ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রেকর্ড গড়ে পাকিস্তানকে লজ্জায় ডোবাল ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রেকর্ড গড়ে পাকিস্তানকে লজ্জায় ডোবাল ইংল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ট্রেন্টব্রিজে পাকিস্তানী বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলে খেলাই করলেন এ্যালেক্স হেলস-জস বাটলররা। সৌজন্যে মঙ্গলবার তৃতীয় ম্যাচে নির্ধরিত ৫০ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৪৪ রান করে ওয়ানডে ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড গড়ল ইয়ন মরগানের ইংল্যান্ড। এতদিন যেটি ছিল শ্রীলঙ্কার দখলে, ৪৪৩/৯- ২০০৬ সালে হল্যান্ডের বিপক্ষে। জবাবে ৪২.৪ ওভারে ২৭৫ রানে অলআউট আজহার আলির পাকিস্তান হারে ১৬৯ রানে বড় ব্যবধানে। ৪২ বছরে ইংলিশদের মাটিতে ওয়ানডেতে সিরিজ জেতেনি পাকিরা! লজ্জার ম্যাচে সান্ত¡না ২৮ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেছেন ‘বোলার’ মেহাম্মদ আমির। যা ১১ নম্বরে নামা কোন ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। নিজ দেশের হয়ে রেকর্ড সর্বোচ্চ রানের (১২২ বলে ১৭১) ইনিংস উপহার দিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ইংল্যান্ড ওপেনার হেলস। টস জিতে ব্যাটিং নেয়া ইংল্যান্ড দলীয় ৩৩ রানেই জেসন রয়ের (১৫) উইকেট হারায়। এরপরই তা-বের শুরু, যাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন হেলস। ১২২ বলে ২২ চার আর ৪ ছক্কায় ১৭১ রান করে আউট হন তিনি। গড়েন ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। এতদিন যেটি ছিল রবিন স্মিথের দখলে। সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান ১৯৯৩ সালে এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন অপরাজিত ১৬৭ রানের ইনিংস। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বের যেকোন ব্যাটসম্যান হিসেবে ধরলে হেলসের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৮৩ রান নিয়ে সেখানে এগিয়ে বিরাট কোহলি, ঢাকায় ২০১২ সালে। এরপর তা-ব চালিয়েছেন বাটলার (৫১ বলে ৯০*) আর সেনাপতি মরগান (২৭ বলে ৫৭*)। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাত্র ১২ ওভারে অবিচ্ছিন্ন ১৬১ রান যোগ করেন দু-জনে! আর ফেরার আগে ৮৫ রান করেন জো রুট। সবচেয়ে বড় ঝড়টা গেছে ওয়াহাব রিয়াজের ওপর দিয়ে। ১০ ওভারে ১১০ রান দিয়ে পাকিস্তানের হয়ে খরুচে বোলিংয়ের লজ্জার রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন তিনি। অপর দুই পেসর হাসান আলি আর আমির দিয়েছেন ৭৪ ও ৭২ রান! ৪৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে রনমে আসলে দলে এ্যালেক্স হেলসের মতো কাউকে খুঁজে পেতে হতো পাকিস্তানের। শেষ ব্যাটসম্য্যান আমিরই যা একটু বিনোদন দিয়েছেন। ১১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আমির নামেন, দলের রান ১৯৯। আমির নেমে কিছুক্ষণ ঠুকঠুক করছিলেন, একটু পরেই বুঝতে পারলেন ম্যাচের এমন পরিস্থিতিতে এসবে কিছু যায় আসে না। ষষ্ঠ বলে চার মেরে শুরু করলেন, ২৮তম বলে ক্রিস ওকসের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন। এর মাঝেই আরও ৪ চার ও ৪ ছক্কা মারা হয়ে গেছে তার। এর মধ্যে আদিল রশিদকে টানা তিন বলে ছক্কা মেরে ২২ বলেই ৫০ ছুঁয়েছেন। টানা তিন ছক্কার দ্বিতীয়টিতেই বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছেন আমির। ২০০৩ সালে কেপটাউনে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই পাগুলে এক ইনিংসে ১৬ বলে ৪৩ রান করেছিলেন শোয়েব আখতার! কাল সে রেকর্ড ভেঙ্গে ৫৮ করেছেন আমির। ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। তবে এই রেকর্ড শুধু ব্যক্তিগত অর্জনের সান্ত¡না হয়েই থাকবে। ইনিংসের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি শাজিল খানের (৫৮)। এছাড়া সরফরাজ আহমেদ ৩৮, মোহাম্মদ নাওয়াজ ৩৪, ওয়াহাব রিয়াজ ১৪ ও ইয়াসির শাহর ২৬ রানের ইনিংস পরাজয়ের ব্যবধানটাই কেবল কমিয়েছে। ৪৪.৪ ওভারেই শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে দারুণ বল করেছেন ক্রিস ওকস। ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। আদিল রশিদ ২ উইকেট। পাশাপাশি মার্ক উড, লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট, বেন স্টোকস ও মঈন আলি ১টি করে উইকেট পেয়েছেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে গত ৪২ বছর ধরে ওয়ানডেতে সিরিজ জেতা হয়নি পাকিস্তানের। সর্বশেষ ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান ইংল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে সিরিজ হারিয়েছিল। মজার বিষয়, সেটাই ছিল ইংল্যান্ডে পাকিস্তানের প্রথম সিরিজ। প্রথম সিরিজেই ২-০ ব্যবধানে জয়। অথচ এরপর আরও নয় সিরিজ থেকে এবারও জেতেনি পাকিরা।
×