ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাস গড়া জয়ে এগিয়ে গেল ভারত

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৬ জুলাই ২০১৬

ইতিহাস গড়া জয়ে এগিয়ে গেল ভারত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উইন্ডিজকে ইনিংস ও ৯২ রানের ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে বিদেশের মাটিতে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়টি তুলে নিল ভারত। ‘অধিনায়ক’ বিরাট কোহলির অনন্য ডাবল সেঞ্চুরি (২০০), রবিচন্দ্রন অশ্বিনের দুরন্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্য- সব মিলিয়ে এ্যান্টিগা টেস্টে অতিথিদের খাতায় জমা হলো অনেক অর্জন। কার্যত ক্যারিবীয়দের উড়িয়ে দিয়ে চার টেস্টের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারতীয়রা। ৮ উইকেটে ৫৬৬ রানের পাহাড় গড়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারীরা। জবাবে ২৪৩ রানে অলআউট ক্যারিবীয়রা ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ২৩১-এ! প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ১১৩ রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন অশ্বিন। বিদেশের মাটিতে এটিই ভারতের সবচেয়ে বড় জয়, আগেরটি ছিল জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে (ইনিংস ও ৯০ রানে. বুলায়েতে ২০০৫ সালে)। জ্যামাইকায় শনিবার শুরু চার ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। শুরু থেকেই এটিকে বলা হচ্ছিল ‘অসম’ লড়াই, যেখানে নিশ্চিত ফেবারিট র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয়সেরা ভারত। আট নম্বরে থাকলেও অনেকে ভেবেছিলেন ঘরের মাটিতে কিছুটা ফাইট দেবে ক্যারিবীয়রা। কিন্তু সেটি হয়নি। অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করল জেসন হোল্ডারের দল। সাড়ে তিনদিনেই হারল ইনিংস ব্যবধানে। এর আগে ঘরের মাটিতে সর্বশেষ ২০০৫ সালে এমন লজ্জায় ডুবেছিল উইন্ডিজ (ইনিংস ও ৮৬ রানে, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।) ৫৬৬Ñএর জবাবে ২৪৩ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ার পরই মূলত খেলার আকর্ষণ শেষ হয়ে যায়। অশ্বিন ঘূর্ণিতে এক পর্যায়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৬ রানে ষষ্ঠ ও ১২০ রানে সপ্তম উইকেট হারালে হোল্ডারদের হারটা হয়ে দাঁড়ায় সময়ের বিষয়। নবম উইকেট জুটিতে অপ্রত্যাশিতভাবে ৯৫ রান যোগ করে সেটিকে কিছুটা প্রলম্বিত করেছেন কার্লোস ব্রেথওয়েট (৫১*) ও দেবেন্দ্র বিশু (৪৫)। প্রথম ইনিংসে পেসার মোহাম্মদ শামি ও উমেশ যাদব তা-ব চালিয়েছেন, উইকেটশূন্য ছিলেন অশ্বিন। সেটি পুশিয়ে দিতেই কিনা দ্বিতীয় ইনিংসে অবিশ্বাস্য বোলিং করলেন তুখোড় এই স্পিনার (২৫-৮-৮৩-৭)। বিদেশের মাটিতে এটি তার সেরা বোলিং। ৩৩ টেস্টের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ বা ততধিক উইকেট নিয়ে মাত্র তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে নাম লেখালেন ইয়ান বোথাম, জ্যাক ক্যালিসদের পাশে। ৬ হাফসেঞ্চুরির বিপরীতে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন অশ্বিন, সঙ্গে ১৭তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেটÑ এরপরও তাকে কেন ‘অলরাউন্ডার’ বলা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক গ্রেট কপিল দেব। অশ্বিন অবশ্য নিজেকে অলরাউন্ডারই ভাবছেন, ‘ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে আমি আসলে কিছুটা বিস্মিতই হয়েছিলাম। এজন্য কুম্বলে ভাই (নতুন প্রধান কোচ) এবং অধিনায়ক কোহলিকে ধন্যবাদ। প্রমাণ করে দলকে জেতাতে পেরে ভাল লাগছে। আমি নিজেকে সবসময় অলরাউন্ডারই ভাবি।’ উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক কোহলি বলেন, ‘জানতাম না বিদেশের মাটিতে এটি ভারতের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। শুনে দারুণ অনন্দ হচ্ছে। স্কোর বোর্ডে দেশের পাশে জয়- শব্দটা দেখে ভাল লাগছে। গেল তিন সপ্তাহ আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। এই কৃতিত্ব দলের সবার, সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।’ অন্যদিকে হারের জন্য নিজেদের বোলিং ব্যর্থতাকেই দায়ী করেন উইন্ডিজ সেনাপতি জেসন হোল্ডার, ‘প্রথম ইনিংসে ভারত এত রান করার ফলেই আমরা ব্যাকফুটে চলে যাই। বোলিং একদম ভাল হয়নি। ম্যাচে কিছু ইতিবাচক দিক অবশ্য রয়েছে, যা সিরিজে পরের টেস্টগুলোতে কাজে লাগবে।’
×