ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল

‘চেষ্টা থাকবে ম্যাচটা জেতার’

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

‘চেষ্টা থাকবে ম্যাচটা জেতার’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে সাব্বির রহমান রুম্মন ছাড়া সবাই ছিলেন। পেটের ব্যথায় সাব্বির অনুশীলন করেননি বুধবার। বাকিরা সবাই ‘ব্যাটিং-বোলিং’ অনুশীলন ভালভাবে সেরে নিয়েছেন। অনুশীলন পর্বে তাসকিন আহমেদ ও সাজিদুল ইসলামও ছিলেন। কেন? যদি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টে ইংলিশ পেসাররা সুবিধা পেয়ে যান, তাহলে তাদের রুখতে হবে না! আর তাই ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে দুই পেসার তাসকিন ও সাজিদুল বল করে যান। প্রথম টেস্টে ইংলিশ স্পিনাররাতো দাপট দেখালই। সেই সঙ্গে দুই পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড ও বেন স্টোকসও যে বারোটা বাজিয়ে দেন। এবার তাই তামিম, ইমরুল, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহরা আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যাচ্ছেন। পেসারদের কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য দলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার কোর্টনি ওয়ালশতো আছেনই। বুধবার দলের সঙ্গে দেখা গেল নির্ধারিত ওভারের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকেও। তাহলে কি ধরেই নেয়া হচ্ছে, ইংলিশদের পেস আক্রমণই বিপদ ডেকে আনতে পারে? বাংলাদেশ ওপেনার তামিম তা মনে করছেন না। তিনি বিশ্বাস করেন, ম্যাচটাও জিততে পারেন। বুধবার অনুশীলন শেষে নিজেই বলেছেন, ‘আমাদের চেষ্টা থাকবে ম্যাচটা জেতার।’ আর ইংলিশদের পেস আক্রমণ নিয়ে জানান, ‘এটা (ইংলিশ পেস) নিয়েতো আমাদের টিম মিটিং হয়। আমরা আলাপ করি। ওদের কিভাবে আমরা আরও ভালভাবে মোকাবেলা করতে পারি। আমি নিশ্চিত, মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান, লেট মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান আর যদি টপঅর্ডার কেউ বড় ইনিংস খেলে তাদেরই ওই জিনিসটা ফেস করার সুযোগ বেশি। আমি নিশ্চিত ওরা সবাই রেডি হচ্ছে। আমরা অনুশীলনও করছি ওভাবে করে। ওই জিনিসটা যদি আবারও আসে আমরা ভালভাবে কিভাবে হ্যান্ডেল করতে পারি। এর সবকিছুই আমরা করছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মাঠে গিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।’ তাতে কী সফল হতে পারবে বাংলাদেশ? বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ দল অনুশীলন করেছে। সকালে করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। পেসাররাইতো বেশি বেশি বল করলেন। যেন আগে থেকেই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের ভোগানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। কিন্তু প্রায় ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম টেস্টেই যে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স দেখিয়েছে বাংলাদেশ, সেটি দলের ক্রিকেটারদের সবদিক থেকেই আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে বলেই বিশ্বাস তামিমের, ‘আমরা এত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ খেলেছি। আমার মনে হয়, এত বড় একটা গ্যাপের পর প্রথম ম্যাচটা যদি ভাল না খেলতাম তাহলে হয়তো এর প্রভাব একটু থাকত। আমরা একটা ভাল ম্যাচ খেলেছি, আমরা আগের চেয়ে ভাল প্রস্তুত থাকব, আত্মবিশ্বাসীও থাকব।’ চট্টগ্রাম টেস্টে ভাল করায় সবাই প্রশংসা করছে। তাতে গা ভাসিয়ে দিতে রাজি নন তামিম, ‘গণমাধ্যমে বা মানুষজন সবাই বলছে, আমরা খুব ভাল খেলেছি। আমরা দলে আলোচনা করলাম, এতটুকুতে যদি খুশি হয়ে যাই, তাহলে আমরা কোন সময় উন্নতি করতে পারব না। হারায় আমরা সবাই কষ্ট পেয়েছি। যদি জিততাম তাহলে অন্যরকম কথা ছিল। আমরা হেরে গেছি, এখন সবাই বলছে আমরা ভাল খেলেছি, এটা চিন্তা করে যদি আমরা এগিয়ে যাই, আমার মনে হয় না এটা ভাল লক্ষণ হবে। আমরা একটা ম্যাচ হেরেছি, ওটার খারাপ লাগার অনুভূতিটা আমাদের মধ্যে রয়েছে। কিছু ইতিবাচক জিনিস তো অবশ্যই ছিল যে, আমরা পাঁচদিনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। যদি আমরা ম্যাচ জিততে পারতাম অন্যরকম অনুভূতি থাকত। যখনই খেলব, আমাদের চেষ্টা থাকবে ম্যাচটা জেতার।’ সঙ্গে তামিম বলেছেন, ‘কথাটা অনেকদিন ধরে সবাই বলে, আমিও বলছি। আমাদের টেস্ট রেকর্ডও এমন না যে বলব জিতব বা এমন কিছু। একটা জিনিস আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি, মাঠে যে ১১ জন নামে, তারা নামেই কিন্তু জেতার জন্য। পারি না পারি, এটা অন্য বিষয়। পরের টেস্টেও আমাদের এই একই পরিকল্পনা থাকবে। প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত নিজেদের কাজটুকু আমরা ভালভাবে করি। যদি জিততে না পারি তখন অন্য স্টেপ, বা ড্রয়ের চিন্তা।’ উইকেট কেমন হওয়া উচিত? তা নিয়ে বলতে গিয়ে তামিম জানান, ‘আমাদের জন্য ভাল। যেটা আমাদের দলের সঙ্গে বেশি মানানসই হবে আমার মনে হয় তেমন ধরনেরই উইকেট হবে। আমার মনে হয়, হোম এ্যাডভান্টেজ একটা থাকা উচিত। উইকেট (চট্টগ্রামের) আমাদের পুরোপুরি ফেভারে ছিল। যেটা চেয়েছিলাম সেটা পেয়েও আমরা ম্যাচ হেরেছি। আমি মনে করি, উইকেট যদি স্যুট করে ভাল। আমাদের ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। আমাদের ওই উইকেটকে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের চাওয়া মতো উইকেট পেয়ে গেলাম কিন্তু ব্যবহার করতে পারলাম না, তাহলে তো আর উইকেটকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমরা খেলোয়াড়রা কিভাবে কম ভুল করব। সেটাতেই আমাদের ফোকাস বেশি থাকা উচিত। আমাদের খেলোয়াড়রা সেভাবেই ফোকাস করছে। উইকেট এমন একটা জিনিস যা আমাদের হাতে নেই। স্পিন উইকেট বানাতে দেখা গেল একটা বলও নাও ঘুরতে পারে। আমার মনে হয়, আমাদের কাজ আগে আমরা ঠিকঠাক করি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘যে ধরনের উইকেট ছিল সেখানে, ব্যাটিংটা খুব সহজ ছিল না। তারপরও দুই ইনিংসেই আমাদের সময় এসেছিল। ব্যক্তিগতভাবে কারোর কিছু সময় এসেছিল। যখনই যার সময় আসে সেটা যদি আরেকটু বড় হতো তাহলে শেষ ম্যাচে আমাদের কাজটা আরও সহজ হতো। উইকেটের আচরণ যদি একইরকম থাকে ঢাকায়, তাহলে পরিকল্পনা একইরকম থাকবে। চট্টগ্রামে যা হয়েছে ব্যাটসম্যানরা যদি ২০/২৫ রান আরও বেশি করে তাহলে আমরা হয়তো আরও ভাল অবস্থানে থাকব। দিন শেষে আমরা (প্রথম টেস্ট) ম্যাচটা হেরেছি। আজ থেকে পাঁচ বছর পর ওই রেকর্ডে লেখা থাকবে আমরা হেরেছি। ভাল খেলেছি ওটা কোথাও লেখা থাকবে না। তো আমাদের কাজ হচ্ছে পরের যে ম্যাচ আছে সেখানে ফোকাস করা। উইকেটের কথা ভুলে যাওয়া।’ উইকেটের কথা ভুলে এখন পরিস্থিতি বুঝে খেলতে পারলেই হলো। তা করতে পারলে তামিম যে জয়ের আশা দেখছেন, সেটিওতো মিলে যেতে পারে।
×