ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল ॥ মোহামেডান ০-১ উত্তর বারিধারা

মোহামেডানকে হারিয়ে বারিধারার চমক

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

মোহামেডানকে হারিয়ে বারিধারার চমক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যদিও কোন বৃষ্টি হয়নি, তারপরও মঙ্গলবার দুপুর থেকেই কার্তিকের আকাশ ছিল ঘন কালো মেঘে ছাওয়া। দু’দলের খেলাতেও ছিল তার ছাপ। উভয়দলই খেলেছে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করে। গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছে একাধিক। কিন্তু আসল কাজটিই করতে পারেনি। পারেনি কাক্সিক্ষত গোলটি করতে। কিন্তু ম্যাচ শেষ হবার কিছুক্ষণ আগে পেনাল্টি থেকে গোল করে বাজিমাত করে উত্তর বারিধারাই! তারা ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডকে। কাকতালীয় বলে একটা ব্যাপার আছে। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সেটিই করে দেখালেন খালেকুরজামান সবুজ। গত ২৪ জুলাই চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছিল ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলের খেলা। সেদিন দ্বিতীয় ম্যাচেই শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ১-০ গোলে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছিল আন্ডারডগ উত্তর বারিধারা ক্লাব। গোলটি হয়েছিল দ্বিতীয়ার্ধে (৬৩ মিনিটে) এবং পেনাল্টি থেকে। করেছিলেন ডিফেন্ডার খালেকুরজামান সবুজ। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শেখ রাসেলকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করা বারিধারা এরপর আর ছন্দ ফিরে পায়নি, টানা হেরেছিল নয় ম্যাচ। নয় ম্যাচ পর এবার মোহামেডানকে হারিয়ে আবারও জয় কুড়িয়ে নিল তারা, ১৮ অক্টোবর, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। মজার ব্যাপার, বারিধারার এই গোলটিও ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে এবং পেনাল্টি থেকে করা। আর গোলদাতা? সেই খালেকুরজামান সবুজ! ২০১৬ স্বাধীনতা কাপে গ্রুপ ম্যাচে মাসুক মিয়া জনি এবং ইসমাইল বাঙ্গুরার গোলে বারিধারাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল মোহামেডান। মঙ্গলবারের খেলায় জনি-বাঙ্গুরা দু’জনেই ছিলেন। কিন্তু এবার আর গোলের দেখা পাননি। উল্টো এবার তাদের হারিয়ে স্বাধীনতা কাপে হারার বদলাটা ভালমতোই নিয়ে নিল বারিধারা। নিজেদের একাদশ ম্যাচে এটা মোহামেডানের চতুর্থ হার। ৯ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান আগের মতোই, দশম। পক্ষান্তরে সমান খেলায় এটা বারিধারার দ্বিতীয় জয়। ছয় পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান একাদশ। শেখ রাসেলকে টপকে এক ধাপ উন্নতি হয়েছে তাদের (মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত শেখ জামাল-শেখ রাসেল ম্যাচের আগ পর্যন্ত পরিসংখ্যান)। প্রথমার্ধে উভয়দলের আক্রমণগুলোর বেশিরভাগই ছিল বিক্ষিপ্ত। খেলোয়াড় তালিকাতে কোচ কাজী জসিমউদ্দিন আহমেদ জোসির নাম থাকলেও এদিনও ডাগআউটে দেখা যায়নি জোসিকে। অনেকদিন ধরেই দলকে ভালভাবে অনুশীলন করানোর জন্য ও নিজের বেতনের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বারবার বলে কোন ফল না পাওয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই অভিমান করে খেলোয়াড়দের অনুশীলন করাচ্ছেন না জোসি। ক্লাবও কম যায় না, তারাও কোন যোগাযোগ করেনি কোচের সঙ্গে, আবার তাকে বরখাস্তও করেনি! গত ১৪ অক্টোবর শেখ জামালের বিরুদ্ধে ম্যাচে জোসির পরিবর্তে ডাগআউটে কোচের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুকে। শেখ জামালকে হারিয়ে সেদিন বাবুর উচ্ছ্ব্াস ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু বারিধারার কাছে হেরে বাবু হাড়ে হাড়ে বুঝলেন ফুটবল এত সহজ খেলা নয়! ৮৪ মিনিটে মোহামেডানের সীমানায় বল নিয়ে দ্রুতগতিতে ঢুকে পড়েন বারিধারার ডিফেন্ডার খালেকুরজামান সবুজ। বিপদ দেখে তাকে আটকাতে একসঙ্গে ফাউল করে মাটিতে ফেলে দেন মোহামেডানের দুই ডিফেন্ডার ইউসুফ আলী খান এবং বিশ^নাথ ঘোষ। রেফারি ভারত চন্দ্র গৌড় কোন দ্বিধা ছাড়াই ফাউলের বাঁশি বাজান এবং পেনাল্টির নির্দেশ দেন। আহত সবুজ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আবারও মাঠে ফেরেন এবং পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। তার নেয়া উঁচু শটটি ঝাঁপিয়ে পড়েও ফেরাতে পারেননি মোহামেডানের গোলরক্ষক মোঃ নেহাল (১-০)। বাকি সময়টায় গোল শোধের জন্য মরিয়া মোহামেডান প্রচ- চাপ সৃষ্টি করে বারিধারার গোলমুখে। কিন্তু বারিধারার রক্ষণদুর্গ ভাঙ্গতে না পারায় খেলা শেষ হলে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে মোহামেডান।
×