ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান

বিদেশে খেলতে এখন আর ভয় নেই

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ৬ নভেম্বর ২০১৬

বিদেশে খেলতে এখন আর ভয় নেই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুইবছরের বেশি সময় হয়ে গেল বাংলাদেশ দল বিদেশের মাটিতে দ্বিপক্ষীয় কোন সিরিজ খেলে না। ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই আবার সেই পথে পা বাড়াচ্ছে দল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে, তিন টি২০ ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডেতো প্রায় ৭ বছর পর দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ দেশের মাটিতে উড়ন্ত সাফল্য পাচ্ছে। বিদেশের মাটিতে এখন চ্যালেঞ্জ আসছে। সেই চ্যালেঞ্জে কি সাফল্য ধরা দেবে? বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান মনে করছেন, বিদেশ সফরে এখন আর ভয় নেই। শনিবার আগারগাঁওয়ের এলজিইডি ভবনের সম্মেলন কক্ষে লিংক বলপেনের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর করেন সাকিব। এ অনুষ্ঠান শেষে সাকিব বলেন, ‘আগে বিদেশ সফরে গেলে আমরা ভীত থাকতাম। কেমন করি, চিন্তা থাকতো। বিশ্বকাপে (অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে হওয়া ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ) ভাল খেলায় আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। পেসাররা খুব ভালো করছে। স্পিন-পেস দুটি ডিপার্টমেন্টই ভাল হচ্ছে। আশাকরি, ভাল কিছুই হবে।’ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৭ বছর পর দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তবে গতবছর বিশ্বকাপেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলেছে বাংলাদেশ দল। তাই কন্ডিশন সম্পর্কে টাটকা অভিজ্ঞতাই আছে। আর সেই অভিজ্ঞতা এবার কাজেও লাগবে। ওয়ানডেতেই শুধু নয়, বাংলাদেশ দল টেস্টেও ভাল করছে। গত সপ্তাহেই ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়েছে। তাহলে কি টেস্টেও বাংলাদেশের সাফল্যের দিন শুরু হয়ে যাচ্ছে। সাকিব এরকমটিই মনে করেন। তাই বলেছেনও, ‘এটা তো কেবল শুরু। সামনে এমন দিন আরও আসবে।’ তাহলে কী বিদেশেও টেস্ট জয় মিলবে? ২০০০ সাল থেকে টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে ১৬ বছর হয়েও গেল। কিন্তু বিদেশের মাটিতে সেইরকমভাবে টেস্টে সাফল্য নেই। নির্ধারিত ওভারেও সাফল্য আহামরি নয়। ৯৫ টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। এরমধ্যে বিদেশের মাটিতে ৪২টি টেস্ট খেলে। মোট ৮ টেস্ট জয়ের মধ্যে বিদেশের মাটিতে জয় তিনটি। হার ৩৬টি। ড্র ৩টি। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানা ২ টেস্টে হারায় বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে যেটি বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের সঙ্গে সিরিজ জয়ও। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটি দুর্বল ছিল। ক্রিকেটার ও বোর্ডের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় শক্তিশালী দল নিয়ে খেলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সুযোগটি ভালভাবেই কাজে লাগায় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর ২০১৩ সালে জিম্বাবুইয়ের মাটিতে জিম্বাবুইয়েকেও একটি টেস্টে হারায় বাংলাদেশ। এ তিন টেস্টেই জয় পায়। আর তিন ড্রর মধ্যে ২০০৪ সালে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ড্র’টি বৃষ্টির সুবাদে পাওয়া। একই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ও ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র দুটি দাপটে খেলেই মিলে। ওয়ানডেতে মোট ৩১৮ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। ১০১ ম্যাচে জয় পায়। ২১৩ ম্যাচে হারে। ৪টি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। এর মধ্যে বিদেশের মাটিতে ১০১ ম্যাচ খেলে মাত্র ২৩টিতে জয় তুলে নিতে পারে। ৭৭টিতে হারে। ১টি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। টি২০তেও অবস্থা একই। মোট ৬২টি ম্যাচের মধ্যে বিদেশের মাটিতে ১৬ ম্যাচ খেলে ৬টিতে জিততে পারে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি২০; কোনটিতেই জয় নেই বাংলাদেশের। এবার বাংলাদেশ দল অনেক পরিণত হয়েই আত্মবিশ্বাস নিয়েই নিউজিল্যান্ড যাবে। আর তাই আগের যে কোন বিদেশ সফরের চেয়ে ভাল করার আশাও থাকছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জেতাটাকেই তাই সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। সাকিবও জানিয়েছেন, ‘আমরা টেস্ট ম্যাচ তেমন জিতি না। এটা অনেক বড় ব্যাপার। এজন্য সবাই গর্ববোধ করে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় এটা।’ নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে যে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে কন্ডিশনিং ক্যাম্প হবে, সেটিও দলের ভীষণ কাজে দেবে বলেই বিশ্বাস সাকিবের, ‘ওখানে (নিউজিল্যান্ড) আমাদের জন্য সহজ হবে না। তাই প্রস্তুতি ভাল হওয়া উচিত। নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের ক্যাম্প খুব কাজে দেবে। আশাকরি ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে পারব।’
×