ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শীত না পড়ায় পুরনো কাপড় ব্যবসায় ধস

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

শীত না পড়ায় পুরনো কাপড় ব্যবসায় ধস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চাহিদার তুলনায় তিনগুণ বেশি আমদানির পাশাপাশি কাক্সিক্ষত শীত না পড়ায় মারাত্মকভাবে ধস নেমেছে দেশের পুরাতন কাপড় বাণিজ্যে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবারের শীত মৌসুমে এখন পর্যন্ত উষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করায় আমদানির অর্ধেক দামেও বিক্রি হচ্ছে না এসব পণ্য। ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারক এবং সাধারণ ব্যবসায়ীরা। ষড়ঋতুর বাংলাদেশে পৌষ এবং মাঘ এ দু’মাসকে শীতকাল হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। মূলত বাংলা সনের অগ্রায়ণ মাসের মাঝামাঝি থেকেই শীত পড়তে শুরু করে। কিন্তু এ বছর অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ মাসের মাঝামাঝিতে আমেজ পেলেও জেঁকে বসেনি শীত। হালকা কুয়াশা থাকলেও নেই তেমন ঠা-া। এতে দেশের পুরাতন কাপড়ের বেচাকেনায় চরম মন্দা চলছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলেন, ঠা-া নেই তাই বেচাকেনা নেই। শীতের আগে অনেক মাল মজুদ করে রাখা হলেও দাম পাচ্ছেন না তারা। এছাড়া চাহিদা না থাকলে দাম পাওয়া সম্ভব হয় না লোকসানে থাকছেন তারা। স্বাধীনতার পর প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং বেলজিয়াম থেকে আমদানি হতো পুরাতন জ্যাকেট, সোয়েটার, কম্বল, কোট এবং বেবি স্যুট। কিন্তু এখন আমদানি হচ্ছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান থেকে। প্রতিটি গাঁট ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা দরে আমদানি করতে হলেও বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে না কাক্সিক্ষত মূল্য বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। গুদাম মালিকরা বলেন, ছয় হাজার টাকা করে গেঞ্জি কিনে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। যেভাবে মালের দাম পড়ে তাতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হবে বলে জানালেন তারা। এছাড়া গুদাম ভাড়া ও স্টাফের বেতন দিতে তাদের কষ্ট হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, শীত না পড়ায় শীত বস্ত্রের চাহিদা একেবারে কম। তার ওপর আমদানি হয়েছে চাহিদার অন্তত তিনগুণ বেশি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেশি লাভের আশায় লাইসেন্সের অপব্যবহার করে অতিরিক্ত আমদানি করা হয়েছে। আমদানিকারকরা বলেন, সারাদেশে এক বছরে প্রয়োজন ৩০০ থেকে ৪০০ কন্টেইনার। কিন্তু আনা হয়েছে ৯০০ কন্টেইনার মাল। অনেক দিন যাবত পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায়ীরা সমস্যায় রয়েছেন। কিন্তু সে অনুযায়ী ব্যবসা করা তাদের সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশে মাত্র আট থেকে দশজন আমদানিকারক থাকলেও পাইকারি বিক্রেতা রয়েছেন কয়েকশ। প্রতিটি কন্টেইনার এ অন্তত আড়াই বেল বা গাঁট আনা যায়। আর এক কন্টেইনার শীত বস্ত্রের আমদানি মূল্য ধরা হয় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা।
×