ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সঙ্কট ॥ ব্যাহত চিকিৎসাসেবা

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সঙ্কট ॥ ব্যাহত চিকিৎসাসেবা

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ চিকিৎসক সঙ্কটে ব্যাহত হচ্ছে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা। ২১ চিকিৎসক পদের মধ্যে শূন্য ১৮টি। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাও নেই এখানে। মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে জরুরী বিভাগসহ পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা। বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে আউটডোরের বৈকালিক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। উপজেলার সাড়ে চার লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা তিনজন ডাক্তার দিয়ে চালানোর চেষ্টা যেন এলাকাবাসীর সঙ্গে উপহাসের মতো। জানা গেছে, ৩৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ২২ নবীন চিকিৎসক এ উপজেলায় যোগদান করেন। এদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭ জন ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১২ জনকে পুষ্টি দেয়া হয়। এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওএসডি ৩ জনকে পদায়ন করা হয় এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। দুই বছর পূর্ণ হওয়ায় ইতোমধ্যে ১৮ জন চিকিৎসক বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কালী কিশোর দাস অবসরে গেলে এ পদটিও শূন্য হয়ে পড়ে। আবাসিক চিকিৎসকের পদটিও শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। চিকিৎসা কর্মকর্তা ভাস্কর চন্দ্র ম-ল বর্তমানে এ দুটি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। সুত্রটি আরও জানায়, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ছাড়াও জুনিয়র কনসালটেন্টের পদ রয়েছে দশটি। এগুলো হচ্ছেÑ মেডিসিন, শিশু, গাইনি, সার্জারি, চক্ষু, নাক-কান-গলা, অর্থোপেডিক, কার্ডিওলজি, এ্যানেসথেসিয়া, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে এসব পদগুলোর সবই শূন্য। শূন্য রয়েছে উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের ১৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকের পদগুলোও। বর্তমানে জরুরি বিভাগে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. মনোরঞ্জন ম-ল, ডা. ফজলে রাব্বী ও ডা. মিজানুর রহমান রাজু। চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে কাঞ্চন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ফারহানা শিরিন ও ভালাইন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে নাহিদ আক্তারকে সাময়িকভাবে পদায়ন করা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। উপজেলার গোটগাড়ী হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম জানান, জেলার বৃহত্তম উপজেলা মান্দা। প্রতিদিন কয়েকশ’ রোগী সেবা নিতে আসেন উপজেলার এই একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভাস্কর চন্দ্র ম-ল জানান, প্রায় সাড়ে চার লাখ জন অধ্যুষিত এলাকায় স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে কোনভাবে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে বৈকালিক চিকিৎসাসেবার কাজ। এলাকাবাসীর সুবিধার্থে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বিনা পারিশ্রমিকে এ সেবা চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। অচিরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক পদায়ন করা না হলে আউটডোর বৈকালিক সেবা চালু রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে বলে জানান তিনি।
×