ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু

এ সময়েও লেহাঙ্গা

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৯ জুলাই ২০১৬

এ সময়েও লেহাঙ্গা

বৃষ্টির শব্দ আর জলমগ্ন রাস্তাঘাট বার বার মনে করিয়ে দেয় সময় এখন ঋতুরানী বর্ষার। চলতে চলতে হঠাৎ কদমের সুঘ্রান মনকে যেন আন্দোলিত করে তোলে। মনের অজান্তেই যেন গান বের হয়ে আসে আজি ঝড়ো ঝড়ো মুখর বাদর দিনে.. আর এ সময়টাতে চলে নিজেকে হঠাৎ বৃষ্টি থেকে রক্ষার প্রস্তুতি। পোশাক আশাক সাজ সজ্জায় অন্য রকম ছোঁয়া লেগে যায়। চলা ফেরা সব কিছুতেই আবহাওয়ার চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে। যে কারনে বাধ্য হয়েই পরিবর্তিত হয় দৈনন্দিন চলাফেরা এবং যাপিত জীবন। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে সব কিছুতেই আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রস্তুতি নেয়া হয়। পরিবর্তনের এ তালিকায় পোশাক অন্যতম। অর্থাৎ সময়োপযুগী আরামদায়ক পোশাকের দিকে নজর সবার। কারন পোশাক যদি আরামদায়ক না হয় তাহলে আনন্দটাই মাটি হবে। সৃষ্টি হবে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির। অতএব আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পোশাক না পরলে অস্বস্থিকর অবস্থার মধ্যে পরতে হয় ফ্যাশন হাউসগুলো এ ব্যাপারে অগ্রনী ভূমিকা পালন করছে। একটা সময় ছিল যখন এদেশের মানুষ উৎসব কিংবা বড় কোন অনুষ্ঠান ছাড়া ফ্যাশন হাউসগুলোতে ভীর জমাতো না। তবে প্রেক্ষাপট অনেকটাই বদলে গেছে। বাঙ্গালী এখন ফ্যাশন সচেতন জাতি হিসেবে স্বীকৃত। ঋতু ভিত্তিক পোশাক এখন ফ্যাশন ট্রেন্ডের পরিচিত রুপ। কোন ঋতুর সঙ্গে কোন পোশাকটি মানানসই তা নিয়ে রীতিমতো গবেষনা করা হয়। আর হবেই বা না কেন। বিশ্ব ফ্যাশন ট্রেন্ডের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে এদেশের ফ্যাশন জগত। আর এ পথ চলায় ফ্যাশন হাউসগুলোও অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে। ফ্যাশন হাউস গুলো সবসময় সচেষ্ট থাকে ক্রেতাদের রুচি ও চাহিদা মোতাবেগ পোশাক সরবরাহ করতে। যখন যে ঋতু বা উপলক্ষ্য সামনে এসে দাড়ায় সে ঋতু কিংবা উপলক্ষ্য নিয়েই অগ্রিম প্রস্তুতি সেরে ফেলে তারা। যে কারনে সাধারন মানুষদেরও নিত্য নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ডের সঙ্গে পরিচিত হতে সময় লাগে না। ফ্যাশন হাউসের বদৌলতে ঋতু ভিত্তিক পোশাকের অগ্রিম খবর পেয়ে যায়। যার ফলে ঋতু ভিত্তিক পোশাকের প্রস্তুতি আগে থেকেই সেরে রাখা যায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে এসব পোশাক শুধু গতানুগতিক ধারাতেই থাকেনা বরং নিত্য নতুন ফ্যাশন যোগ করা হয়। অনেক সময় পুরোনো কিছু ফ্যাশনকে নতুন রুপদান করে আরও বেশি আধুনিক করে তোলা হয়। তেমনি নতুন এবং পুরাতন ডিজাইনের সংমিশ্রনের একটি পোশাক বর্তমান তরুনিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পোশাকটি হচ্ছে লেহাঙ্গা। নব্বই দশকে লেহাঙ্গা ফ্যাশনের তুঙ্গে ছিল। তবে সেই লেহাঙ্গ এই লেহাঙ্গা থেকে একটু ভিন্ন। তখনকার লেহাঙ্গা জরি কিংবা ভারি কাজের সমন্বয়ে কোমরের নিচ থেকে ঘাঘড়া মতো করে বড় একটা রাউন্ড শেপ ছিল। অনেক সময় লেসফিতা দিয়ে ডিজাইন করা হতো। আলাদা করে দুটো পার্ট থাকতো। উপরের টপসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই নিচের ঘাঘড়ার ডিজাইন করা হতো। দীর্ঘদিন ঘাঘড়া তরুনীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল। বেশ কিছুদিন ঘাঘড়া ফ্যাশন ট্রেন্ডের বাইরে থাকলেও এখন নতুন রূপে ধরা দিয়েছে তরুনিদের সামনে। ডিজাইনে এসেছে বৈচিত্রতা। এখন আলাদ পার্ট করে ঘাঘড়া তৈরি হয় না। এক ছাটের পাঞ্জাবির মতোই একটা লেহাঙ্গা। এতে যোগ করা হয়েছে কালার এবং ডিজাইনের ভেরিয়েশন। করে তোলা হয়েছে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। এ প্রসঙ্গে বিউটি এক্সপার্ট এবং ফ্যাশন ডিজাইনার আফরোজা কামাল জানান নতুনত্ব বরাবরই মানুষ কে আকৃষ্ট করে। ঘাঘড়ার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। পোশাকটি বাজারে আসার পর থেকেই তরুনিদের কাছে ব্যাপক ভাবে সমাদৃত হয়। পোশাকটি অনেকটা এক ছাটের পোশাকের মতোই। একটা কালার বেজ কাপড়ের উপর ডিজাইন করা হয়ে থাকে লেহাঙ্গা। আর এ সময়টায় ঘাঘড়া বেশ মানানসই। বিশেষ করে স্লিভলেস লেহাঙ্গা। পার্টিতেও অনায়েষে এ লেহাঙ্গা মানিয়ে যায়। ডিজাইনের কোন শেষ নেই। যে যেভাকে সেটাকে রাঙিয়ে তুলতে পারে। অর্থাৎ লেহাঙ্গাটি নিজস্ব ডিজাইনে সমৃদ্ধ করা সম্পূর্নটাই নিজের ব্যক্তিত্বের ওপর নির্ভর করে। আবার রেডিমেট বহু ধরনের ডিজাইনের স্লিভলেস লেহাঙ্গা পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে কাপড়। সাধারনত এই সময়ে ব্যবহার করা হয় সিল্ক. জয়সিল্ক.জর্জেট, লিলেন ও সফট সিল্ক । ডিজাইনেও রয়েছে ভিন্নতা। অর্থাৎ ক্যাজুয়াল, এক্সক্লুসিভ সব ধরনের প্যাটার্নেই পাওয়া যাচ্ছে স্লিভলেস লেহাঙ্গা। যার ফলে ঘরে বাইরে সব জায়গাতেই অনায়েসেই মানিয়ে যায় । ডিজাইন এবং প্যাটার্ন ভেদে একেকটা স্লিভলেস লেহাঙ্গার দাম পড়বে ২৫০০ টাকা থেকে ৭০০০ টাকা পর্যন্ত। যদিও পোশাকটি মাত্র বাজারে আসা শুরু করেছে তার পরেও বিভিন্ন ফ্যাশর হাউসে দেখা মিলবে ঘাঘড়ার। তার মধ্যে আড়ং, আলমিরা, থ্রি উইসেস, ওটু, ওয়ারাহ্ অন্যতম। নতুনকে স্বাগত জানানোর স্পৃহা সবার। যে কারনে নতুন ফরমেটের স্লিভলেস লেহাঙ্গা এখন তরুনিদের প্রথম পছন্দের পোশাক। যা ফ্যাশন ট্রেন্ডে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। মডেল : স্পর্শিয়া মেকআপ : পারসেনা
×