগামী ৪ মাস পর্যন্ত এই আবেদন গ্রহণ করা হবে। বলা হয়, বর্তমানে রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় অন্তত ৩০ জন নভোচারী রয়েছেন। যাদের মধ্যে ১৪ জনের আবার মহাকাশে কাটানোর কোন অভিজ্ঞতাই নেই। কিন্তু ২০৩১ সালে চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা থাকা মানে মাঝে দীর্ঘ সময় পাচ্ছে রসকসমস। তাহলে নিজেদের কর্মীদের বাধ্য না করে কেন আগ্রহীদের চাইছে সংস্থাটি? যদিও বিশেষজ্ঞরা একে সংস্থাটির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখছেন! তবে এলিয়েন বিশ্বাসীরা বলছেন অন্য কথা! তাদের মতে, চাঁদে মানুষের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি রয়েছে বলেই হয়ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭২ সালে সব ধরনের অভিযান বন্ধ করে দেয়। যদিও ১৯৬৯ সাল থেকে ৭২ সাল পর্যন্ত অন্তত ছয়বার মানুষ পাঠিয়েছিল নাসা। এরপর থেকে অনেকদিন পর্যন্ত সংস্থাটির তরফে তেমন কোন আগ্রহ দেখা যায়নি। বরং যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তীতে বিশেষ কারণে চাঁদে পরমাণু বোমা ফেলেছে বলেও গুজব রয়েছে। তাই দীর্ঘদিন পর চাঁদে অভিযান নিয়ে রাশিয়ার এমন পদক্ষেপে এলিয়েন বিশ্বাসীদের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে!
×