ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জলি রহমান

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২২ জানুয়ারি ২০১৭

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা

প্রতিবারের মতো জানুয়ারি মাসের এক তারিখ শুরু হয়েছে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০১৭’। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর উদ্যোগে মাসব্যাপী এই ২২তম বােিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসার বিস্তৃতি বাড়ে এই ব্যবসার মাধ্যমে। প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব সক্ষমতার বহির্প্রকাশ ঘটায় এই মেলায়। একটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বরূপ এবং এক বছরে তার কি অর্জন তা এই মেলার মাধ্যমে দেশী-বিদেশী ক্রেতার সামনে তুলে ধরা হয়। তাই অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় এই মেলার গুরুত্ব অনেক। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার মাধ্যমে রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ মেলায় একদিকে যেমন দেশী-বিদেশী ভোক্তারা আমাদের দেশের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে, অপরদিকে দেশী উদ্যোক্তরা বিদেশী পণ্য, সর্বশেষ ডিজাইন, বিদেশী ক্রেতাদের রুচি, মান , চাহিদা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারে। বাণিজ্যমেলা উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘মেলাটি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিম-লে সর্বাধুনিক জ্ঞান, প্রযুক্তি ও অগ্রগতির সঙ্গে সংযুক্ত রাখার একটি সময়োচিত পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, এই মেলার মধ্য দিয়ে রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় উদ্যোক্তাগণ প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের পণ্যের গুণগত মানোন্নয়নে তৎপর হবেন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দেশী পণ্যকে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে নেয়ার প্রয়াস পাবেন। পণ্য পরিচিতি ও বহুমুখীকরণের জন্য সারা মাসব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইরান , জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট , ব্রিটেন ,অস্ট্রেলিয়া জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও দেশের প্রতিষ্ঠান এই মেলায় নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করে। এবারের মেলায় ৫টি মহাদেশ থেকে গত বছর অংশগ্রহন করা ২১টি দেশের মধ্যে নতুন দেশ হিসেবে অংশ নিয়েছে মরিশাস , ঘানা, নেপালসহ আরও ৭টি দেশ। এছাড়াও বিগত বছরে অংশগ্রহণ করা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর অস্ট্রেলিয়া, হংকং, জাপান, ব্রিটেন , জার্মানি ও নেপাল অন্যতম। রফতানিযোগ্য পণ্যের যথাযথ বিপণনের সুযোগ সৃষ্টিসহ রফতানি খাতে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানোর জন্য নতুন পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ প্রদানই এ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার মূল লক্ষ্য। বিশ্বের উন্নত দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানসমূহ এই মেলায় অংশগ্রহণ করে এবং তাদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রফতানি আদেশ পাওয়া যায়। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ গণমাধ্যমে বলেছেন, বাণিজ্যমেলা থেকে ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার, ২০১১ সালে ২৫ কোটি টাকার, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি টাকার, ২০১৪ সালে ৮০ কোটি টাকার, ২০১৫ সালে ৮৫ কোটি টাকার এবং ২০১৬ সালে ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালের বাণিজ্যমেলায় রফতানি আদেশ আরও বেশি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিবছরই এই বাণিজ্যমেলায় রফতানি আদেশের পরিমাণ বাড়ছে। এই ধারাবাহিকতাই বলে দিচ্ছে- বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আগামীতে আরও এগিয়ে যাবে। ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হবে।
×