ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসিক এলাকায় শিল্প-কারখানায় ঝুঁকি বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ২ অক্টোবর ২০১৬

আবাসিক এলাকায় শিল্প-কারখানায় ঝুঁকি বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে সম্প্রতি টঙ্গীর একটি কারখানায় অগ্নিকা-ে অন্তত ৩৯ জন শ্রমিক নিহত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, সে কারখানাটিতে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় আগুন ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। এ অগ্নিকা-ে আশপাশের কয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন শিল্প কারখানার পাশে বসবাসের ঘর-বাড়ি তৈরি করা এবং আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদামসহ ঝুঁকিপূর্ণ ছোটখাটো শিল্প গড়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতি জনজীবনের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে। খবর বিবিসি। টঙ্গির বিসিক শিল্প এলাকা ঘেঁষে পূর্ব আরিচপাড়া মহল্লা। এখনকার অধিকাংশ বাড়ি টিনের তৈরি। এ বাড়িগুলোর পাশেই অনেক শিল্প-কারখানা দেখা যাচ্ছে। এ শিল্প-কারখানাগুলোর অনেক কাঁচামাল এ এলাকায় রাখা হয়। সম্প্রতি টাম্পাকো কারখানায় অগ্নিকা-ের পর এ এলাকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আরিচপাড়ার বাসিন্দা শাহিনুর আক্তার বলছেন, শিল্প-কারখানার পাশেই তার বাড়ি হওয়ায় যে কোন সময় দুর্ঘটনা নিয়ে তিনি আতঙ্কে থাকেন। তিনি বলছেন, টাম্পাকো কারখানায় বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকা- তার মনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। শাহিনুর আক্তার বলেন, ‘এখানে শিল্প এলাকা হওয়ার আগেই আমাদের বাড়ি ছিল। শিল্প এলাকা হইছে পরে। এখন আমরা কোথায় যাব? আমাদের পুরা এলাকায় কেমিক্যালের গুদাম আছে।’ শিল্প-কারখানার পাশেই বাড়ি হওয়ায় এক সময় অনেকে বেশ খুশি হয়েছিলেন। দুর্ঘটনা নিয়ে কোন চিন্তা কারও মাঝেই ছিল না। যারা ভাড়া থাকেন তারাও এসব বাড়িকে সুবিধাজনক হিসেবেই মনে করতেন। আর যারা বাড়ির মালিক তারা বেশি ভাড়া পাওয়ায় বেশ খুশি ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা সামিউল ইসলাম বলছেন, টাম্পাকো কারখানায় অগ্নিকা-ের আগে এ বিষয়গুলো নিয়ে তাদের মাঝে কোন চিন্তা ছিল না। সামিউল ইসলাম বর্ণনায়, ‘আতঙ্ক তো ইদানিং হচ্ছে। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে? কারখানার পাশে বাড়ি থাকায় আমাদের সুবিধা আছে। কিন্তু একই সঙ্গে আতঙ্কও আছে।’ যেসব জায়গা শিল্প এলাকা হিসেবে স্বীকৃত, শুধু সেসব জায়গা ঘেঁষেই যে বাড়ি ঘর আছে তা নয়। ঢাকা শহরের ভেতরে আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত বহু জায়গায় বাড়ির নিচে কিংবা জনবসতি ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের ছোটখাটো শিল্প। এসব জায়গায় কোন দুর্ঘটনা হলে সেটি মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। ঢাকার মিরপুরে কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেল অনেক বাড়ির নিচে নানা ধরনের ছোটখাটো শিল্প গড়ে উঠেছে। যেমন ওয়েল্ডিং কারখানা, গ্যাস কার্টার দিয়ে লোহার পাত কাটার দোকান- আরও নানা ধরনের দোকান। এসব দোকানে যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা বিশেষ করে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলেই তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। মিরপুরের বিশিল এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা যে চিপার ভেতরে থাকি, ভাল একটা রাস্তাও নেই। অনেক টেনশনে থাকি আমরা। উপায় নেই। এখান থেকে কাজে যাওয়া সহজ। এজন্য বাসা ভাড়া নিছি।’ আবাসিক এলাকায় যে কোন ধরনের ছোটখাটো কারখানা- অর্থাৎ যেখান থেকে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হতে পারে, সেগুলো নিয়ে অনেক মানুষের মধ্যেই কোন সচেতনতা নেই। এ ব্যাপারে ভাড়াটিয়াদের বক্তব্য হচ্ছে- এ নিয়ে তাদের কোন করনীয় নেই।
×