ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুকের সাতকাহন

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৫ আগস্ট ২০১৬

ফেসবুকের সাতকাহন

পছন্দ করুন আর নাই করুন, ফেসবুক ছেড়ে যাবেন কোথায়? ইন্টারনেটের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর প্রভাব বিস্তৃত। এমনকি চীন, যেখানে ফেসবুক নিষিদ্ধ সেখানেও ৩০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক তাদের খবরাখবর গোপনে ফেসবুক থেকেই সংগ্রহ করেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুকের রয়েছে চাঞ্চল্যকর কিছু মজার গল্প। ফেসবুক নিয়ে চাঞ্চল্যকর কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য! প্রথমমুখ আল প্যাচিনো সাইটের একটি প্রাথমিক পুনরাবৃত্তি ছিল বাইনারি কোডের আড়ালে লুকানো লিপিচিত্রে একটি মানুষের মুখ দেখানো। প্রথম প্রথম মানুষটির পরিচয় স্পষ্ট ছিল না। কিন্তু পরে দেখা যায়, তিনি আর কেউই নন, বিখ্যাত অভিনেতা আল প্যাচিনো! প্রথম বিনিয়োগকারী পিটার থিয়েল ‘পেপ্যাল’রসহ-প্রতিষ্ঠাতা পিটার থিয়েল ফেসবুকের প্রথম উৎসাহদাতা ও উদ্যোক্তা। তিনিই প্রথম পুঁজিবাদী বিশ্বে এ সাইটের অপার সম্ভাবনা দেখেছিলেন। থিয়েল ২০১৪ সালে প্রাথমিকভাবে নতুন এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন পাঁচ লাখ ইউএস ডলার। পরবর্তীতে নিজস্ব বিনিয়োগ কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন। যার মূল্য ছিল এক বিলিয়ন ডলারের ওপরে। পুনরায় ফেসবুকের নামকরণ বিলুপ্ত গানের শেয়ারিং সাইট ‘ন্যাপ্সটার’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফেসবুকের ডোমেইন নেম দুই লাখ মার্কিন ডলারে কিনে নেন। পুনরায় সাইটের নামকরণের ক্ষেত্রে পার্কার ছিলেন মূল চালিকাশক্তি। মূলত তার প্রভাবেই সাইটের জনপ্রিয়তা হু হু করে বেড়ে যায়। পিয়ার টু পিয়ার শেয়ারিং পরিচিতদের সঙ্গে ওয়ারহাগ পিয়ার টু পিয়ার (চ২চ) শেয়ারিং ব্যবস্থা ছিল ফেসবুকের একটি মূল কাজ। যখন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখে পৌঁছায় তখন মার্ক জুকারবার্গ এপি টু পি ফাইল শেয়ারিং পদ্ধতি চালু করেন। মনে করা হতো, এটি হয়ত কেন্দ্রীয় উপাদানে পরিণত হবে। কিন্তু বিধিবাম! ২০০৬ সালে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের আশঙ্কায় ওয়ারহাগ বাতিল হয়ে যায়। জুকারবার্গ বর্ণান্ধ! লাল-সবুজ বর্ণান্ধতায় ভুগছেন মার্ক জুকারবার্গ। আর এ জন্যই ফেসবুকের মূল রঙ নীল। নীল হচ্ছে বিশ্বাস ও সুরক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত একটি রঙ। আর এ বিশ্বাস ও সুরক্ষা মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণের জন্য একদম অপরিহার্য। অসাম বাটনের পরিবর্তে লাইক বাটন শুরুর দিকে ফেসবুকের প্রকৌশলী এ্যান্ড্রু বসওয়ার্থ ও অন্যান্য প্রকৌশলীরা ‘লাইক’ বাটনের পরিবর্তে ‘অসাম’ বাটনের প্রতি উৎসাহী ছিলেন। কিন্তু জুকারবার্গ ভেটো দিলে ২০০৭ সালে ‘অসাম’ (অবিংড়সব) বাটনের পরিকল্পনাটি বাতিল হয়ে যায়। এরপর সাইটটিতে ‘লাইক’ বাটন স্থায়ী হয়। ব্যবহারকারীদের তথ্য জমা ফেসবুক নিজস্ব সার্ভারে ব্যবহারকারীদের প্রায় ৩০০ পেটাবাইট পর্যন্ত তথ্য জমা রাখে। এক পেটাবাইট হচ্ছেÑ এক মিলিয়ন গিগাবাইটের সমান। সৃষ্টির আদিকাল থেকে ল্যাটিন ও অন্যান্য ঐতিহাসিক ভাষাসহ প্রতিটি প্রচলিত ভাষায় মানব জাতির সমগ্র লিখিত সাহিত্য সব মিলিয়ে প্রায় মাত্র ৫০ পেটাবাইট ধারণ করবে। সেখানে ৩০০ পেটাবাইট বেশ অবাক করার মতোই ব্যাপার বটে! অর্থনীতিতে ফেসবুকের প্রভাব ২০১৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে ফেসবুকের প্রভাব ছিল প্রায় ২২৭ বিলিয়ন ইউএস ডলার। এ পরিসংখ্যানের পর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ফেসবুকের কাছে। বাড়ছে ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতি ১৫ মিনিটে ৭ হাজার ২৪৬ জন করে বাড়ছে। সমালোচকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ফেসবুকের মৃত্যু আসন্ন। কিন্তু এসব গুজব একপাশে সরিয়ে জনপ্রিয়তার প্রায় প্রলয়সীমা অতিক্রম করে চলেছে সামাজিক যোগাযোগের বিশাল এ মাধ্যমটি। বেড়েছে বিজ্ঞাপনের আয় ২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট বিজ্ঞাপনের আয় বেড়েছে ২২ শতাংশ। এর অর্থ, প্রতিবছর মোবাইল ইন্টারনেট বিজ্ঞাপনের আয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশই অর্জন করছে ফেসবুক নিজেই। মুমিতুল মিম্মা
×