ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আয় ও সম্পদ বেশি দেখিয়েছে সোনালী আঁশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

আয় ও সম্পদ বেশি দেখিয়েছে সোনালী আঁশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুতিতে যথাযথ হিসাব প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি পাট খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এর মাধ্যমে আয় ও সম্পদ বাড়িয়ে দেখিয়েছে কোম্পানি। সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে নিরীক্ষক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সোনালী আঁশের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের ‘কোয়ালিফাইড অপিনিয়ন’ অংশে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান বলে, ২০১৬ সালের বার্ষিক হিসাব বিবরণীতে ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৪ টাকার অদৃশ্য সম্পদ বা আয় যোগ করেছে কোম্পানিটি। এজন্য অদৃশ্য সম্পদ ও অনর্জিত আয়ের জাবেদাভুক্তি হয়েছে। এক্ষেত্রে হিসাব সংক্রান্ত নীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে পুঞ্জীভূত মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে কোম্পানি। আপত্তির দ্বিতীয় অংশে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান বলে, স্থায়ী সম্পদ পুনর্মূল্যায়নের কারণে সম্পদমূল্য যতটা বেড়েছে ২০০৬-০৭ হিসাব বছর থেকে সেখানে কোন অবচয় ধার্য করেনি কোম্পানি। বাংলাদেশ এ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস) অনুসারে এটিও করার কথা। যথাযথ অবচয় ধার্য করা হলে প্রদর্শিত সম্পদমূল্য আরও কম হতে পারত। তৃতীয় পয়েন্টে নিরীক্ষক বলে, ২০০৫-০৬ থেকে ২০১৪-১৫ হিসাব বছর পর্যন্ত কোম্পানির ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ও ওয়েলফেয়ার ফান্ডে ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৯ টাকা জমা হয়েছে, শ্রম আইন অনুসারে যার দুই-তৃতীয়াংশ সব কর্মীর মধ্যে সমানুপাতে বিতরণ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কোম্পানি এক্ষেত্রেও আইন লঙ্ঘন করেছে। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে সোনালী আঁশের পরিচালনা পর্ষদ। সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, গেল হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫৯ পয়সা, আগের বছর যেখানে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৬০ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ২২৪ টাকা ৫৪ পয়সা। ২০১৫ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রান্তিকে সোনালী আঁশের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২৯ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১৯ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২২৪ টাকা ৮৩ পয়সা। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে ডিএসইতে সোনালী আঁশ শেয়ারের দর ছিল ১২০ টাকার ঘরে, নবেম্বরে যা ২১৮ টাকায় উন্নীত হয়। এরপর এর দরে কিছুটা সংশোধন দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ ১৮৩ টাকা ৪০ পয়সায় সোনালী আঁশের শেয়ার হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ২১৮ টাকা ৯০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ১১২ টাকা ৭০ পয়সা। ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রফতানিমুখী কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভে আছে ৫৮ কোটি ২ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬১ দশমিক ৯৯ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৩২ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
×