ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশাল বিসিকে ১০০ নতুন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বরিশাল বিসিকে ১০০ নতুন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট হচ্ছে

আনোয়ার রোজেন ॥ বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীতে বেসরকারী খাতে নতুন করে ১০০টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ইউনিট প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। এর মধ্যে মধ্যে ১০ শতাংশ ইউনিট নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। শিল্প ইউনিটগুলোতে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা স্থানীয়ভাবে দারিদ্র হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এজন্য বিদ্যমান শিল্পনগরীর অবশিষ্ট অনুন্নত এলাকার প্রায় ৩৮ একর ভূমির উন্নয়ন করা হবে। এতে এসএমই ইউনিটের মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ২৭০টি। এছাড়া শিল্পনগরী এলাকার বিভিন্ন অবকাঠামো মেরামত ও পুননির্মাণ করা হবে। এ কাজে ব্যয় হবে প্রায় ৫২ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। রবিবার পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বরিশাল শিল্পনগরীর উন্নয়নকৃত অংশে বর্তমানে বরাদ্দযোগ্য কোন খালি প্লট নেই। পদ্মা সেতু এবং পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় স্থাপিত পায়রা বন্দরের কারণে এ অঞ্চলের সাথে সমগ্র দেশ ও বিদেশের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সৃষ্টি হবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে সূচনা ঘটবে নতুন দিগন্তের। এ প্রেক্ষিতে অনেক উদ্যোক্তা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এ বিবেচনায় আগে অধিগ্রহণ করা কিন্তু অব্যবহৃত ও অনুন্নত এলাকার ৩৭ দশমিক ৫৯ একর জমিতে মাটি ভরাট, অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট নির্মাণসহ শিল্প উপযোগী অবকাঠামো নির্মাণ করে শিল্প প্লট সৃষ্টি করা হলে তা শিল্প স্থাপনে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের চাহিদা পূরণ করবে। পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দর স্থাপনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন না থাকা এবং নতুন উদ্যোক্তাদের মাঝে শিল্প প্লটের চাহিদা থাকায় প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত শতকের ষাটের দশকে বরিশাল সদর উপজেলার কাউনিয়ায় বিসিক শিল্পনগরীটি ১৩১ দশমিক ৯৯ একর জমিতে স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ৯৪ দশমিক ৪০ একর জমির ভূমি উন্নয়ন করা হয় এবং ৩৭ দশমিক ৫৯ একর জমির এখন পর্যন্ত কোন ভূমি উন্নয়ন করা হয়নি। এ শিল্পনগরীর উন্নত এবং অনুন্নত এলাকা মিলে মোট প্লট সংখ্যা ৪৬৩টি। এর মধ্যে উন্নত এলাকায় ৩৫১টি এবং অনুন্নত এলাকায় ১১২টি প্লট রয়েছে। উন্নত এলাকার সবগুলো প্লট শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, যেখানে ১৭০টি এসএমই ইউনিট স্থাপিত হয়েছে। সূত্র জানায়, প্রকল্পটির উপর গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে পিইসি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্রকল্পটির ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ করা হয় এবং তার আলোকে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীন নতুন অননুমোদিত প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরে ১৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৩৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে। প্রকল্প বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি জুলাই ২০১৬ হতে জুন ২০১৮ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে প্রকল্পটির নতুন মেয়াদকাল জানুয়ারি ২০১৭ থেকে নির্ধারণ করা যুক্তিযুক্ত হবে। প্রকল্পটি চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় থাকা এসএমই উন্নয়নের জন্য বর্ণিত কৌশল ও লক্ষ্যমাত্রার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
×