ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শাকিল আহমেদ

ধনিয়া পাতার স্বাস্থ্যগুণ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

ধনিয়া পাতার স্বাস্থ্যগুণ

অধিকাংশ মানুষ ধনিয়া পাতার উপকারিতা না জেনেই নিয়মিত বিভিন্ন তরকারিতে ব্যবহার করে আসছে। এতে রয়েছে ১১ জাতের এসেনশিয়াল অয়েল, ৬ ধরনের এসিড (এ্যাসকরবিক এসিড যা ভিটামিন ‘সি’ নামেই বেশি পরিচিত), ভিটামিন, মিনারেল এবং অন্যান্য উপকারী পদার্থ। আসুন জেনে নেই ধনিয়া পাতার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে : - হজমে উপকারী, যকৃতকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে, পেট পরিষ্কার হয়ে যায় ধনিয়াপাতা খেলে। -ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য ধনিয়াপাতা বিশেষ উপকারী। এটি ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তে সুগারের মাত্রা কমায়। -ধনিয়া পাতায় থাকা এ্যান্টি-সেপটিক মুখে আলসার নিরাময়েও উপকারী, চোখের জন্যও ভাল। -ঋতুস্রাবের সময় রক্তসঞ্চানল ভাল হওয়ার জন্য ধনিয়াপাতা খেলে উপকার পাওয়া যায়। এতে থাকা আয়রন রক্তশূন্যতা সারাতেও বেশ উপকারী। -ধনিয়াপাতার ফ্যাট স্যলুবল ভিটামিন এবং এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ‘এ’ ফুসফুস এবং পাকস্থলির ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে। -এতে রয়েছে এ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা বাতের ব্যথাসহ হাড় এবং জয়েন্টের ব্যথা উপশমে কাজ করে। -স্মৃতিশক্তি প্রখর এবং মস্তিষ্কের নার্ভ সচল রাখতে সাহায্য করে ধনিয়াপাতা। -ধনিয়া পাতার ভিটামিন ‘কে’ এ্যালঝেইমার রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী। -ধনিয়া পাতায় উপস্থিত সিনিওল এসেনশিয়াল অয়েল এবং লিনোলিক এসিড থাকে যার মধ্যে এ্যান্টিরিউম্যাটিক এবং এ্যান্টি-আর্থ্রাইটিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এরা ত্বকের জ্বালাপোড়া এবং ফুলে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে। -ডিসইনফেকট্যান্ট, ডিটক্সিফাইং বা বিষাক্ততা রোধকারী, এ্যান্টিসেপটিক, এ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকার কারণে এরা বিভিন্ন স্কিন ডিজঅর্ডার বা ত্বকের অসুস্থতা (একজিমা, ত্বকের শুষ্কতা এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন) সারাতে সাহায্য করে। ত্বক সুস্থ ও সতেজ রাখতে তাই ধনিয়া পাতার উপকারিতা অনেক। -ক্যালসিয়াম আয়ন এবং কলিনার্জিক বা এ্যাসেটিকোলিন উপাদান মিলে আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। -এ্যান্টি হিস্টামিন উপাদান থাকায় এরা এ্যালার্জি বা এর ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে দূরে রাখে। -খাবারের মাধ্যমে সৃষ্ট সবচেয়ে ভয়াবহ রোগ সালমোনেলা। ধনিয়া পাতায় উপস্থিত ডডেসিনাল উপাদান প্রাকৃতিক উপায়ে সালমোনেলা জাতীয় রোগ সারিয়ে তুলতে এ্যান্টিবায়টিকের থেকে দ্বিগুণ কার্যকর। -এর মধ্যে থাকা এ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, এ্যান্টিইনফেকসাস, ডিটক্সিফাইং, ভিটামিন ‘সি’ এবং আয়রন গুটিবসন্ত প্রতিকার এবং প্রতিরোধ করে। -বিভিন্ন ভেষজ পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে যৌনশক্তি বৃদ্ধি করতে ধনিয়া পাতার উপকারিতা অনেক। -কারও মাথাব্যথা হলে ধনিয়াপাতা ও গাছের রস কপালে লাগান। মাথাব্যথা কমে যাবে। -ধনিয়াপাতা চিবিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের মাড়ি মজবুত হয় এবং দাঁতের গোড়া হতে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। সতর্কতা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ধনিয়াপাতা বেশি খেলে বীর্য সৃষ্টি ও কামউদ্দপিনা কমে যায়। চোখের দৃষ্টি ক্ষতি হতে পারে। শ্বাস রোগের ক্ষতি করে। অবশ্য আমরা প্রতিদিন যে পরিমাণে ধনিয়াপাতা সেবন করি তা স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি করে না। অতিমাত্রায় রস সেবন করলেই ক্ষতির কারণ হয়। মনে রাখবেন রান্না করার সময় তরকারি চুলায় রেখে ধনিয়াপাতা দিয়ে চুলায় আর তাপ দেবেন না। এতে ধনিয়া পাতার সুগন্ধ কমে যাবে। তাই তরকারি চুলা হতে নামিয়ে কুচি কুচি করে কেটে ছিটিয়ে দিয়ে ঢাকনা দিয়ে রাখুন। পুরোপুরি স্বাদ পাবেন।
×