ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্য ট্রানজিট পাস শীঘ্রই চালু

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্য ট্রানজিট পাস শীঘ্রই চালু

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাসী দমনের নামে টানা চার মাস অভিযান চালানোর পর সমাপ্তির ঘোষণা এবং উত্তর মংডুর একটি সীমান্ত গেট খুলে দেয়ায় হাসি ফুটেছে সীমান্তে বসবাসকারীসহ রোহিঙ্গাদের মুখে। শীঘ্রই খুলে দেয়া হচ্ছে টেকনাফ-মংডু ট্রানজিট যাতায়াত ঘাট। পুনরায় চালু করা হচ্ছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যের কার্যক্রম। গত বুধবার রাতে মিয়ানমার কারফিউ শিথিল, অভিযান বন্ধের এবং বৃহস্পতিবার উত্তর মংডুর একটি সীমান্ত গেট খুলে দেয়ার কথা জানিয়ে দেয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে পত্র দিয়েছে মিয়ানমার। দেশটির সেনাবাহিনীর নির্দয় অত্যাচারে পালিয়ে আসা হাজার হাজার নারী-শিশু ও পুরুষকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ দেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। কিন্তু হাজার বছর ধরে সেখানে বসবাসকারী জাতিগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী বলে দাবি করছে মিয়ানমার। এদিকে টেকনাফের ব্যবসায়ীরা জানান, চার মাসের অধিক সময় ধরে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকায় টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্যের কর্মকা-, ব্যবসায়ী যাতায়াত ও একদিনের জন্য ট্রানজিট যাতায়াত পাস অঘোষিতভাবে বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। টেকনাফ-মংডু যাতায়াত চালু করতে মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশকে পত্র দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ। তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের পাঠানো পত্রের বিষয়টি সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। যে কোন মুহূর্তে সীমান্ত বাণিজ্য, ব্যবসায়ী যাতায়াত ও টেকনাফ-মংডু ট্রানজিট যাতায়াত পাস চালু হওয়ার আদেশের অপেক্ষায় রয়েছি। তিনি আরও জানান, মিয়ানমার সীমান্ত পয়েন্ট (উত্তর মংডুর একটি সীমান্ত গেট) খুলে দিলেও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সম্ভাব্য সব পয়েন্টে বিজিবি টহল জোরদার অব্যাহত রেখেছে। অপরদিকে রোহিঙ্গা নেতারা বলেছেন, মিয়ানমারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে সেখানে (মিয়ানমার) রোহিঙ্গা মুসলিম শূন্য করা। তাই তারা ছলে-বলে কৌশলে রোহিঙ্গামুক্ত মিয়ানমার গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। হাজার বছর ধরে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে বসবাস করে আসলেও ধর্মীয় কারণে বাঙালী আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার পাঁয়তারা করছে মিয়ানমার। নাগরিক অধিকার ফেরত দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত না করলে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তারা বলেন, মিয়ানমারে স্বাধিকার আদায়কল্পে সহযোগিতা হিসেবে রোহিঙ্গাদের উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে স্থানীয়দের সঙ্গে চাকরির বাজারে ভাগ বসানোর আশঙ্কা থাকলে প্রয়োজনে তাদের সনদে রোহিঙ্গা শব্দ সংযোজন করা যেতে পারে। এরপর তারা নিজেদের সমস্যার সমাধান নিজেরা করার যোগ্যতা অর্জন করবে।
×