ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

শরীফা খন্দকার

ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া শীতল চন্দন বৃক্ষে আগুন

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া শীতল চন্দন বৃক্ষে আগুন

‘আমি যেন সোনার খাঁচায় ॥ একখানি পোষমানা প্রাণ... ‘এতদিন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে দেখে অতলান্তিক দেশের ফেমিনিস্টদের নাকি এমনটি মনে হয়েছে! সত্যি কথা বলতে কি, এ বিষয়ে মিছামিছি ওদের দোষ দেয়া যাবে না। সাবেক যুগোসøাভিয়ার সেøাভেনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী প্রাক্তন মডেল কন্যাটির পদযাত্রায় মানুষ বরাবর দেখেছে একটা সারল্য, যা চোস্ত মার্কিন যুবতীর সঙ্গে মেলে না। যে কোন সাধারণ মার্কিন মেয়ের কাছেও সিম্পল বা সরল শব্দটা কোন প্রশংসাসূচক নয়, একেবারেই অপমানসূচক। আমেরিকার এই বর্তমান প্রেসিডেন্ট পতœী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশী বংশোদ্ভূত দ্বিতীয় ফার্স্ট লেডি। মার্কিন দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন এ্যাডামসের পতœী লুইসা বিদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রথম ফার্স্ট লেডি। লুইসা এ্যাডামসের পিতা এক সময় লন্ডনে বসবাস করতেন একজন মার্কিন ব্যবসায়ী হিসেবে। পরবর্তীতে তিনি যখন লন্ডনের মার্কিন কন্স্যুলেটে কনসাল পদে চাকরিরত তখন সেখানেই লুইসার জন্ম। তবে নেটিভ বর্ন না হলেও লুইসা ছিলেন ইংলিশ স্পিকিং। কিন্তু একজন ফরেন বর্ন হিসেবে শ্লথ-নরম উচ্চারণে বর্তমান প্রেসিডেন্ট পতœী কথা বলেন। যদিও মেলানিয়া সম্পর্কে কারও কারও মন্তব্য ‘সি ক্যান বেয়ারলি স্পিক ইংলিশ।’ তবে জানা যায় তিনি ইংরেজী ছাড়াও ফরাসী, ইতালিয়ান, জার্মান, সার্বো-ক্রোয়েশিয়ান এবং তার নেটিভ সেøাভেনীয়Ñ এই পাঁচটি ভাষায় কথা বলতে পারেন। মেলানিয়া জন্মগ্রহণ করেছিলেন সাউথইস্ট নভো মেস্টো নগরে। পিতা ছিলেন রাষ্ট্রীয় সংস্থার মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেল ডিলার আর মা ছিলেন বাচ্চাদের কাপড় তৈরির কারখানার প্যাটার্ন মেকার। সংসারে সচ্ছলতার মধ্যে ব্যবসায়ী পিতার ছিল এক পুরনো ক্যাডিলাক গাড়ি এবং সেটি নিয়ে তারা সপরিবারে ভ্যাকেশন কাটাতে যেতেন প্যারিস ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে। পাঁচ বছর বয়স থেকে মেলানিয়ার মডেলিং জীবনের শুরু। নিউইয়র্কে থিতু হওয়ার আগে তিনি নিজ দেশের লিউবিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর লেখাপড়া করে মিলান ও প্যারিসে মডেলিং শুরু করেন। তবে মিডিয়ার নাকউঁচু মহল বলেন, তিনি এসেছেন কমিউনিস্ট দেশ থেকে। দু’দুবার বিয়েবিচ্ছেদ ঘটা ভবিষ্যত স্বামী দ্বিগুণ বয়সী বিলিয়নিয়ার ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মডেল মেলানিয়ার চার চক্ষুর মিলন হয়েছিল ১৯৯৮ সালে, যখন সেøাভেনিয়ান তরুণীটি এই নিউইয়র্ক শহরে সদ্য বসবাস শুরু করেছে। সিটির ফ্যাশন সপ্তাহ উপলক্ষ করে সেদিন ছিল একটি পার্টি। বিলিয়নিয়ার তখন দ্বিতীয় স্ত্রী মারলা মেপলের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় ১৯৯৭ সাল থেকে আলাদা থাকেন। সে মামলাটির চূড়ান্ত হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। যাই হোক, প্রথম দেখার পর পরই একাকী জীবন কাটানো ডোনাল্ড মেলানিয়ার কাছে ফোন নম্বর চেয়ে পাঠান । প্রাথমিকভাবে তরুণীটি সেটি দিতে অস্বীকার করলেন বটে, কিন্তু তিনি নিজেই স্বনামখ্যাত ব্যক্তির ফোন নম্বর চেয়ে নিলেন। এরপর কয় মাসের মধ্যেই বদলে যায় চিত্রপট। মেলানিয়াকে নিয়ে রিয়্যালিটি টিভি স্টার ডোনাল্ডের ব্যবসাভিত্তিক রিয়্যালিটি শো ‘এ্যাপ্রেন্টিস’ অতিরিক্ত প্রচার লাভ করে। এরপর ২০০৪ সাল থেকে দু’জনের দীর্ঘ পূর্বরাগ বিষয়টি পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসে। ইতোমধ্যে তাদের যে কোর্টশিপ হয়েছিল সে সম্পর্কে তদানীন্তন একটি ইন্টারভিউ দিতে ট্রাম্প সাহেব বললেন ‘আক্ষরিক অর্থেই আমাদের দুজনের মধ্যে কোন তর্কবিতর্ক নেই। আর ঝগড়াবিবাদ তো অসম্ভব ব্যাপার । সেটা আমার অতীতের একটা ভুলে যাওয়া শব্দ !’ ডোনাল্ড এবং মেলানিয়া এনগেজড হন ২০০৪ সালে ও ফ্লোরিডার পাম বিচে তাদের বিয়ে হয় এবং রিসেপশন পার্টি হয়েছিল ডোনাল্ডের নিজস্ব মার-এ -লাগো এস্টেটের বলরুমে ২০০৫ সালে। মার-এ-লাগো এস্টেটটি আমেরিকার উষ্ণরাজ্য ফ্লোরিডার পাম বিচ আইল্যান্ডে অবস্থিত। ১৯২৪ থেকে ১৯২৭ সালে জাতীয় ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক হিসেবে এই রিসোর্টটি প্রেসিডেন্ট এবং বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্য ভবিষ্যতে শীতকালীন হোয়াইট হাউস হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৮০ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প এটি কিনে তৈরি করেন তার বিলাসবহুল ক্যাসেল। তখনকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিলারি ও বিল উপস্থিত হয়েছিলেন সে বিয়েতে। ভারতচন্দ্রের পার্বতী তার স্বামী শিব সম্পর্কে ব্যাজস্তুতি (যাকে বলে নিন্দাছলে প্রশংসা) করেছিলেন এই বলে ‘কুকথায় পঞ্চমুখ কণ্ঠভরা বিষ ॥ কেবল আমার সঙ্গে দ্বন্দ্ব অহর্নিশ ॥ অতি বড় বৃদ্ধ পতি সিদ্ধিতে নিপুণ ॥ কোন গুণ নাই তার কপালে আগুন।’ মেলানিয়া তো পার্বতীর মতো ব্যাজস্তুতি জানেন না। তিনি সোজাসুজি স্বামী সম্পর্কে বলেছিলেন ‘সে যা বলে সব কিছুর সঙ্গে আমি সব সময় একমত সেটা সত্যি নয়।-আমার নিজের মতামত অবশ্যি আছে। যখন তাকে সেটা জানাই কখনও গ্রহণ করে কখনও নয়। কিন্তু সে যে রকম স্বভাবের লোক সেটি আমি কোনভাবে পাল্টাতে চাই না। আমার স্বামী একজন এ্যাডাল্ট মানুষ আর কোন্্ কাজ কি পরিণতি ডেকে আনতে পারে সেটা তিনি ভালই জানেন।’ অবশ্য মেলানিয়ার যুদ্ধংদেহী স্বামীর সিদ্ধি অভ্যেস নেই। শত্রুপক্ষ জানে, তিনি কখনই মদ্যপান করেন না। এমনকি ব্রেকফাস্টে চা নয়, কফি নয় শুধু হট চকোলেট। মনোনয়ন লড়াইকালে স্বামীর হলিউড এক্সেস বাসের কথোপকথন ফাঁসে বিব্রত সাধ্বী স্ত্রীর সরল ভাষা- তাকে সংসারে দুটি শিশু সামলাতে হয়, একটি পুত্র ব্যারন অপরটি স্বামী! অন্যদিকে বহু আগে মার্কিন সুবিখ্যাত টক শো হোস্ট ওপরার সঙ্গে যুগ্ম সাক্ষাতকারে মেলানিয়ার স্বামী রসিকতা করে বলেছিলেন ‘পিতা হিসেবে আমি যেমন গ্রেট স্বামী হিসেবে তেমন নই!’ বিয়ের বারো বছর পর অগ্নিস্ফুলিঙ্গসম প্রেসিডেন্ট স্বামীর পাশে এই তৃতীয় বর্তমান স্ত্রীর এখনও উপমা হতে পারে যেন শীতল চন্দন বৃক্ষ। একযুগ ধরে আমেরিকান মানুষ রিয়্যাল এস্টেট মুঘলের স্ত্রী হিসেবে তাকে দেখেছে। কিন্তু সেই যেদিন মেলানিয়াকে পাশে নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সুবিখ্যাত টাওয়ারের এক্সিলেটর বেয়ে সপরিবার নেমে এলেন নির্বাচনী প্রচারের ময়দানে, সেদিনই ট্রাম্পের ঘরনি এলেন বিশ্বের তাবত আমজনতার দৃষ্টিসীমার আওতায়। সত্তর বছর বয়সী স্বামীর সঙ্গে ৪৬ বছরের তরুণীটির সংসার জীবন ফালাফালা হতে লাগল সমালোচকের কথিত মাইক্রোস্কোপিক দৃষ্টিতে। ক্যাম্পেনকালে মেলানিয়া ট্রাম্পের ভূমিকাকে অতি ক্ষুদ্র বলা চলে। তার এক বক্তৃতা ফার্স্ট লেডি মিশেলের এক বক্তৃতার হুবহু কার্বন কপি হয়েছিল বলে দিনের পর দিন ধরে হবু ফার্স্ট লেডিকে মিডিয়ার মাধ্যমে কম নাকাল হতে হয়নি। তারপর শপথের দিনে পেনসিলভানিয়া এ্যাভিনিউ ধরে হাঁটার সময় নতুন প্রেসিডেন্ট নাকি মেলানিয়াকে পিছু ফেলে সামনে হাঁটা দিয়েছিলেন। সমালোচনাকারীরা তুলনা করে বলছেন, নিজ ইনাগুরেশন দিবসে পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট ওবামা হাঁটার প্রাক্কালে প্রথামাফিক তার স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। আমরা সাধারণজন তার হাসিমাখা মুখই দেখেছি- কিন্তু টুইট করে তাৎক্ষণিকভাবে নানাজন বলতে শুরু করেছিলেন, মেলানিয়াকে নাকি স্বামীর পাশে খুব অসহায় দেখাচ্ছে। মাইক্রোস্কোপিক দৃষ্টিধারী কেউ কেউ আবার বলেছেন, নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট স্বামীর পাঁচ সেকেন্ডের এক দৃষ্টিপাতে নতুন ফার্স্ট লেডির স্মিতহাস্য শুধু মিলিয়ে যায়নি, তার মুখম-ল দেখে নাকি মনে হয়েছিল আচমকা মুখে কেউ পরিয়ে দিয়েছে ডেথ মাস্ক। ইনাগুরাল লাঞ্চেও একটি ছবিতে একজন বন্দিনীর মতো মেলানিয়াকে নাকি বিষণœ মুখে স্বামীর পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে। ছবিটি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বত্র। তারপর থেকেই ট্রাম্পকে অপছন্দ করা রমণীকুল ধুয়া তুলেছে ‘ফার্স্ট লেডি’ প্রেসিডেন্টের স্ত্রী খাঁচায় বন্দী। পুত্রের স্কুলবছর শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে সপ্তাহে পাঁচ দিন ম্যানহাটনে থাকতে হচ্ছে। মেলানিয়া যদিও প্রতি সপ্তাহে উড়ে আসেন স্বামীর কাছে। সেটাও সমালোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। দুর্মুখেরা বলছে আসলে হোয়াইট হাউসের প্রকৃত মালকিন হচ্ছে ট্রাম্প পুত্রী ইভানকা আর তার জামাতা কুশনার। কুশনারের শিশুপুত্র প্রথম হামাগুড়ি দিল হোয়াইট হাউসে। গর্বিত প্রেসিডেন্ট পিতা এয়ারফোর্স ওয়ানে করে বিদ্যাবতী, গুণধরী, রূপসী কন্যা নিয়ে গেলেন স্পেশাল মিটিংয়ে। একটি পত্রিকার কভার স্টোরিতে দেখা গেল, ফার্স্ট লেডি নাকি বিচ্ছেদের দিকে যাচ্ছেন! মেলানিয়া ২০০১ সালে মার্কিন ইমিগ্রেশন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হন এবং নাগরিক হন ২০০৬ সালে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্সির ইমিগ্রেশন ঝঞ্ঝার এই বিক্ষুব্ধ সময়ে সমালোচনায় আসছেন স্ত্রী মেলানিয়াও। বলা হচ্ছে, তার ইমিগ্রেশনের গোড়াতেই নাকি রয়েছে গলদ। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ নেয়ার পরদিন যে অন্য রকম দাবি উঠেছিল, সেটা কি মেলানিয়ার পক্ষেই? যেদিন চোখ ঝলসানো সেলিব্রেটিদের নেতৃত্বে নানা অবস্থানের নারী ও তাদের পুরুষ সঙ্গী আমেরিকা-ইউরোপের নানা স্থানে অধিকার আদায়ের দাবিতে একত্রিত হয়ে পথে পথে করেছিল বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ। সমকামী নারী-পুরুষদের আইনগত পারস্পরিক বৈবাহিক অধিকারের পক্ষে, গর্ভপাতকে নারীর একটি অধিকার হিসেবে পাওয়ার দাবিসহ নানা রকম সতর্ক বার্তা দিয়ে বিক্ষোভকারীদের কণ্ঠে ছিল অগ্নিস্ফুলিঙ্গসম নানা সেøাগান। যদিও হিলারি সমাবেশে প্রত্যক্ষভাবে যোগদান করেননি, কিন্তু সেখানে কখনও পরোক্ষভাবে আবার কখনও বা স্পষ্ট উচ্চারণে তার পক্ষেই জয়ধ্বনি উঠেছে। নতুন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তাদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘স্ট্রঙ্গার টুগেদার, নাউ মোর দ্যান এভার’, ‘ন্যাস্টি ওম্যান ইউনাইট’, ওমেন্স রাইটস আর হিউমান রাইটস ইত্যাদি। হিলারি তার টুইটে সমাবেশের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন আমাদের মূল্যবোধ রক্ষার জন্য এই অভূতপূর্ব গুরুত্ববহনকারী প্রতিবাদ এবং মিছিলের জন্য ধন্যবাদ। পিপল ম্যাগাজিনের সঙ্গে এক কথোপকথনে তিনি বলেছেন, এমন অসাধারণ মুহূর্তটিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। এরই মধ্যে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার জন্য দাবির নামে এক ঠাট্টা উচ্চকিত হয়েছিল কোন কোন নারী অধিকার প্রবক্তার কণ্ঠে- মেলানিয়ার মুক্তি চাই। সেটা নিয়ে টেলিভিশনের ভিউ নামে টক্ শোতে সমাবেশের অন্যতম বিখ্যাত নারীবাদী হুপি গোল্ডবার্গ দুদিন ধরে কিছু রগড়ও করলেন। চলতি সালের অস্কার উপস্থাপক মার্কিন টেলিভিশন হোস্ট, লেখক, কমেডিয়ান জিমি কিমেল সম্প্রতি আর একধাপ এগোলেন এ রকম ভাষায় যে- স্বামী ডোনাল্ড বন্দীশিবিরে নির্যাতনের পক্ষে, সুতরাং সাবধান মেলানিয়া ! বর্তমান ফার্স্ট লেডির সমর্থকরা বলেছেন, মেলানিয়ার মুক্তি নিয়ে হিলারি শিবিরের কেন এত তামাশা? প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউসে আসার আগে-পরে বহু তরুণী যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছে পাবলিকলি তা ভুলে গেলে চলবে কেন? এমনকি হিলারির নাকের ডগায় প্রেসিডেন্টের ওভাল অফিসে ইন্টার্ন অষ্টাদশী তরুণী মনিকা লুইনিস্কির সঙ্গে ক্লিনটনের লীলাখেলার সম্পর্ক স্থাপনে কংগ্রেসে তাকে ইমপিচমেন্টের সম্মুখীন হতে হয়েছিল, যা তোলপাড় তুলেছিল সারা আমেরিকায়। বর্তমান নারী অধিকারের আইকন হিসেবে খ্যাত মিসেস ক্লিনটনের সঙ্গে স্বামীর সম্পর্কের কথা জানত সবাই। কিন্তু হোয়াইট হাউস তিনি কদ্যপি ত্যাগ করেননি, মুক্তিও নেননি। কিন্তু এক সাদাসিধে মেলানিয়ার সম্প্রতি দেখা গেল এক পাল্টানো রূপ। শীতল চন্দন বৃক্ষে হঠাৎ লাগল রীতিমতো আগুন। সিএনএনের সাম্প্রতিক সাক্ষাতকার দেখে সবাই বলেছে, ফার্স্ট লেডি এতদিনে যোগ্য হয়ে উঠেছেন পতির। শুরুতেই শুভ্রবসনা ফার্স্ট লেডি স্পষ্ট করে বললেন, ‘আই অ্যাম জাস্ট ফাইন ভেরি স্ট্রং, আই অ্যাম কনফিডেন্ট এ্যান্ড টেককেয়ার মাইলাইফ, আওয়ার সান এ্যান্ড মাই হাসব্যান্ড... ডুইং গ্রেট!’ আরও বললেন, তার স্বামী নয় মেয়েরাই তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে উন্মুখ! গত আগস্ট মাসে ডেইলি মেইল অনলাইন একটি পত্রিকার নিবন্ধে বলা হয়, ফার্স্ট লেডি একসময় এসকর্ট সার্ভিসে কাজ করেছেন। ক্রুদ্ধ মেলানিয়া ওই ব্যক্তির শাস্তিসহ ১৫০ মিলিয়ন ক্ষতিপূরণ চেয়ে নিউইয়র্ক সুপ্রীমকোর্টে মানহানির মামলা করেছেন। লেখক ক্ষমা চাইলে সেটি গ্রহণ করা হয়নি। বলা বাহুল্য, মিথ্যা অভিযোগ মুদ্রিত হওয়ার পর তিনি ইতোমধ্যেই জয়ী হয়েছেন অপর একটি মামলায়! সম্প্রতি তিনি তার চীফ অব স্টাফ নিয়োগ দিলেন। ফার্স্ট লেডিকে চলতি সপ্তাহের শুরুতে জাপানী প্রধানমন্ত্রীর সস্ত্রীক আমেরিকা ভ্রমণ উপলক্ষে এয়ারফোর্স ওয়ানে আরোহণ করে মার-এ-লাগো রিসোর্ট তথা উইন্টার হোয়াইট হাউসে দেখা গেল অবসর বিনোদন করতে। লেখক : নিউইয়র্ক প্রবাসী
×