ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবুল মাল আবদুল মুহিত

সুদীর্ঘ ষাট বছরের বিচিত্র কর্মজীবন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

সুদীর্ঘ ষাট বছরের বিচিত্র কর্মজীবন

অষ্টম অধ্যায় পশ্চিম পাকিস্তানে আমার শেষ কটি আলোড়িত মাস- ১৯৬৮ এবং ১৯৬৯ (গতকালের পর) আমাদের মতো বাঙালী কর্মচারীরা ঢাকায় প্রাদেশিক প্রশাসনের বিষয়ে অবশ্য আওয়ামী লীগকে সহায়তা করছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে কি ধরনের সম্পর্ক দুই দেশে হওয়া সম্ভব সে সম্বন্ধে আমার মনে হয় না, তারা কোন পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের খুব কমজনেরই কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান ছিল। আমি আরও বললাম, আমার মনে হয় আমরা যারা পিন্ডি ইসলামাবাদে আছি আমাদের পক্ষে রাজনীতিবিদদের পরামর্শ প্রদান করা যথাযথ হবে। আমি আরও বললাম, এই জন্য ৬ দফা, ৮ দফা এবং ১১ দফা এগুলোর বিবেচনা করে আমি পশ্চিম পাকিস্তানীদের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি বিকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করে সেটি ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে চাই। বেশিরভাগ সহকর্মী যারা আমাদের প্রাথমিক আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন তারা মনে করলেন যে, উদ্যোগটি সময় উপযোগী এবং তাতে তারা যেভাবে সাহায্য করতে পারেন সেটাই করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এনায়েত করিম বললেন, তিনি তখন পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপসচিব। সুতরাং তার পক্ষে প্রকাশ্যে আমাদের আসরে অংশগ্রহণ করা হয়ত সম্ভব হবে না। তবে তার কাছে আমি যদি কোন তথ্য বা পরামর্শ চাই সেটা তিনি স্বোৎসাহে প্রদান করবেন। সৈয়দ আবুল খায়ের সাহেব আমাকে সরাসরি প্রশ্ন করলেন যে, আমাকে এই ম্যান্ডেট কে দিয়েছে? আমি তাকে জানালাম যে, এ ব্যাপারে কোন রাজনীতিবিদের সঙ্গে আমার কোন সংযোগ হয়নি। আমার মনে হয় যে, একটি যুগান্তকারী গোলটেবিল বৈঠকে তাদের সহায়তা দেয়া প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্যে সকলকে নিয়ে এই উদ্যোগটি গ্রহণ করার জন্য আজকের এই সভার আয়োজন করেছি। তিনি আমাদের জানালেন এই উদ্যোগে শামিল হবেন না। আরও ২/১ জনও এই বিষয়ে ইতঃস্তত করলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তবারক হোসেন বললেন যে, তিনি আসরে থাকবেন না তবে তার কাছে তথ্য চাইলে তিনি তা সরবরাহ করবেন এবং টেলিফোনে আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। গভীর আগ্রহ দেখালেন মফিজুর রহমান এবং তিনি এই কাজে সব সময়ই সংশ্লিষ্ট থাকেন। আমি একটি খসড়া প্রস্তুত করে সেটা নিয়ে আলোচনার জন্য তারিখ নির্দিষ্ট করলাম। তারপর আমরা বেশ ক’দিন এই খসড়া নিয়ে কাজ করলাম। এই খসড়ার প্রথম পর্যায়েই আমরা ৬ দফা, ৮ দফা এবং ১১ দফার বিশ্লেষণ করলাম। জেনে রাখা ভাল যে, ৬ দফা আওয়ামী লীগের ইশতেহার ছিল। ৮ দফা নুরুল আমিন সাহেবের নেতৃত্বে পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)-এর ইশতেহার ছিল। আর ১১ দফা ঘোষণা করে পূর্ব পাকিস্তানের সংগ্রামী ছাত্র পরিষদ। ১১ দফায় ৬ দফা গ্রহণ করে তার সঙ্গে ছাত্ররা শিক্ষা এবং ছাত্র স্বার্থ সম্পর্কসহ কিছু অতিরিক্ত কথা যোগ করে দেয়। আমাদের কার্যপত্রে আমরা বিশেষভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব কিভাবে বিভাজন করা যায় সেইটি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করি। আমরা অন্যান্য ফেডারেশনে কিভাবে প্রদেশের অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে সেটাও পর্যালোচনা করি। আমরা ভবিষ্যতের পাকিস্তানের জন্য যে সংবিধান চিন্তা করলাম সেখানে ধরে নিলাম যে ছয় দফার ৫টি দফাতে পশ্চিম পাকিস্তান বিশেষ আপত্তি না-ও করতে পারে। কিন্তু প্রদেশকে রাজস্ব ক্ষমতা দিতে তারা কোন মতেই রাজি হবে না। সুতরাং সেজন্য একটি ব্যবস্থা চিন্তা করতে হবে যাতে পশ্চিম পাকিস্তানের স্বার্থ মোটামুটি রক্ষা পাবে। আমরা ভেবে দেখলাম পাকিস্তানের সুবৃহৎ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সংরক্ষণ করাই হবে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান উদ্দেশ্য। সেই ব্যাপারে তাদেরকে যদি যথেষ্ট ছাড় দেয়া হয়, তাহলে মূলত ৬ দফাভিত্তিক একটি সংবিধান গ্রহণ করা যেতে পারে। আমরা হিসাব করে বের করলাম যে, পাকিস্তানের রাজস্বের সবচেয়ে প্রধান উৎস হচ্ছে বাণিজ্য শুল্ক এবং করাদি। সুতরাং এক্ষেত্রে যদি কোন ফর্মূলা দিয়ে এই শুল্ক ও করের একটি বৃহদাংশ কেন্দ্রীয় সরকারকে দেয়া যায় তাহলে হয়ত সাংবিধানিক সমঝোতা সম্ভব হতে পারে। আমার মনে হয় যে, আমরা যে প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করি সেখানে যেসব পরামর্শ দেয়া হয় সেগুলো ছিল খুবই যুৎসই। আমরা সম্ভবত প্রতিটি প্রদেশের নিজস্ব স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে অভিমত দিই যে, এজন্য পূর্ব পাকিস্তানে কোন বৃহৎ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন নেই। ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হতে পারে। বেশ কয়েকদিন আমরা এই প্রতিবেদন প্রণয়নে ব্যস্ত থাকি। সম্ভবত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি আমাদের প্রতিবেদনটি প্রস্তুত হয়। অতঃপর আমার দায়িত্ব হয় এই প্রতিবেদনটি কী করে ঢাকায় যথাস্থানে পৌঁছে দেয়া যায়। আমি ঠিক করলাম যে, এই প্রতিবেদনটি যদি আমরা শামসুর রহমান অথবা রুহুল কুদ্দুসকে পাঠাতে পারি তাহলেই ঠিক জায়গায় পৌঁছে যাবে। তারা দু’জনই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আসামি ছিলেন এবং তারা বঙ্গবন্ধুর খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। জ্যেষ্ঠ সিএসপি কর্মকর্তা হিসেবে আমারও সুপরিচিত ছিলেন। আমার তখন প্রয়োজন হলো একজন বিশ্বস্ত বাহকের, যার মাধ্যমে এই প্রতিবেদনটি যথাস্থানে পাঠাতে পারি। খুব জলদি এই সুযোগটি পেলাম। পূর্ব বাংলার অতিরিক্ত মুখ্যসচিব শফিউল আজম সাহেব পিন্ডিতে এলেন সরকারী ভ্রমণে এবং তার দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন আমার বন্ধু ড. গোলাম রাব্বানী। আমি তাদের দু’জনকেই প্রতিবেদন দিলাম। শফিউল আজম সাহেবকে বললাম যে, চিঠিটি রুহুল কুদ্দুস সাহেবের কাছে পৌঁছে দিলেই চলবে আর ড. রব্বানীকে একই চিঠি শামসুর রহমান সাহেবের কাছে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করলাম। তারা দু’জনেই দায়িত্বটি গ্রহণ করতে রাজি হলেন। শফিউল আজম সাহেব আরও বললেন, তিনি শুধু একজন বাহক হিসেবেই আমার কাগজপত্র রুহুল কুদ্দুসকে দেবেন। এছাড়া আমাদের কাজে তার অন্য কোন সম্পর্ক থাকবে না। তারা দু’জনেই যথাসময়ে যথাস্থানে আমাদের এই প্রতিবেদন পৌঁছে দেন। বঙ্গবন্ধু যখন পশ্চিম পাকিস্তানে এলেন তার সঙ্গে জনাব রুহুল কুদ্দুস এবং শামসুর রহমানও ছিলেন। তারাই আমাকে জানালেন যে, তারা এই কাগজপত্র শুধু যথাস্থানে পৌঁছে দেননি বরং এটি নিয়ে কিছু আলোচনাও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে হয়। বস্তুতপক্ষে শামসুর রহমান সাহেব আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের উদ্দেশ্যেই লাহোর থেকে পিন্ডিতে আসেন এবং বঙ্গবন্ধু পিন্ডিতে আসার আগেই পৌঁছে যান। কাজটি অত্যন্ত গোপনে হয় এবং এ ব্যাপারে আমাদের বলয়ের বাইরে কেউ কিছু জানতেন বলে আমি কখনও বুঝতে পারিনি। ১ ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি আইয়ুব ঘোষণা দিলেন যে, রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধানের জন্য তিনি রাজনৈতিক নেতাদের গোলটেবিল বৈঠকে ডাকবেন। এক চিঠিতে ড্যাকের চেয়ারম্যান নবাবজাদা নসরুল্লাকে অন্য নেতৃবৃন্দসহ ১৭ ফেব্রুয়ারিতে তিনি একটি আলোচনা সভায় আমন্ত্রণ জানালেন। এই ব্যক্তিটি অত্যন্ত সজ্জন ছিলেন এবং পাকিস্তানের রাজনীতিতে স্বল্প সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। গোলটেবিল বৈঠক ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে বা উদ্যোগে তার কোন রাজনৈতিক অবদান ছিল বলে আমার জানা নেই। তিনি তামাকপ্রেমী মানুষ ছিলেন এবং তার সব ছবিতেই প্রিয় সাজানো হুকাটি বিশেষ স্থান দখল করে থাকত। আইয়ুব ৬ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা ভ্রমণে যান এবং সেখানেই ঘোষণা হলো যে, জরুরী অবস্থা অচিরে প্রত্যাহার করা হবে বলে ডিফেন্স অব পাকিস্তান আইনে আর কোন ধরপাকড় হবে না। অবশেষে ১৬ ফেব্রুয়ারিতে জরুরি অবস্থার অবসান হলো। ২১ ফেব্রুয়ারিতে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব ঘোষণা করলেন, তিনি আর নির্বাচন করবেন না এবং তার ব্যর্থ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি আর বহাল থাকবে না। অন্য ঘোষণা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারিতে গোলটেবিল বৈঠক হবে। গোলটেবিলে আমন্ত্রিত সব নেতা যাতে অংশ নিতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হবে। ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল হয়ে গেল। বঙ্গবন্ধু ও অন্য আসামিরা মুক্তি পেলেন। পরের দিনই বঙ্গবন্ধু প্রায় দশ লাখ লোকের এক জনসভায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তখন রেসকোর্স নামে পরিচিত) ৬ ও ১১ দফাকে জাতীয় ম্যান্ডেট বলে ঘোষণা দিলেন। সেই সভাতেই ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমদ তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিলেন। রাষ্ট্রপতি আইয়ুব গোলটেবিল বৈঠকের বিষয়টি তার ঘোষণার আগে মন্ত্রিসভায় আলোচনা করেন। সেখানে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দিন আইয়ুবের প্রস্তাবটি সাগ্রহে গ্রহণ করেন এবং নানা যুক্তি দিয়ে শুধু সমর্থনই করলেন না বরং তার ভূয়সী প্রশংসা করলেন। অনেকে বলতেন যে, তারই পরামর্শে রাষ্ট্রপতি আইয়ুব এই উদ্যোগটি নেন। আইয়ুবেরও হয়তো একটি সুপ্ত বাসনা ছিল তিনি সামরিক শাসন প্রবর্তন করলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন বলে হোক তার পরিচিতি। সে কামনা অবশ্যি কখনো পূরণ হওয়ার কোন সুযোগ পাকিস্তানে ছিল না এবং এখনো নেই বলে ধারণা করা হয়। তবে দেশরক্ষা মন্ত্রী রিয়ার এডমিরাল এ আর খান, আইনমন্ত্রী এস এম জাফর, কৃষিমন্ত্রী এম শামসুদোহা এবং শিল্পমন্ত্রী আজমল আলী চৌধুরী গোলটেবিল বৈঠকের বিরোধিতা করেন। ১৯৬৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে পিন্ডিতে গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু লাহোর এসে পৌঁছলেন ২৭ তারিখে। আমি আমার ভ্রাতা এ কে আবদুল মোমেনকে তাকে লাহোরে অভ্যর্থনা করতে পাঠালাম, তবে সঙ্গে আমাদের প্রতিবেদনের কপিও দিলাম এবং বিশেষ করে সর্বজনাব শামসুর রহমান ও রুহুল কুদ্দুসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বললাম। এদিকে অধ্যাপক আনিসুর রহমান ও ওয়াহিদুল হকও বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা করতে লাহোর যান। লাহোরে এয়ার মার্শাল আসগর খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন যে, ছয় দফা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় যদি প্রদেশগুলো করে তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রমের কিভাবে অর্থায়ন হবে। বঙ্গবন্ধু তৎক্ষণাৎ তাকে বললেন তার সহকর্মী বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে তাকে বিস্তৃত বলতে পারবেন। আনিসুর রহমান ও ওয়াহিদুল হককে বললেন তারা যেন তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে দেন। আমার জানা মতে, আমার বন্ধু খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ আনিস এবং ওয়াহিদের নাম বঙ্গবন্ধুর জানা ছিল কিন্তু তাদের তিনি সেদিনই প্রথম দেখেন। বঙ্গবন্ধু কোন ষড়যন্ত্রের রাজনীতি যেন জানতেনই না। তার আলাপ-আলোচনা ছিল খোলাখুলি, কোথাও কোন রাখঢাক ছিল না। তার ছয় দফাও ছিল তেমনি সুস্পষ্ট। সেজন্য সহজেই তিনি এয়ার মার্শালকে বলতে পারলেন যে, আনিস এবং ওয়াহিদ তাকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন। আনিস ও ওয়াহিদের সঙ্গে তার পূর্ব পরিচয় না থাকলেও তিনি বুঝলেন তারা তাকে অভ্যর্থনা করতে ইসলামাবাদ থেকে লাহোরে যে গেছে তার মানেই হলো যে তারা তার কার্যক্রম ও নেতৃত্বে বিশ্বাস করে এবং ছয় দফা সম্বন্ধে তারা যথেষ্ট অবহিত। তাই তিনি এত স্বচ্ছন্দেই বলতে পারলেন যে তারাই এয়ার মার্শালকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু সেদিনই সন্ধ্যার অব্যবহিত পরে পিন্ডি পৌঁছেন। রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা ফিদা হাসান আমাকে জানালেন যে, চাকলালা বিমানপোতে বঙ্গবন্ধুকে পেছনের দরজা দিয়ে নামিয়ে বিশেষ গাড়িতে করে সরাসরি পূর্ব পাকিস্তান হাউসে নিয়ে যাওয়া হবে। চাকলালায় সমবেত সংবর্ধনা প্রদানকারীদের জানাতে হবে যে, বঙ্গবন্ধু নিরাপত্তার খাতিরে সরাসরি তাঁর গন্তব্যস্থলে চলে গেছেন বলে তার দেখা পাওয়া যাবে না। এই কাজটি আমাকে করতে হবে। আমি আমার কর্তব্য উপলক্ষে চাকলালা বিমানবন্দরে সন্ধ্যাবেলা হাজির হলাম। সম্ভবত সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় লাহোর হতে আগত পিআইএ বিমান অবতরণ করল। পরিকল্পনামতো বঙ্গবন্ধু গাড়ি চড়ে পূর্ব পাকিস্তান ভবনে চলে গেলেন। চলবে...
×