ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খন্দকার মাহবুবুল আলম

সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১৮ আগস্ট ২০১৬

সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই

সন্ত্রাস-জঙ্গী দমনে সংস্কৃতির ভূমিকা অপরিসীম। এর জন্য গান-কবিতা, নাটক সর্বোপরি সুন্দর-সাবলীল সংস্কৃতি বা সাংস্কৃতিক চর্চার দরকার, সেখানে জঙ্গীবাদ ভীষণ অসুন্দর। সংস্কৃতি নির্মমতা, ঘৃণা-বিদ্বেষ এবং মানুষ খুনের মতো অমানবিকতার বিপক্ষে। সংস্কৃতিবান মানুষ নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন ও মানবিক হয়ে গড়ে ওঠে। তারা কখনও বিশ্বাসপ্রবণ কোন ভাবাদর্শে সন্ত্রাসী জঙ্গী হয়ে ওঠে না, কারণ সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে মলিনতা ছেড়ে সুন্দর জীবনবোধ গড়ে ওঠে। গভীরভাবে অনুধাবন করলে এর বাস্তবতা লক্ষ্য করা যায়। শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি মানুষের মধ্যে হিংসার উম্মত্ততা সৃষ্টি করে না। প্রেম-ভালবাসা মানবতা ইত্যাদি গুণই হচ্ছে শিল্প-সাহিত্যের মূল উপজীব্য। নাটক-সিনেমা (কতিপয় অশ্লীলতা ব্যতীত) ও গান হচ্ছে মানুষের জীবনবোধকে গড়ে তোলার মাধ্যম। বড় পর্দায় সিনেমা হলগুলোতে ছবি প্রদর্শন এখন আগের মতো নেই। সামাজিক ছবিগুলো দেখে মানুষ মানবিক হতো। সন্ত্রাসী জঙ্গী হওয়ার সুযোগ ছিল না। যা এখন নেই। যারা গান-কবিতা-ফুল ও শিশুদের ভালবাসে না তারা এক পর্যায়ে হিংস্র হয়ে ওঠে। তারাই কোন শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক বা সংস্কৃতিবান মানুষ খুনের মতো জঘন্য অপরাধ করে থাকে। কারণ সংস্কৃতিবানরা কাউকে শত্রু মনে করেন না, সবাই তাদের বন্ধু। মতের অমিল হলেও কাউকে শত্রু ভাবেন না। সেই শিক্ষা না নিয়ে নিছক যুক্তিহীন বিশ্বাস প্রবণতায় গড়ে উঠলে সেক্ষেত্রে জঙ্গী না হয়ে উপায় নেই। তাদের বাস করতে হয় অন্ধকার রাজ্যে। গোটা মানব সভ্যতা ধ্বংসের জন্য এরকম বিশ্বাসপ্রবণ জঙ্গীই যথেষ্ট। পারিবারিক সচেতনতাও এক্ষেত্রে বিশেষভাবে দরকার। যেসব তরুণ-যুবক ধর্মের নামে জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে তারা কোমলমতি নিষ্পাপ শিশুদের কথা ভাবেন কি? আজ এ কথা বোঝার সময় এসেছে যুক্তিনির্ভর জ্ঞানানুশীলন শিক্ষা-সাহিত্য সংস্কৃতি আমাদের নিছক প্রাণীর স্তর থেকে বৈষম্যহীন ও মানবিক মূল্যবোধে উন্নীত করতে পারে। এ সত্যটি ভুলে গেলে মানব সভ্যতা হুমকির মুখে পড়তে পারে। লক্ষ্য করা গেছে এক সময় শিক্ষা-সাহিত্য ও সংস্কৃতির অবাধ চর্চা ছিল। তখনকার তরুণ-যুবকরা নিজেদের বিকশিত করতে পেরেছে। যদ্দূর মনে পড়ে আশির দশকের শুরু থেকে এসব ক্ষেত্রে এক-আধটু করে ভাটা পড়তে থাকে। ফলে আজকের জঙ্গীবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলা জরুরী। চট্টগ্রাম থেকে
×