স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলচ্চিত্রই তাঁর প্রাণ। এ চলচ্চিত্রের জন্যই তিনি নায়করাজ রাজ্জাক। আজীবন চলচ্চিত্রের সঙ্গে থাকতে চান তিনি। এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, আমি রাজ্জাক হয়ত অন্য কোন চাকরি করতাম অথবা ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু ছোটবেলার অভিনয় প্রচেষ্টাকে আমি হারাতে দেইনি। আমি নাটক থেকে চলচ্চিত্রে এসেছি। সবাই আমাকে চিনেছেন। পেয়েছি সাফল্যও। বাংলার মানুষজন আমাকে একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবেই দেখেন ও আমাকে ভালবাসেন। আজ আমার যা কিছু হয়েছে সবই এ চলচ্চিত্রশিল্পের কল্যাণে। জীবন্ত কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাকের জীবনী নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। তথ্য মন্ত্রনালয়ের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের অধীনে এ গবেষণাকর্মটি করছেন সাংবাদিক, গবেষক ও সঙ্গীতশিল্পী ইসমত জেরিন স্মিতা। গবেষণাকর্মটির ওপর এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে শাহবাগের বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ বেতার ট্রান্সমিশন সার্ভিস ভবনের তিন তলায় প্রজেকশন হলে আগামীকাল রবিবার বিকেল ৩টায়। এতে উপস্থিত থাকবেন নায়করাজ রাজ্জাক, তাঁর সহঅভিনেতা-অভিনেত্রী, সঙ্গীতশিল্পী, মিডিয়ার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা। ইসমত জেরিন স্মিতা জনকণ্ঠকে জানান, ‘নায়করাজ রাজ্জাক; জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আমার এ গবেষণা পা-ুলিপি প্রায় শেষের দিকে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের পক্ষ থেকে আমাকে এ কাজটি করার অনুমতি দেয়ার জন্য তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি মনে করি, অভিনয়শিল্পী রাজ্জাক তিন প্রজন্মের কাছেই নায়ক। আমাদের বাবা-দাদারাও তাঁর অভিনয় পছন্দ করতেন, তাঁকে অনুসরণ করতেন। ওনার মতো চরিত্রের মানুষ খুঁজতেন। আমরা এখনও তাঁর অভিনয় ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে গর্ব করি। তাঁর জীবনের রোমান্টিকতা উপলব্ধি করার চেষ্টা ও তাতে বিচরণ করছি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও তাঁর অভিনয় কৌশল থেকে শুরু করে তাঁর যাবতীয় বিষয়কে অনুসরণ করবে। আমার এ গবেষণায় উঠে এসেছে এক রক্ষণশীল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও তিনি কিভাবে সংস্কৃতিমনা হয়ে উঠলেন, একজন ফুটবলার হয়েও অভিনয়কে বেছে নিলেন, থিয়েটার থেকে রূপালী পর্দায়, এরপর নায়ক থেকে নায়করাজ সবই তুলে ধরার চেষ্টা রয়েছে এ গবেষণায়। তাঁর জীবনের পরতে পরতে যে উত্থান ঘটেছে তারই সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে এতে। আমি গবেষণাপত্রে কী করেছি তার সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে এ সেমিনার। নায়ক হিসেবে রাজ্জাক প্রথম অভিনয় করেন জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ ছবিতে। এতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন সুচন্দা। তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ‘কি যে করি’ ছবিতে অভিনয় করে। এরপর আরও চারবার তিনি জাতীয় সম্মাননা পান। ২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন।