ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সবজি ক্ষেতে ভাটা নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সবজি ক্ষেতে ভাটা নির্মাণ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সবজি উৎপাদনে খ্যাত রামপুর (সাহাপুর) মাঠে জোরেসোরে চলছে ইটভাঁটি নির্মাণের কার্যক্রম। বাধা দিতে গেলেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার ওই মাঠটি সবজি চাষে খ্যাত। গ্রামের অধিকাংশ কৃষক জমি লিজ নিয়ে সেখানে সবজি চাষ করে সংসার চালান। কিন্তু প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে গ্রামবাসীর বাধা উপেক্ষা করে সম্প্রতি ওই গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহান সানার ছেলে সাহী মুকুল সানা অপর ইটভাঁটি মালিক আবুল হোসেন মন্টুকে নিয়ে ইটভাঁটি স্থাপনে চিমনি নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছেন। বাবলু নামে এক চাষী কান্নাজড়িতে কণ্ঠে বলেন, কলা, বেগুন, শিমসহ নানা ধরনের সবজি ক্ষেত মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এমনকি ইটভাঁটি স্থাপনে অন্যের জমি জোরপূর্বক দখলও করা হয়েছে। তিনি ৯ কাঠা জমি লিজ নিয়ে বেগুন চাষ করেছেন। ধরন্ত বেগুন গাছ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। বিনিময়ে তাকে জোর করে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন মুকুল সানা। হাবিবুর রহমান নামের অপর কৃষক বলেন, সারা বছর সবজি চাষ করেই চলে তাদের সংসার। ইটভাঁটি হলে এই মাঠে আর সবজি হবে না। অনেকেই বলেন, বাধা দিতে গেলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দিচ্ছে মুকুল সানা। এ নিয়ে কিসমত আরা নামে এক ভুক্তভোগী নারী ইটভাঁটি বন্ধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দেয়। যার স্মারক নম্বর-ইউভুঅ/চালু-মশ্মি/-২০১৭-১৭। ওই প্রতিবেদনে জোরপূর্বক অন্যের জমিতে ইটভাঁটি স্থাপনের কার্যক্রমসহ তিন ফসলি জমিতে এটি স্থাপন হচ্ছে- এমন তথ্য উঠে আসে। তারপরও ইটভাঁটি স্থাপনের কার্যক্রম থেমে নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেন মন্টু ও মুকুল সানা বলেন, চেয়ারম্যানের (চালুয়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের) প্রত্যয়নপত্র নিয়ে ইটভাঁটি স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সরদার বলেন, নোনা পানি ঢুকে ফসল হয় না- এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়েছে। জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতর যশোর অফিসের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (অনুমোদন) ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, কোনক্রমেই ফসলি জমিতে ইটভাঁটি করতে দেয়া হবে না।
×