ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের হতাশার ড্র

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বার্সিলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের হতাশার ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও জয়ের দেখা পায়নি দুই স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা। বুধবার রাতে স্প্যানিশ লা লিগায় দু’দলই আলাদা আলাদা ম্যাচে প্রতিপক্ষের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রথমে মাঠে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা আগের চার ম্যাচেই দাপুটে জয়ের স্মৃতি নিয়ে খেলতে নামে। ঘরের মাঠে ভিয়ারিয়ালের বিরুদ্ধে অনন্য ইতিহাসের হাতছানি ছিল। আগের ম্যাচে জিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার টানা ১৬ জয়ের রেকর্ডে ভাগ বসায় গ্যালাক্টিকোরা। এই ম্যাচে জিতলেই রেকর্ডটি এককভাবে হতো জিনেদিন জিদানের দলের। কিন্তু সেটা পারেনি তারা। অতিথি ভিয়ারিয়ালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে রিয়াল। এর ফলে টানা ১৭ জয়ের রেকর্ড এককভাবে হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি এবারের লীগে প্রথম পয়েন্ট খুইয়েছে দলটি। টানা চার জয়ের পর জয়রথ থেমে যাওয়ায় হতাশ রিয়াল শিবির। রিয়াল ড্র করায় পরের ম্যাচে বার্সিলোনার সুযোগ ছিল জয় দিয়ে তাদের কাছাকাছি আসার। কিন্তু এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে বাগে পেয়েও জিততে পারেনি কাতালানরা। ঘরের মাঠ ন্যুক্যাম্পে দিয়াগো সিমিওনের দলের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে লুইস এনরিকের দল। ঘটনাবহুল ম্যাচটিতে আবারও ইনজুরি আক্রান্ত হয়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন লিওনেল মেসি। লুইস সুয়ারেজের আঘাতে পায়ের পাতা ফুটো হয়েছে এ্যাটলেটিকোর ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ফিলিপে লুইসের। ড্র করলেও পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রিয়াল। পাঁচ ম্যাচ শেষে গ্যালাক্টিকোদের ভা-ারে সর্বোচ্চ ১৩ পয়েন্ট। চমক দেখিয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সেভিয়া। ১০ পয়েন্ট নিয়ে বার্সা তৃতীয় ও ৯ পয়েন্ট নিয়ে এ্যাটলেটিকোর অবস্থান চার নম্বরে। বার্সার মাঠে এক দশকের মধ্যে প্রথম জয়ের লক্ষ্য থাকলেও এ্যাটলেটিকো শুরু থেকেই খেলে নিজেদের রক্ষণ নির্ভর কৌশলী ফুটবল। যে কারণে বার্সা শুরু থেকেই আক্রমণ করে খেলার সুযোগ পায়। এর ফলও পেয়েছে অতিথিরা। মুহুর্মুহু আক্রমণের ফসল হিসেবে ৪১ মিনিটে ইভান রাকিটিচের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার নিখুঁত ক্রস থেকে দুর্দান্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার। বিরতির পর বড় একটা ধাক্কা খায় লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নারা। চোট পেয়ে ৫৯ মিনিটে মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসি। তার মাঠ ছাড়ার দুই মিনিটের মধ্যে সমতা ফেরায় এ্যাটলেটিকো। ৬১ মিনিটে জেরার্ড পিকের দুই পায়ের ফাঁক গলে আসা বল পান বদলি হিসেবে মাঠে আসা এ্যাঞ্জেল কোরেয়া। দ্রুত এগিয়ে গড়ানো শটে সমতা ফেরান এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। বল পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। ম্যাচের বাকি সময়ে একাধিক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি নেইমার, সুয়ারেজরা। ফলে হতাশার ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বার্সাকে। ম্যাচ শেষে হতাশা লুকিয়ে রাখতে পারেননি কাতালানরা। দলটির কোচ লুইস এনরিকে দাবি করেন, জয় প্রাপ্য ছিল তাদেরই। এনরিকে বলেন, এটাই ফুটবল। এ ধরনের ম্যাচের ফল খুব সূক্ষ্ম বিষয় দিয়ে নির্ধারিত হয়। তারা ভাগ্যবান যে তারা সুবিধাগুলো নিতে পেরেছে। আমরা যেভাবে খেলেছি সেদিক থেকে জয় প্রাপ্য ছিল। আক্রমণভাগে আমরা সেরা দল ছিলাম আর রক্ষণে তারা সেরা ছিল। মেসি মাঠ ছাড়ার পর আমাদের জন্য ম্যাচটি কিছুটা কঠিন হয়ে পড়ে। বার্সিলোনা মিডফিল্ডার ইনিয়েস্তা বলেন, ঘরের মাঠে পয়েন্ট হাতছাড়া হতে দেয়াটা দুঃখজনক। অধিনায়কের মতো একই কথা বলেন সুয়ারেজ। উরুগুইয়ান তারকা বলেন, মাঠ ছাড়ার সময় আমাদের মনে হয়েছে, ম্যাচটি আমরা জিততেও পারতাম। এ্যাটলেটিকোর ডিফেন্ডারদের সঙ্গে লড়াই করা সব সময়ই কঠিন। তিনি আরও বলেন, মেসিকে হারানোটা বাজে ছিল কারণ সে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঘরের মাঠে ড্র করাটাও বাজে ছিল। ভিয়ারিয়ালের বিরুদ্ধে প্রাণভোমরা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে পেয়েও জিততে পারেনি রিয়াল। উল্টো ম্যাচের প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে অতিথিদের পেনাল্টি উপহার দিয়ে হারের শঙ্কা পেয়ে বসে তাদের। অধিনায়ক ব্রুনোর স্পট কিকের গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ভিয়ারিয়াল। তবে বিরতির পর পরই (৪৮ মিনিট) অধিনায়ক সার্জিও রামোস গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান। বাকি সময়ে অনেক সহজ সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হন রোনাল্ডোরা। যে কারণে রেকর্ড টানা ১৭ জয় না পাওয়ার আফসোসে মাঠ ছাড়তে হয় গ্যালাক্টিকোদের।
×