স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। দেশের ট্যানারি শিল্পসমূহকে হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য শিল্প কারখানাগুলোকেও এক জায়গায় এনে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে।
চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে ৩ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এসএমই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে শনিবার শুরু হয়েছে এই মেলা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য এমএ লতিফ।
শিল্পমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশের নব্বই শতাংশ শিল্প ও ব্যবসা এসএমই খাতের আওতাভুক্ত। মোট ব্যবসা বাণিজ্য ও রফতানির ৭০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করছে এই খাত। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। রফতানি বৃদ্ধি, পণ্যের বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র মাঝারি খাত বিরাট ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারও এ খাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। দেশের শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ কর্মসংস্থানও এসএমই খাতে। এই খাত মোট উৎপাদনের ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ যোগান দিয়ে থাকে। শিল্পমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে শিল্পখাতকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের সুবিধার্থে কারখানাগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে সরকারের পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন কারখানা, কেমিক্যাল শিল্প, প্লাস্টিক ও মুদ্রণ শিল্পকে এক জায়গায় এনে প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সুবিধা প্রদানের চিন্তা ভাবনা করছি। মন্ত্রী আরও বলেন, এসএমই খাতের বিকাশে শীঘ্রই নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হবে। এই নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে তিনি চিটাগাং চেম্বারের সুপারিশ প্রত্যাশা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য এমএ লতিফ এসএমই খাতে প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা এবং অনাগ্রহ রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের নানাভাবে হয়রানি পোহাতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ জানান। এমএ লতিফ আরও বলেন, দেশের ঋণখেলাপীদের প্রায় সকলেই বড় বড় ব্যবসায়ী। তারা উদ্যোক্তা নন। প্রকৃত উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণ পাচ্ছেন না। দেশের ব্যাংকে যে রিজার্ভ রয়েছে তা মূলত ১শ’ জন বড় ব্যবসায়ীর দখলে। ১৬ কোটি মানুষকে এই অর্থ ব্যবহারের সুযোগ না দিলে দেশ অর্থনৈতিকভাগে এগোবে না।
চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক শামসুল আরেফিন, চিটাগাং চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন এবং চেম্বারের নেতৃবৃন্দ। চেম্বার সভাপতি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিতকরণ এবং প্রয়োজনীয় ধারণা দিতেই এই মেলার আয়োজন। চট্টগ্রামে এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক এসএমই মেলা। চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে এই মেলা চলবে আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য মেলাঙ্গন উন্মুক্ত থাকবে।