ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আয় বেড়েছে আইটিসির

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ৮ ডিসেম্বর ২০১৬

আয় বেড়েছে আইটিসির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ তালিকাভুক্তির আয় বেড়েছে আইটি কনসালট্যান্টস লিমিটেড (আইটিসি)। আগের বছর মুনাফায় ধস নামলেও ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিটির নিট মুনাফা ১৪৩ শতাংশ বেড়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে এটিএম মেশিন ও সংশ্লিষ্ট সেবা বিক্রি করে প্রায় চার গুণ মুনাফা করেছে। সর্বশেষ বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে আইটিসি জানিয়েছে, ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের মোট ১৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংককে গ্রাহক হিসেবে পেয়েছে তারা। সংশ্লিষ্ট সেবা নেটওয়ার্কের সদস্য হিসেবে রয়েছে মোট ৩১টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এক বছরের ব্যবধানে গ্রাহক ব্যাংকগুলোকে এটিএম মেশিন ও সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান বৃদ্ধির সুবাদেই কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে। এর বাইরে তাদের ই-পেমেন্ট সিস্টেম কিউ ক্যাশের ব্যবহার বৃদ্ধিও বিক্রি বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) পরিশোধে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কিউ ক্যাশ। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্পে সহযোগী হিসেবে অংশ নেয়ার কারণে সার্ভিস এ্যান্ড মেইনটেন্যান্স খাতেও কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে। আইটিসির সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের বছরের তুলনায় সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানির মোট রেভিনিউ ৬৭ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে তাদের মোট রেভিনিউ ছিল ৫৯ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার টাকা, সর্বশেষ হিসাব বছরে যা ৯৮ কোটি ৬২ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এতে মূল ভূমিকা রেখেছে এটিএম মেশিন। এক বছরের ব্যবধানে এ খাতের তাদের বিক্রি চার গুণে উন্নীত হয়েছে। ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে আইটিসি এটিএম বিক্রি থেকে আয় করে ৪০ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার, আগের বছর যা ছিল মাত্র ১১ কোটি ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। সর্বশেষ হিসাব বছরে পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) বিক্রি থেকে কোম্পানির রেভিনিউ কিছুটা কমলেও বায়োমেট্রিক ও ফিঙ্গার প্রিন্ট ডিভাইস ও সফটওয়্যার থেকে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা আয় হয়েছে, আগের বছর যেখানে কোন রেভিনিউ ছিল না তাদের। এছাড়া সর্বশেষ বছরে কিউ ক্যাশ থেকে কোম্পানির আয় ১৬ কোটি থেকে ২১ কোটি টাকা এবং সার্ভিস এ্যান্ড মেইনটেন্যান্স বাবদ আয় ১৯ কোটি টাকা থেকে ২১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে বিক্রয় প্রবৃদ্ধির সমান্তরালে পরিচালন ও আর্থিক ব্যয় না বাড়ায় আইটিসির নিট মুনাফা অনেক বেড়েছে। ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, আগের বছর যা ছিল ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৩ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৪২ পয়সা। হিসাব বছর শেষে শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয়ার সুপারিশ করেছে আইটিসির পর্ষদ, রবিবার অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় যা অনুমোদন করেছেন শেয়ারহোল্ডাররা। এদিকে সর্বশেষ প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে (প্রথম প্রান্তিক) ১২ পয়সা ইপিএস দেখিয়েছে আইটিসি। যেখানে আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ৬ পয়সা লোকসান ছিল কোম্পানির। ৩০ সেপ্টেম্বর শেয়ার প্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৮১ পয়সা। উল্লেখ্য, গত বছরের শেষ দিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১২ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করেছে আইটিসি। এর আগে ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৫৫৪তম সভায় তাদের আইপিও অনুমোদন হয়। এর পর অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে তারা। এতে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৮৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। আইটিসি লিমিটেডের মূল ব্যবসা এটিএম ও ইলেকট্রনিক পেমেন্ট-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার বিক্রি ও সংশ্লিষ্ট রক্ষণাবেক্ষণ সেবা। বর্তমানে কোম্পানির ৫১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ শেয়ারের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ২২ দশমিক ৩২ এবং বাকি ২৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
×