কেমন আছেন? উত্তর, এই তো ভাল। কোথায় আছেন? পাবনা। পাবনা? আপনি ভাল আছেন তো? হ্যাঁ আমি খুব ভাল আছি। কেবল শহর থেকে দূরে আছি। যে কারণে মোবাইল নেটওয়ার্কের সঙ্কেত খুব একটা ভাল পাচ্ছি না। তারপরও ভাল আছি। মনোযোগ দিয়ে সিনেমার কাজ করছি। কথা হচ্ছিল এই সময়ের ব্যস্ত অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়ার সঙ্গে। বর্তমানে খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অভিনেত্রী। তাঁর চলমান হালহকিকত নিয়ে বিস্তারিত কথা হয় আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে। স্পর্শিয়ার জন্ম রাজধানী শহর ঢাকায়। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। লেখাপড়া করেছেন ইংরেজী মাধ্যমে। ছোটবেলা থেকে লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী স্পর্শিয়া। বাড়িতে প্রচুর বই আসত, বাবা মা সুযোগ পেলেই বই নিয়ে বসত সেই অভ্যাস সংক্রামিত হয়ে ভর করে আমার ওপর। আমিও বই পড়তে ভালবাসি। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বই পড়ার পাশাপাশি সিনেমা দেখার অভ্যাস তৈরি হতে থাকে। আমি বইয়ের সঙ্গে সিনেমাপ্রেমী হয়ে উঠলাম। ভীষণ এনজয় করতে শুরু করলাম খুব ভাল ভাল গল্পের সিনেমা। বই এবং সিনেমা আমার কল্পনার রাজ্য কয়েক গুণ বড় করে দিল। আমার মনোজগতের সীমানা ছাড়িয়ে গেল স্বপ্নের গ-িকে। আমি নিজেকে উপলব্ধি করলাম একজন স্বপ্নচারী মানুষ হিসেবে। এর পর ভাবতে শুরু করলাম সমাজ– সংসারে নিজেকে কিভাবে উপস্থাপন করা যায়। জীবনের সব গল্প ক্যামেরবন্দী করে মানুষের সামনে নিয়ে আসার নামই সিনেমা। আমি কেবল গল্প বলেতে চাই না দেখাতেও চাই। পরিচালক হবার স্বাদ মনের মধ্যে শক্তভাবে বাসা বাঁধল। সিনেমা বানাব। নিজেকে নিয়ে সেভাবেই হাঁটছিলাম। হঠাৎ পথিমধ্যে এয়ারটেলের সঙ্গে দেখা। প্রস্তাব পেলাম তাদের সঙ্গে কাজ করার। গুরুগম্ভীর না ভেবে রাজি হয়ে গেলাম। প্রথম কাজ কৌতূহলের সঙ্গে করি। তারপর টানা বারোটা বিজ্ঞাপনে কাজ করি তাদের সঙ্গে। আমার কাজগুলো তাদের পছন্দ হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে এক ঘণ্টার একটি নাটক ‘অরুণোদয়ের তরুণ সাক্ষী’ তে কাজ করি। এরপর থেকে আমর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর ব্যাপ্তি দিন দিন বাড়তে থাকে। আমি ছোট পর্দায় হয়ে উঠলাম খুবই নিয়মিত অভিনেত্রী। এ যাবত কতগুলো নাটকে অভিনয় করেছেন? উত্তরে বলেন, প্রায় দু’শ’। চলতি বছর স্পর্শিয়ার অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে চলচ্চিত্রের রুপালি পর্দায়। ইতোমধ্যে একাধিক সিনেমার মূলচরিত্রে নিজের নাম যোগ করেছেন। অধুনা অনন্য মামুন পরিচালিত বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র বন্ধন-এ কাজ করছেন। ছবির কাজ পঞ্চাশ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজও খুব তাড়াতাড়ি শেষ হবে। পাশাপাশি একটি বিকল্প ধারার চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। কী নাম? পরিচালনা কে করছেন? উত্তরে, মিষ্টি হেসে বলা যাবে না কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আসছে স্বাধীনতা দিবসের একটি টেলিফিল্মে দেখা যাবে এই সুন্দরী অভিনেত্রীকে। নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে বলেন, ‘ইচ্ছা ছিল ক্যামেরার পেছনে থেকে দর্শকদের জন্য কাজ করব কিন্তু সে সুযোগ আপাতত হলো না। ভবিষ্যতে যে হবে না তা কিন্তু নয়। আমার স্বপ্নই একজন ডিরেক্টর হবার। দর্শকদের মনোরাজ্যে আনন্দের রসদ যোগাতে চাই।
যেতে চাই তাদের আরও গভীরে। ইন্ডাস্ট্রির কার কার কাজ আপনার ভাল লাগে? বর্তমানে যারা কাজ করছেন তাদের প্রায় সকলের কাজই আমার ভাল লাগে। দেশের বাইরে কাজ করার ইচ্ছা আছে? হ্যাঁ। আমার তো কেবল বাংলা ভাষা নয় ইংরেজী, ফ্রেন্স স্প্যানিশ আরও অন্যান্য ভাষার সিনেমাতে কাজ করার ইচ্ছা। যোগ্য শিল্পী হিসেবে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ? যা কিছু ভাল। যা কিছু মানুষের জন্য মঙ্গল কর তার সব কিছুই আমার পছন্দ। অন্যদিকে যা কি অমঙ্গলকর তা আমার অপছন্দ। স্পর্শিয়া সরল মনের স্পষ্টভাষী অভিনেত্রী। নিজের কিংবা চরিত্রের প্রয়োজনে সাহসী পদক্ষেপ নিতে পিছপা হন না। পেশাদারিত্বের খাতিরে আপোস নয়। এমনি দৃঢ়চেতা মানসিকতা তার মধ্যে গভীরভাবে লক্ষ্য করা যায়।