ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের মেয়াদ ও বরাদ্দ বাড়ল

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের মেয়াদ ও বরাদ্দ বাড়ল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দারিদ্র্য বিমোচনে নেয়া ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের মেয়াদ ও অর্থবরাদ্দ তৃতীয় বারের মতো বাড়ানো হয়েছে। চার বছর বাড়িয়ে প্রকল্পের নতুন মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয়েছে জুন ২০২০ পর্যন্ত। এ সময়ে প্রকল্পটির জন্য নতুন করে আরও প্রায় ৪ হাজার ৮৪৮ কোটি বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় মোট ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। শেরে বাংলা নগরে এনইসি-১ সম্মেলন কক্ষের সংস্কার কাজ চলার কারণে কয়েক বছরের মধ্যে এবারই একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। সভা শেষে শেরে বাংলানগরের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। মন্ত্রী জানান, ১০ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৪৪৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যার পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব চিন্তা ভাবনার ফসল। দারিদ্র্য বিমোচনে এটি ভূমিকা রাখছে। এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা ৩ কোটি মানুষকে বেরিয়ে আনতে এ প্রকল্প দরকার রয়েছে। দারিদ্র্য যতদিন থাকবে, এই প্রকল্পও চলমান থাকবে। মেয়াদ শেষ হলে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উপর প্রকল্পটি ন্যস্ত করা হবে। ব্যাংকও চলবে প্রকল্পও চলবে। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নাই। মন্ত্রী জানান, বর্ধিত ব্যয়বরাদ্দসহ একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদকাল দাঁড়িয়েছে ২০২০ সাল পর্যন্ত। এর আগে দ্বিতীয় সংশোধনীর সময় প্রকল্পটির জন্য মোট বরাদ্দ ছিল প্রায় ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। প্রথম সংশোধনীতে মোট বরাদ্দ ছিল প্রায় ১ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সংশোধনী অনুযায়ী চলতি বছরের জুনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়। আর মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। অনুমোদন পেয়েছে বিএএফএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ। যশোর সেনানিবাসে এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ঢাকা সিএমএইচএ ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পটিও চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। বিজিবি সদর দফতর, পিলখানা, ঢাকায় অফিসার অন্যান্য পদধারী এবং কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারা বাজার সড়কের ছাতকে সুরমা নদীর উপর সেতুর অবশিষ্ট কাজ সমাপ্তকরণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১১২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। জামালপুরে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া দেশের ৩টি উপকূলীয় জেলার ৪টি স্থানে আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙ্গন হতে হাজী শরীয়তউল্লাহ সেতু সংলগ্ন ঢাকা-মাওয়া-ভাংগা-খুলনা জাতীয় মহাসড়ক রক্ষা প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আর প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় রাজৈর-কোটালীপাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ কাজের জন্য একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া ‘উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আর্য়বর্ধক প্রশিক্ষণ’ প্রকল্পটি পুনরায় যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে ফেরত পাঠিয়েছে একনেক।
×