ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জানুয়ারিতে বিশ্ব বাজারে খাবারের মূল্যসূচকে উর্ধমুখী প্রবণতা

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

জানুয়ারিতে বিশ্ব বাজারে খাবারের মূল্যসূচকে উর্ধমুখী প্রবণতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৬ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে খাবারের সার্বিক মূল্যসূচকে তেমন কোনো পরিবর্তন না হলেও ২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসে বিশ্ব বাজারে খাবারের সার্বিক মূল্যসূচকে উর্ধমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আলোচ্য মাসে আগের মাসের তুলনায় সূচক গড়ে প্রায় ৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। শতকার হিসাবে তা প্রায় ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ১৭৩ দশমিক ৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এফএও বলছে ২০১৫ সালের পর এই জানুয়ারিতেই সূচক সবচেয়ে উপরে উঠেছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় সূচক বেড়েছে প্রায় ২৪ দশমিক ৫ পয়েন্ট বা ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী ৫ ধরনের পণ্যের দাম নিয়ে গবেষণা করে প্রতি মাসে প্রতিবেদন তৈরি করে এফএও। পণ্যগুলো হলো- দানাজাতীয় শস্য, ভোজ্য তেল, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস এবং চিনি। জানুয়ারির মূল্যসূচকে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় দানাজাতীয় শস্যের মূল্যসূচক ৪ দশমিক ৮ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ১৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে এই সূচক গত ৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে ভোজ্য তেলের মূল্যসূচকও বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে বিশ্ব বাজারে পণ্যটির মূল্য সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৩ পয়েন্ট। আগের মাসের তুলনায় তা ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১৮৬ দশমিক ৩ পয়েন্টে রয়েছে। বলা হচ্ছে বিশ্ব বাজারে পাম অয়েলের দাম বাড়ার কারণে এই সূচকের অবস্থান এই মাসে গত ৩০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে। এদিকে আলোচ্য সময়ে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্যসূচক ডিসেম্বর মাসের তুলনায় অপরিবর্তীত রয়েছে। জানুয়ারিতে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্যসূচক ১৯৩ পয়েন্টে রয়েছে। অন্যদিকে মাংসের দামের সূচকও অপরিবর্তীত রয়েছে আলোচ্য সময়ে। জানুয়ারির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মাংসের দামের সূচক আগের মাসের মতোই ১৫৬ দশমিক ৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে আলচ্য সময়ে সব চেয়ে বেশি বেড়েছে চিনির মূল্যসূচক। এই সময়ে পণ্যটির মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে। এই সময় সারা বিশ্বে চিনির উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর মূল্যসূচক প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। কিছু দিন আগে জাতিসংঘের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এল নিনোর প্রভাবে কিছু মৌসুমী পণ্যের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সে কারণে ২০১৬ সাল খাদ্য শস্য, চিনি ও ভোজ্য তেল উৎপাদন অনুকূলে ছিল না। ফলে পণ্যগুলোর যোগান কমেছে। আর চাহিদার বিপরীতে দাম বেড়েছে। তবে দুধ ও মাংসের উৎপাদন বেশি থাকায় পণ্যগুলোর দামে বিশেষ প্রভাব পরেনি। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে সাগরের বিদ্যমান আবহাওয়ার পরিবর্তনকে এল নিনো নামে ডাকা হয়। এল নিনোর কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়াসহ নানা দুর্যোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এছাড়াও এল নিনো বন্যা, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
×