ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এক হাজার ফায়ার ফাইটার মোটরসাইকেল দিচ্ছে চীন

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২৩ আগস্ট ২০১৬

এক হাজার ফায়ার ফাইটার মোটরসাইকেল দিচ্ছে চীন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহারের জন্য এক হাজার ফায়ার ফাইটার মোটরসাইকেল দিচ্ছে চীন। অনুদান হিসেবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে এসব মোটরসাইকেল দেয়া হবে। শহরাঞ্চলের ভেতরে বেশিরভাগ রাস্তাই অপ্রশস্ত। বস্তি ও অলিগলিতে আগুন লাগলে দ্রুত ঘটনাস্থলের কাছাকাছি গিয়ে ওয়াটার মিস্ট ফায়ার মোটর নামের এসব মোটরসাইকেল আগুন নেভাতে কাজ করবে। এ সংক্রান্ত একটি বিনিময় পত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন এবং চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার গাও ইয়ান। উভয় দেশের মধ্যে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক শেষে এ চুক্তি সই হয় বলে জানান মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন। বৈঠকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ানোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিনটি গুরত্বপূর্ণ ইস্যুকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের ১৪তম বৈঠক। ইস্যুগুলো হলোÑ বাণিজ্য ঘাটতি, বিনিয়োগ ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন এবং চীন সরকারের পক্ষে সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার গাও ইয়ান। মেজবাহ উদ্দিন জানান, বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি কিভাবে কমানো যায় তা নিয়ে উভয় দেশেই আলোচনা হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বর্তমান ৪ হাজার ৭০০ পণ্যের শুল্কমুক্ত (ডিউটি ফ্রি) সুবিধার বাইরে আরও ১৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা চাওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৭৪০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ৬৮০ কোটি ডলার এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫৮৬ কোটি মার্কিন ডলার। বৈঠকে চীনে বাণিজ্যমেলা করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ব্যাপক আগ্রহী হলেও বিনিয়োগের পরিবেশ, জ্বালানি সরবরাহে নিশ্চয়তা এবং জমি অধিগ্রহণের সমস্যার সমাধান চেয়েছে। চীন এ দেশে শুধু সহজশর্তে ঋণ দেয়া নয়, তারা সরাসরি বিনিয়োগকারী হিসেবে আসতে চায় এবং নির্দিষ্ট অংশের ইক্যুইটি সরবরাহ করেও বিনিয়োগ করতে চায়। বাংলাদেশে একটি এ্যাপারেল জোন স্থাপন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। এছাড়া বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা সহজীকরণ ও দীর্ঘমেয়াদী ভিসা প্রদানের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প এবং আগামীতে হাতে নেয়া প্রকল্পগুলো সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। শীঘ্রই পাঁচ-ছয়টি প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈঠকে দু’দেশের নেতাদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কিত ঐকমত্যের বিষয়সমূহ বাস্তবায়ন পর্যালোনাসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে চীনা সহায়তা জোরদারকরণের বিষয়, প্রধান প্রকল্পসমূহে সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও বিনিময় সহযোগিতা শক্তিশালীকরণসহ শিল্পাঞ্চলের উন্নয়নে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ হতে চীনা অনুদান এবং নমনীয় ঋণ বৃদ্ধির বিষয়ে চীনা পক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়াও দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান বাণিজ্য অসমতা একটি যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের তরফে অনুরোধ জানানো হয়।
×