অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরকে ঘিরে বাংলাদেশ আসলে কতটা লাভবান হচ্ছেÑ তা নিয়েই এখন চলছে জোর আলোচনা। ঢাকায় মিস্টার জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে দু’দেশের সম্পর্ক এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বলে জানানো হয়। কিন্তু চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তাকে অসম বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা। খবর বিবিসি।
বাংলাদেশে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরে কোটা ফ্রি এবং ডিউটি ফ্রি রফতানির সুবিধা চেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। চীনে বাংলাদেশ এক বিলিয়ন ডলারের নিচে রফতানি করে। আর বিপরীতে চীন করে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, চীন বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। কিন্তু দেশটির সঙ্গে এই বাণিজ্যকে অসম সম্পর্ক উল্লেখ করে জিল্লুর রহমান বলেন, এখানে সমতা আনতে হলে শুধু বাংলাদেশের রফতানি বাড়িয়ে হবে না। চীনের নিজস্ব যেসব শিল্প তারা বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে সেগুলো যদি বাংলাদেশে আনা যায় এবং সেগুলো আবার রফতানি করা যায় তাহলে সেটি হবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে সমতা আনার কৌশল। দু’দেশের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী চীন বাংলাদেশকে ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ দেবে বিভিন্ন খাতে। এর বেশিরভাগই অবকাঠামো খাতে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দু’দেশের মধ্যে ২৬টি নানা ধরনের চুক্তি এবং সমঝোতা হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে চীন আলাদাভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে ভাবার কি সুযোগ আছে? এমন প্রশ্নে মিস্টার রহমান বলেন, বৈশ্বিক ও কৌশলগতভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। চীনের দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকা এখনও অনুন্নত। কারণ সমুদ্রে তাদের যোগাযোগ সীমাবদ্ধ। এখানে চট্টগ্রামের মাধ্যমে বন্দর সক্ষমতা বাড়লে চীনেরও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা বাড়বে।
তবে এ সফরে প্রথম অর্জন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গুরুত্বের বিষয়টি বিশ্বে আরেকবার উপস্থাপিত হলো। এমনটাই মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তবে চীনের যে বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো তা আসলে বাংলাদেশের প্রয়োজন মাথায় রেখে নেয়া হয়েছে কি-না, সেটিও দেখতে হবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি কর্ণফুলীর নিচ দিয়ে টানেল তৈরির প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। তার মতে, এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো।