ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

কেভিতোভার ছুরিকাহতের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

কেভিতোভার ছুরিকাহতের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একটি ছুরিকাঘাতের ঘটনা পুরো টেনিস বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ২৪ বছর আগে টেনিস কোর্টে ছিল মনিকা সেলেসের দোর্দা- প্রতাপ। জার্মান কিংবদন্তি স্টেফিগ্রাফের একমাত্র চরম প্রতিপক্ষ। আর সে কারণেই স্টেফির এক ভক্ত ম্যাচ চলার মাঝের টাইমআউটে ৯ ইঞ্চি দীর্ঘ ফলার ধারাল ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করেন। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভার ক্ষেত্রে। নিজের বাড়িতে অনুপ্রবেশকারীর হাতে ছুরিকাহত হন তিনি গত বছর। এরপর অনেক টেনিস তারকাই এখন শীর্ষ টেনিস খেলোয়াড়দের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন অন্তত ব্যক্তিগত দেহরক্ষী নিজেদের সঙ্গে রাখার অনুমোদন দেয়ার জন্য। ইতোমধ্যে অনেকে ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগও করেছেন। সেলেসের ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনা পুরো টেনিস বিশ্বকেই শুধু নয়, প্রতিটি ক্রীড়ামোদীদের করেছিল বিস্মিত। কারণ সেটা ছিল হিংসাত্মক এক আক্রমণ। সে সময় তিনি ছিলেন বিশ্বের এক নম্বর। যে কোন বড় টুর্নামেন্ট ও মর্যাদার গ্র্যান্ডসøামে স্টেফির অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। ঘটনা ১৯৯৩ সালের ৩০ এপ্রিল। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত সিটিজেন কাপে ম্যাগদালেনা মালিভার বিরুদ্ধে প্রথম সেট জেতার পর দ্বিতীয়টিতে এগিয়ে ছিলেন ৪-৩ ব্যবধানে। টাইমআউটের জন্য যখন কোর্টের পাশে আসেন তখনই ৩৮ বছর বয়সী গুন্টার পারশে ৯ ইঞ্চি দীর্ঘ ফলার ছুরি দিয়ে তার পিঠে আঘাত করেন। পরে গুন্টার স্বীকারোক্তি দেন, স্টেফির ভক্ত হিসেবে তিনি চেয়েছিলেন সেলেস যেন না থাকতে পারেন সে জন্যই এ কা- ঘটিয়েছেন তিনি। তার আশা পূর্ণ হয়েছিল, দীর্ঘদিন কোর্টের বাইরে ছিলেন সেলেস আর ওই সুযোগে টানা শিরোপা জিতে পরবর্তীতে রেকর্ডধারী হয়ে যান স্টেফি। পরে কোর্টে ফিরে আসলেও নিজের পুরনো ছন্দ ও ফর্ম খুঁজে পাননি সেলেস। এ ধরনের হিংসাত্মক ঘটনার কথা সবাই ভুলেই গিয়েছিল। কিন্তু কেভিতোভার ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিয়েছে সেলেসের সেই ঘটনাটা। এখন অতীব প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে সুষ্ঠু নিরাপত্তা। মহিলা টেনিস তারকারা এখন নিরাপত্তাহীন মনে করছেন নিজেদের। দুইবারের উইম্বলডন জয়ী কেভিতোভা ক্রমেই উঠে আসছিলেন সেরাদের কাতারে। আর তখনই তিনি চেক প্রজতান্ত্রে নিজের বাড়িতে এক অনুপ্রবেশকারীর ছুরির আঘাতে আহত হলেন, চলে গেলেন কোর্টের বাইরে। হাড়ের মাংসপেশীতে গভীর ক্ষত হওয়ায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্নায়ুতন্ত্র। এ ব্যাপারে কানাডিয়ান সুন্দরী টেনিস তারকা ইউজেনি বাউচার্ড বলেন, ‘পেত্রার ক্ষেত্রে যা ঘটল সেটা খুবই ভীতিকর ব্যাপার। আশা করছি সে খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে। এরপর আমি নিজের ক্ষেত্রে অন্তত মনে করছি যে নিরাপত্তাটা কি ভীষণভাবে প্রয়োজন। আমি সবসময়ই এটা নিয়ে বেশ সতর্ক থাকি। আমি এবং আমার টিম প্রতি সপ্তাহেই এটা নিয়ে আগাম সতর্কতা হিসেবে কিছু কাজ করি। বিষয়টি মোটেও হেলাফেলা করার মতো নয়। এটা জীবনের প্রশ্ন।’ বাউচার্ড জানিয়েছেন তিনি ব্যক্তিগত দেহরক্ষী রেখেছেন যাকে প্রতিটি সফরে সঙ্গে রাখেন। এমনকি কোর্টে খেলার সময় কর্তৃপক্ষের কাছে বাড়তি নিরাপত্তাকর্মী রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কারণ হিসেবে বাউচার্ডের ব্যাখ্যা, ‘বিশ্বের যে কোন ক্রীড়ার চেয়ে টেনিসে ভক্ত-সমর্থকরা খুবই ঘনিষ্ঠভাবে খেলোয়াড়দের কাছাকাছি আসতে পারে। কেভিতোভার ঘটনার পর আমি এটাকে এখন হুমকি বলেই মনে করছি।’ কারণ বেশ কিছুদিন আগে নিজের ই-মেইলে মেরে ফেলার হুমকিও পেয়েছেন বাউচার্ড। বিশ্বের সাবেক এক নম্বর ডেনমার্কের ক্যারোলিন ওজনিয়াকিও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘নিজের সঙ্গে অবশ্যই নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে শুধু সবকিছু ঠিকঠাক আছে এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকার জন্য। যে কোন জায়গায় সমস্যা হতে পারে। প্রতিদিনই সতর্ক থাকা জরুরী।’
×