ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিজের তৈরি আইন নিজেই ভাঙ্গছে বিএসইসি

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১৯ জুলাই ২০১৬

নিজের তৈরি আইন নিজেই ভাঙ্গছে বিএসইসি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিজের তৈরি করা আইন নিজেই ভেঙ্গেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ এ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর আগে সংস্থাটি বাজারের স্বার্থে পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ ব্যতীত মূলধন বাড়ানোর ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছিল। কিন্তু এই শেয়ার ধারণ না করেও বিশেষ বিশেষ কোম্পানি মূলধন বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিএসইসি প্রাইভেট প্লেসমেন্ট নামক বিশেষ সুযোগ দিচ্ছে। যাতে শেয়ার ধারণের নির্দেশনাটির ব্যত্যয় ঘটছে ও আনফেয়ার প্রাকটিস হচ্ছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ৩০ শতাংশ শেয়ার না সত্ত্বেও প্রাইভেট প্লেসমেন্টে মূলধন বাড়ানোর সুযোগ দেয়া হলে বিএসইসির নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটবে। এতে ওই নির্দেশনারই ব্যত্যয় ঘটবে। এছাড়া তালিকাভুক্তির পরে প্লেসমেন্টে মূলধন বাড়ানোর অনুমোদন একটি আনফেয়ার প্রাকটিস। এটা ঠিক না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না সত্ত্বেও মূলধন বাড়ানোর সুযোগ দিয়ে বিএসইসি নিজেই নিজের তৈরি করা নিয়ম ভাঙ্গছে। বিএসইসি এই সুযোগ দিতে পারে না, এটা দেয়া উচিত না। বিএসইসির ২০১১ সালের ২২ নবেম্বরের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোন কোম্পানির পরিচালকেরা সম্মিলিতভাবে নিজ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করলে, ওই কোম্পানি রাইট শেয়ার ও পুনঃগণপ্রস্তাবের (আরপিও) মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না। সাধারণত তালিকাভুক্ত কোম্পানি বোনাস শেয়ার ও রাইট শেয়ারের মাধ্যমে মূলধন বাড়িয়ে থাকে। এ হিসাবে কোন কোম্পানির পরিচালকেরা ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করলে বোনাস শেয়ার ছাড়া মূলধন বাড়ানোর সুযোগ থাকে না। কিন্তু ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করে একটি কোম্পানি মূলধন বাড়াতে পারছে বোনাস শেয়ার ছাড়াও। আর এক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদান করছে বিএসইসি। একটি কোম্পানির তালিকাভুক্তির পূর্বে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করার নিয়ম প্রচলিত আছে। তবে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও একটিভ ফাইন কেমিক্যালকে এই বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে তালিকাভুক্তির পরে। এর পেছনে একমাত্র কারন কোম্পানি দুটিরই পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেনি। যেকারণে কোম্পানি দুটি সাধারণ নিয়মে মূলধন বাড়ানোর জন্য যোগ্য না। বিশেষ সুবিধায় মূলধন সংগ্রহের অনুমোদন পাওয়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের পরিচালকেরা ৫.০২ শতাংশ ও একটিভ ফাইন কেমিক্যালের পরিচালকেরা ১২.০২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে। চলতি বছরের ১ জুন ইউনাইটেড এয়ারকে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা দরে ৪০০ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার টাকার মূলধন সংগ্রহ করার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। ইস্যুকৃত শেয়ারগুলোর ক্ষেত্রে সুইফট কার্গো পিটিইর শেয়ার ৩ বছর, ফনিক্স এয়ারক্রাফট লিজিং পিটিই ও টিএসি এভিয়েশনের ক্ষেত্রে ১ বছর লক ইন থাকবে। এর আগে ২০১৪ সালের আগস্টে একটিভ ফাইন কেমিক্যাল প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ৬০ টাকা দরে ২ কোটি শেয়ার ইস্যু করে। প্লেসমেন্টের শেয়ার ৩ বছর লক ইন রাখা হয়।
×