ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল ॥ ঢাকা আবাহনী ৩-০ মোহামেডান

মর্যাদার লড়াইয়ে আবাহনী হারাল মোহামেডানকে

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মর্যাদার লড়াইয়ে আবাহনী হারাল মোহামেডানকে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানোর আনন্দই আলাদা। সেই আনন্দেই মাতোয়ারা হলো জর্জ কোটানের শিষ্যরা। ‘জেবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে ঢাকা আবাহনী ৩-০ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডকে। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে (রাতের ম্যাচ) বিজয়ী দল খেলার প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল ১-০ গোলে। শেষ তিন মিনিটে দুই গোল। এ যেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের মতো অবস্থা। দারুণ উপভোগ্য খেলা উপহার দেয় আবাহনী। জেতে প্রাধান্য বিস্তার করেই। যদিও শুরুতে সমানতালেই খেলে মোহামেডান। ১৮ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে ইংলিশ ফরোয়ার্ড লি টাকের ক্রস বক্সে রিসিভ করে শট নেন মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস। বল বিপদমুক্ত করে দলকে বাঁচান মোহামেডানের গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহাল। ২৬ মিনিটে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে মাটিতে ঝাঁপিয়ে পড়া আগুয়ান গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে কৌনিক শট নেন হেমন্ত। তার শটটি পোস্টে লেগে জালে চলে গেলে এগিয়ে যায় আবাহনী (১-০)। ৬৬ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে চমৎকার শট নেন আবাহনীর নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা। বাঁ পায়ে উঁচু শট নেন তিনি। কিন্তু তা পোস্টের বাইরে দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৭৬ মিনিটে জুয়েল রানার পাসে সানডের প্লেসিং শট অল্পের জন্য গোল হয়নি। ৭৯ মিনিটে মোহামেডানের ক্যামেরুনের মিডফিল্ডার জেকু প্যাট্রিসের শট ফিরিয়ে দেন আবাহনীর গোলরক্ষক সুলতান আহমেদ শাকিল। ৮৭ মিনিটে মাঝমাঠ তীব্র শট নেন লি টাক। কিন্তু মোহামেডান গোলরক্ষক বল ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। ৮৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আবাহনী। শাহেদের থ্রুতে বল পেয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে ঢুকে জোরালো শটে বল জালে পাঠান সানডে (২-০)। ইনজুরি টাইমে বক্সে ঢুকে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে মোহামেডানের হারের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকেন লি টাক (৩-০)। এই হারে বলা যায় প্রতিশোধ নিল আবাহনী। কেননা, গত লীগে মোহামেডানের কাছে তারা হেরেছিল ১-০ গোলে। ফিরতি মোকাবেলায় করে গোলশূন্য ড্র। আর সার্বিকভাবে লীগের হেড টু হেডে আবার এগিয়ে আছে আবাহনীই। পেশাদার লীগ চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত উভয় দল মুখোমুখি হলো ২০ বার। আবাহনী জিতেছে ৬ বার, মোহামেডান ৪ বার। বাকি ম্যাচগুলো ড্র হয়। ১২ দলের মধ্যে মোহামেডান দশ নম্বরে, তার ওপর একটি ম্যাচেও তাদের কোন জয় নেই। বুধবারের খেলায় তারা প্রচুর গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে। নষ্ট করেছে আবাহনীও। কিন্তু সেগুলোর তিনটি তারা কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করে। ম্যাচে তুলনামূলক বেশি নিয়ন্ত্রণ বা প্রাধান্য বেশি ছিল তাদেরই। দলের অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান এ নিয়ে বিস্তর পরিশ্রম করলেও তার শিষ্যরা মাঠে তার যথাযথ প্রয়োগ করতে পারেনি। এ জয়ে চলমান লীগে নিজেদের অপরাজিত থাকার কৃতিত্বকে ধরে রাখতে সক্ষম হলো আবাহনী (তাদের মতো অপরাজিত আছে শেখ জামাল ধানম-ি এবং রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিও)। চলমান লীগে দুই দলের দুই রকম অবস্থা। ১২ বারের লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান পয়েন্ট টেবিলে আছে ১২ দলের মধ্যে দশম অবস্থানে। পয়েন্ট মাত্র ৫। আর ৭ খেলার একটিতেও জিততে পারেনি দলটি। ড্র করেছে পাঁচ ম্যাচে। হেরেছে ২ ম্যাচে। ১১ বারের লীগ শিরোপাধারী ঢাকা আবাহনীর ৭ খেলায় পয়েন্ট ১৫। জিতেছে ৪ ম্যাচে। ড্র করেছে ৩ ম্যাচে। এখনও হারের স্বাদ পায়নি তারা। পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থ থেকে এক লাফে উঠে এসেছে শীর্ষ অবস্থানে। তাদের মতো সমান পয়েন্ট শেখ জামাল ধানম-িরও। তবে গোল তফাতে এগিয়ে থাকায় আবাহনীই (+৭, শেখ জামালের +৬)।
×