ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয় শিল্প সম্মেলন সমাপ্ত

দুই লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

দুই লাখ ৩৫ হাজার কোটি  টাকার লগ্নি প্রস্তাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ তৃতীয় শিল্প সম্মেলনে দুই লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব এসেছে বলে ২.৩৫ দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট-২০১৭ শেষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আসা লগ্নি প্রস্তাবের অঙ্ক নিয়ে এই দাবিই করলেন মমতা। শনিবার রাজ্য সরকারের দেয়া হিসেব অনুযায়ী, এবার দেশ-বিদেশ থেকে বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে ২,৩৫,২৯০ কোটি টাকারও বেশি। যা গত দু’বছরের তুলনায় কিছুটা কম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর মতে, সম্মেলনের সাফল্য মাপার ক্ষেত্রে শুধু ওই একটি সংখ্যা বিবেচ্য নয়। কারণ মাথায় রাখতে হবে যে, গত দু’বছরের সম্মেলন থেকে যে মোট ৪.৯৩ লাখ কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব এসেছিল, তার ৪০ শতাংশের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। যদিও ওই ৪০ শতাংশ (প্রায় ১ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) বিনিয়োগ কোথায় কোথায় এসেছে, তার বিস্তারিত বিবরণ এ দিন তার সরকার দেয়নি। প্রায়ই অভিযোগ ওঠে যে, লগ্নি টানতে বিস্তর টাকা খরচ করে এবং ঢাকঢোল পিটিয়ে এখন শিল্প সম্মেলন আয়োজন করে অধিকাংশ রাজ্য। সেগুলোর শেষে বিপুল অঙ্কের লগ্নি প্রস্তাব আসা ও সমঝোতাপত্র (মউ) সইয়ের কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, তার ছোট্ট একটি অংশ বাস্তবায়িত হচ্ছে। সেই ছবি যে অন্তত পশ্চিমবঙ্গে নয়, সে কথা বোঝাতেই এ দিন আগের দু’বছরের লগ্নি প্রস্তাবে প্রকল্পের কাজ শুরুর কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার কথায়, ‘আমরা হিসেবে জল মেশাই না। প্রস্তাব এক টাকার হোক বা এক লাখ কোটির যেটা পাব, সেটাই বলব।’ এ প্রসঙ্গে গুজরাতের শিল্প সম্মেলন ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাতকে নাম না-করেও খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ‘অমিতদার (অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র) কাছে শুনেছি কোথাও লগ্নি প্রস্তাবের ১ শতাংশের কিছু বেশি কার্যকর হয়। আর আমাদের ৪০ শতাংশ। আপনাদের মনে হয় না, এটা দারুণ কাজ?’ ওই প্রসঙ্গেই তাঁর দাবি, ‘৫০ লাখ কোটি টাকার প্রস্তাব না-পেলেও বিশ্বাস করি, এই পরিস্থিতিতে এটা যথেষ্ট। এই সম্মেলন চূড়ান্ত সফল।’ সম্মেলনের সাফল্য প্রচারে পিছিয়ে ছিলেন না এর অন্যতম হোতা অমিতবাবুও। মাঝ দুপুরের সাংবাদিক বৈঠকে প্রাপ্তির হিসেব দাখিল করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রীর দাবি, এটি আশার থেকেও বেশি সফল। তাঁর কথায়, ‘এখনও আলোচনা চলছে। সেই সঙ্গে নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন অনেক শিল্পকর্তা। যার মধ্যে ৪২৫টি আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ রাজ্যের হিসেবে, উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ক্ষেত্রে আসা লগ্নি প্রস্তাবের অঙ্ক হলো- উৎপাদন ও পরিকাঠামো : ৬১,৭৬৫ কোটি, নগরোন্নয়ন : ৪৬,৬০০ কোটি, ছোট ও মাঝারি শিল্প : ৫০,৭১০ কোটি, পরিবহন : ৩৮,৮০১ কোটি, তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম : ১৮,৫৪০ কোটি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ : ১০,৬৪৯ কোটি ইত্যাদি। প্রস্তাব প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বসিত অমিতবাবু এ দিন একের পর এক প্রশ্ন তুলে উত্তর দিয়েছেন নিজেই। বারবার বলেছেন, ‘আপনারা হয়তো জিজ্ঞাসা করবেন কিংবা আপনাদের হয়তো প্রশ্ন থাকতে পারে...।’ আর তারপরে নিজেই উত্তর দিয়ে গেছেন সমস্ত প্রশ্নের। অমিতবাবু আরও জানান, আগামী বছর সম্মেলন হবে ১৬-১৭ জানুয়ারি। তা ছাড়া, ‘ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের’ প্রাক্তন কর্তা ফ্রাঙ্ক রিক্টার পৃথক সংস্থা গড়েছেন। এ বছরের শেষে তাদেরও এশীয় বার্ষিক সভা হতে পারে রাজ্যে।
×