ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যান্টিগা টেস্ট, ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে উচ্ছ্বসিত তুখোড় এই উইলোবাজ

কোহলিকীর্তিতে ভারতের দাপট

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২৪ জুলাই ২০১৬

কোহলিকীর্তিতে ভারতের দাপট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমদিনই মোহাম্মদ আহারউদ্দীনের পাশে নাম লিখিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে বিদেশের মাটিতে ৫ টেস্ট সেঞ্চুরি। সেটিকে আরও উঁচুতে নিয়ে গেলেন বিরাট কোহলি। উইন্ডিজে তো বটেই, প্রথম ভারতীয় ‘অধিনায়ক’ হিসেবে সেটিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দিলেন ‘সেনসেশনাল’ উইলোবাজ। খেললেন ঠিক ২০০ রানের ক্যারিয়ারসেরা অনবদ্য এক ইনিংস। সঙ্গে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সেঞ্চুরি (১১৩), সব মিলিয়ে এ্যান্টিগা টেস্টে রানের পাহাড়ে ভারত। ৮ উইকেটে ৫৬৬ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে অতিথিরা। জবাবে দ্বিতীয়দিন শেষে ১ উইকেটে স্বাগতিক ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ ৩১ রান। সাদা পোশাকে জীবনের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে যারপর নাই উচ্ছ্বসিত কোহলি। পাঁচ বছর আগে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল- ভারত অধিনায়কের কাছে এটি তাই বিশেষ কিছু। ‘অসাধারণ অনুভূতি, ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এখানেই আমার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল, স্মৃতিটা সুখকর নয়, এবার সেই উইন্ডিজে পেলাম জীবনের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ভাবতেই ভাল লাগছে। আমি জানি আমার বড় স্কোর গড়ার ক্ষমতা আছে, এবার বিশ্বাসটা আরও বেড়ে গেল।’ বিসিসিআই টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন কোহলি। পাঁচ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলায় তার জন্য চ্যালেঞ্জটাও বেশি ছিল বলেও স্বীকার করেন ভারত অধিনায়ক। ২০১১’র জুনে কিংস্টনে টেস্ট অভিষেক হয় কোহলির। সেবার পাঁচ ইনিংসে করেছিলেন মোটে ৭৬ রান (৪, ১৫, ০, ২৭ ও ৩০)। গড় ১৫.২০! পাঁচ বছরের ব্যবধানে সেখানে আজ অন্য কোহলি, ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ‘সুপার হিরো’। অধিনায়ক হিসেবে ভিভ রিচার্ডস-ব্রায়ান লারার দেশে পা রেখেই নতুন ইতিহাস। টেস্ট পাঁচদিনের খেলা, ম্যাচের ফল কি হবে সময়েই তার উত্তর মিলবে। তবে কোহলি যা করেছেন, তাতেই ভারতীয় রেকর্ডের অনেক কিছু বদলে দিয়েছেন তিনি। প্রথমদিন শেষে ১৯৭ বলে ১৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। শুক্রবার দ্বিতীয়দিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ২৮১ বলে। ২৪টি চার দিয়ে। বিরতির পর অবশ্য আর কোন রান যোগ না করেই শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে বোল্ড হয়ে যান। বিদেশের মাটিতে কোন ভারতীয় অধিনায়কের এটি প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, ব্যক্তিগত সর্বোচ্চও। আগে যেটি ছিল আজহারউদ্দীনের দখলে, ১৯২ রানÑ ১৯৮৯ সালে অকল্যান্ডে। টেস্ট ইতিহাসে কাটায় কাটায় ২০০ রানে আউট হওয়া দ্বিতীয় অধিনায়ক কোহলি। প্রথম জন একজন বাংলাদেশী। তিনি মুশফিকুর রহীম। ২০১৩’র মার্চে গল টেস্টে ঠিক ২০০ রান করে সাজঘরে ফিরেছিলেন টাইগার সেনাপতি। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড সেটিই। পরে অবশ্য তামিম ইকবাল তার সঙ্গী হয়েছেন (২০৬, খুলনা)। নেতৃত্বের বিষয়টি বাইরে রাখলে ২০০ রানে আউট হওয়া ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান কোহলি। আগের পাঁচজন হলেন ওয়ালি হ্যামন্ড, মহসিন খান, ডেভিড বুন, স্টিভ ওয়াহ ও গ্রায়েম স্মিথ। কোহলিকীর্তিতে ঢাকা পড়ে গেছে অশ্বিনের সেঞ্চুরি। নইলে পাঁচ ব্যাটসম্যান নিয়ে নামার ঝুঁকি থেকে দলকে বাঁচাতে তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ছয় নম্বরে নেমে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ২৫৩ বলে ১১৩ রানের ইনিংসটা সাজিয়েছেন ১২টি চার দিয়ে। ‘ব্যাটিং অর্ডারে ওপরের দিকে ওঠাটা দারুণ। আমি ইনিংসটি বেশ উপভোগ করেছি। যদিও নিজের ব্যাটিংয়ে আমি মোটেও অবাক নই। এজন্য কুম্বলে ভাই (কোচ) ও কোহলিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ বলেন অশ্বিন। শেষদিকে দারুণ দুটি আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেছেন ঋদ্ধিমান সাহা (৮৮ বলে ৪০) আর অমিত মিশ্র (৬৮ বলে ৫৩)। উইন্ডিজের হয়ে সফল দুই স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু ও ক্রেইগ ব্রেথওয়েট নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। স্কোর ॥ ভারত প্রথম ইনিংস ৫৬৬/৮ ডিক্লেঃ (১৬১.৫ ওভার; কোহলি ২০০, অশ্বিন ১১৩, ধাওয়ান ৮৪, মিশ্র ৫৩, ঋদ্ধিমান ৪০, রাহানে ২২, পুজারা ১৬, বিজয় ৭, অশ্বিন ২২*; বিশু ৩/১৬৩, ব্রেথওয়েট ৩/৬৫ গ্যাব্রিয়েল ২/৬৫) ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস ৩১/১ (১৬ ওভার; চন্দ্রিকা ১৬, ব্রেথওয়েট ১১*, বিশু ০*; শামি ১/৬) ** দ্বিতীয় দিন শেষে
×