ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

যাত্রীবান্ধব নয় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ের সরকারী নৌযান

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১১ অক্টোবর ২০১৬

যাত্রীবান্ধব নয় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ের সরকারী নৌযান

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) যাত্রীবাহী নৌযান ‘মধুমতি’ ও ‘বাঙ্গালী’র এক একটির নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা। তারপরেও জাহাজগুলো যাত্রীবান্ধব না হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। অথচ ঢাকা-বরিশাল রুটের বেসরকারী কোম্পানিগুলো এরচেয়ে অর্ধেকেরও কম টাকায় লঞ্চ নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছে। ফলে বিআইডব্লিউটিসির জাহাজ নির্মাণে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রবিবার (৯ অক্টোবর) বিআইডব্লিউটিসির যাত্রী পরিবহনের সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ তথ্য তুলে ধরেছেন। বক্তারা আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিসি যাত্রীবাহী নৌযানগুলো যুগোপযোগী নয়। বেসরকারী নৌযানের তুলনায় বিআইডব্লিউটিসির জাহাজের ভাড়া অনেক বেশি। অন্যদিকে যাত্রীসেবার মান প্রশ্নবিদ্ধ। ফলে যাত্রীরা বিআইডব্লিউটিসির নৌযানে ভ্রমণ করতে আগ্রহী হারিয়ে ফেলেছেন। মতবিনিমনয় সভায় জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) মোঃ শহীদুল ইসলাম। বরিশালের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার প্রতিনিধিরা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় মতামত প্রদানকারী সকল বক্তা ঢাকা-বরিশাল-মোরেলগঞ্জ রুটে চলাচলকারী স্টিমারের মান নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন। তারা বলেন, একই রুটে চলাচলকারী বেসরকারী লঞ্চগুলোর নির্মাণ করা কাঠামো পুরোপুরি আধুনিক ও যাত্রীবান্ধব। অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিসি সম্প্রতি ‘বাঙ্গালী ও মধুমতি’ নামক দুটি জাহাজ নির্মাণ করেছে, যা গোডাউনের সাথে তুলনা করা যায়। ফলে যাত্রীরা এ জাহাজ দুটি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। অর্ধশতাধিক বছরের পুরনো জাহাজ অস্ট্রিচ, মাহসুদ, লেপচাসহ অন্য জাহাজগুলোও যথাযথভাবে সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে একসময়ে যারা স্টিমারে ভ্রমণ করতেন এখন তারা বেসরকারী লঞ্চে ভ্রমণ করছেন। বক্তারা অসংখ্য যাত্রীদের অভিযোগের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেন, স্টিমারে প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয়। কেবিনের দায়িত্বরত কর্মচারীরা যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার প্রতি বিন্দুমাত্র খেয়াল রাখেন না। এক সময়ে স্টিমারের নিয়মিত যাত্রী ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন রূপক বলেন, স্টিমারের টিকেট বিক্রির জন্য ‘সহজ’ নামক একটি অনলাইন সার্ভিসের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিআইডব্লিউটিসি। সেখান থেকে টিকেট পান না যাত্রীরা। মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারী সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ স্থানীয় স্টিমার অফিস থেকে হাতেহাতে টিকেট পাওয়ারও দাবি করেন। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির স্বত্ব¡াধিকারী সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, মধুমতি ও বাঙ্গালী জাহাজের এক একটির নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা।
×