ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেফতার হচ্ছে চুনোপুঁটিরা

বাগমারায় জঙ্গী ও সন্ত্রাসের হোতারা ফের প্রকাশ্যে

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৬ জুলাই ২০১৬

বাগমারায় জঙ্গী ও সন্ত্রাসের হোতারা ফের প্রকাশ্যে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ এক সময়ের জঙ্গী ও সর্বহারা অধ্যুষিত রাজশাহীর বাগমারা এলাকায় পুলিশের অভিযানে চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে মূল হোতারা। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারছেন না। গত কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকজন পুলিশের হাতে আটক হলেও মূলহোতারা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এক সময় বাগমারা এলাকায় যারা ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেছিল তারা আবারো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থানা পুলিশ বাগমারার জেএমবি সদস্য মামুনুর রশিদ ওরফে মামুন মোহরীকে গ্রেফতার করেছে। এর দু’দিন আগে বাংলাভাইয়ের আরেক সহযোগী আব্দুস সাত্তার ওরফে সাত্তার বিএসসিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও বাগমারায় আত্মগোপন করে থাকা জামায়াত-শিবিরের দুই নেতাকর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়। এদিকে সন্ত্রাস দমনে নিয়মিত অভিযান চলছে বলে পুলিশ দাবি করলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাগমারায় ২০০৪ সালে যারা জেএমবির নেতৃত্বে ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর ধরা পড়ছে চুনোপুঁটিরা। স্থানীয়দের তথ্যে জানা গেছে, জেএমবির অন্যতম সহযোগী ছিলেন, উপজেলার একডালা গ্রামের আব্দুল হালিম। তিনি জামায়াতের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। জেএমবির হাতে নির্যাতিত ফজলুর রহমানের দায়ের করা মামলায় সাড়ে ৩১ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল হালিম। বর্তমানে আত্তিজারা নামের একটি সংস্থার চেয়ারম্যান তিনি। জেএমবি ও জামায়াতের অর্থদাতা হিসেবেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। উচ্চা আদালত থেকে জামিনে এসে এখন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায়। এছাড়াও উপজেলার গোয়ালকান্দি গ্রামের বেলাল হেজাতি ও হাবিবুর রহমান জেএমবির তালিকাভুক্ত সদস্য। এর আগে একাধিকবার তারা গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা মামলার তারা আসামি। ২০০৪ সালে বাংলাভাইয়ের নেতৃত্বে তারা অস্ত্র হাতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা-ে প্রকাশ্যে অংশ নেয়। তারা এখন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেএমবির আরেক সংগঠক নওগাঁর আত্রাইয়ের হাটকালুপাড়ার মঞ্জুর রহমান এখন বাগমারার ভবানীগঞ্জ এলাকায় অবস্থান করছে। জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় সে ৩১ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এছাড়াও আত্রাইয়ের হাটকালুপাড়ার আরেক জেএমবির সংগঠক আব্দুল লতিফও এখন ভবানীগঞ্জ অবস্থান করছেন। সে জেএমবির সদস্য ও একটি মামলায় ৩১ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি। মঞ্জুর রহমান ও আব্দুল লতিফ উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে এলাকা ছেড়ে ভবানীগঞ্জ এলাকায় অবস্থান করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়াও জেএমবির শীর্ষ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত মাহাতাব খামারুও এখন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর আগে সে একাধিকবার গ্রেফতার হলেও এখন রয়েছে বহাল তবিয়তে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, বাগমারা এলাকায় এখন আবারো সেই সময়ের (বাংলাভাইয়ের আমল) সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তথ্য দিলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি এড়িয়ে যায়। উচ্চ আদালতে জামিনে রয়েছে বলেই দায় সারা করে পুলিশ। উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাগমারায় জঙ্গী ও সর্বহারারা আবারো সংগঠিত হতে পারে। অনেক চিহ্নিত জঙ্গী ও সর্বহারা সদস্যরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করছে। তবে এসব বিষয়ে বাগমারা থানা পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ জানান, সন্ত্রাসী ও জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। অনেকে আত্মগোপনে রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার ও জঙ্গী এবং সন্ত্রাস নির্মূলে সব সময় সচেষ্ট রয়েছে।
×