ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যাথলেটিক্সের ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত শীঘ্রই

বাংলাদেশের অলিম্পিক দলে পাঁচ ক্রীড়াবিদ

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১৪ জুলাই ২০১৬

বাংলাদেশের অলিম্পিক দলে পাঁচ ক্রীড়াবিদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ কোনটি? সচেতন ক্রীড়াপ্রেমীরা সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দেবেন ‘অলিম্পিক গেমস।’ হ্যাঁ, কোন সন্দেহ নেই তাতে। এ পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩০ বার। শুরু হয় ১৮৯৬ সাল (এথেন্স) থেকে। তবে আমাদের বাংলাদেশ এ আসরে প্রথম অংশ নেয় ১৯৮৪ সালের লস এ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে। এ পর্যন্ত আটটি গেমসে অংশ নিয়েও কোন পদক জেতেনি বাংলাদেশী এ্যাথলেটরা। শুরুতে তাদের জন্য বেদবাক্য ছিল ‘পদক জেতা নয়, অংশগ্রহণ করাই বড় কথা। কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই। এখনকার মূলমন্ত্র হচ্ছে ‘অংশগ্রহণ নয়, পদক জেতাই বড় কথা।’ কিন্তু বিশ্বের সেরা সব এ্যাথলেটদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আমাদের এ্যাথলেটরা যে হিটেই বাদ পড়ে যান বার বার! আগামী ৫ আগস্ট ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত হবে অলিম্পিকের ৩১তম আসর। ১৭ দিনে ৩৭ ভেন্যুতে ৪২ ডিসিপ্লিনে ৩০৬ ইভেন্টে ২০৬ দেশের প্রতিযোগী অংশ নেবে এ আসরে। এ আসরে খেলবেন বাংলাদেশের পাঁচ এ্যাথলেট। তাই অলিম্পিক গেমসকে ঘিরে স্বপ্ন তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের। নিজ যোগ্যতা বলে দেখিয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে অলিম্পিকে খেলা নিশ্চিত করেছেন দেশসেরা গলফার সিদ্দিকুর রহমান। বাকি চারজন ‘ওয়াইল্ড কার্ড’ পেয়ে যাচ্ছেন অলিম্পিকে। এরা হলেন- সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর ও সোনিয়া আক্তার টুম্পা, শূটিংয়ে আবদুল্লাহ হেল বাকি এবং আরচারিতে শ্যামলী রায়। এছাড়া ওয়াইল্ড কার্ড প্রাপ্তির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে আরও দুজনের। এরা হলেন- এ্যাথলেটিক্সের দুই স্প্রিন্টার। এরা হলেন- ১০০ মিটার স্প্রিন্ট মেজবাহ উদ্দিন ও শিরিন আক্তার। এ দুজনও যদি কার্ড পান, তাহলে এবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক খেলোয়াড় বাংলাদেশ থেকে অংশ নেবেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর রিও অলিম্পিক গেমসে। ১৯৮৪ লস এ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে সাইদুর রহমান ডন। ১৯৯২ বার্সেলোনা অলিম্পিকে কাজী শাহানা পারভীন। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে সিদ্দিকুর রহমান। উল্লিখিত তিনজনই আলাদা কারণে মহিম্বন্বিত। স্প্রিন্টার ডন ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অলিম্পিয়ান। শূটার শাহানা ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী অলিম্পিয়ান। তারা উভয়েই অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন বিশেষ ‘ওয়াইল্ড কার্ড’ নিয়ে। কিন্তু এদের দুজনকেই ছাড়িয়ে গেছেন গলফার সিদ্দিকুর রহমান। এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা জেতা প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশী গলফার তিনি। দেশের হয়ে গলফ বিশ্বকাপে তিনিই প্রথম খেলেছেন। এবার দেশের প্রথম এ্যাথলেট হিসেবে অলিম্পিকে সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়েছেন ওয়াইল্ড কার্ড ছাড়াই। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২ আগস্ট রওনা হবেন সিদ্দিকুর। ইতোমধ্যেই জানা গেছে, রিও অলিম্পিকের মার্চপোস্টে বাংলাদেশের পতাকা বহন করার দায়িত্ব পেয়েছেন ৩১ বছর বয়সী সিদ্দিকুরই। তিনি আগামী ২৪ জুলাই থাইল্যান্ডে একটি টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছেন। সেখান থেকে ফিরেই উড়াল দেবেন ব্রাজিলে, স্বপ্নের অলিম্পিকে। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকের পর এবার রিও অলিম্পিকে বাংলাদেশী সাঁতারু হিসেবে অংশ নেবেন মাহফিজুর রহমান সাগর। সাঁতারের ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইল ও ব্রেস্টস্ট্রোকে অংশ নেবেন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর এই সাঁতারু। অলিম্পিক সামনে রেখে গত এক বছর থাইল্যান্ডে উচ্চতর অনুশীলন শেষে দেশে ফিরেছেন তিনি। শূটিংয়ে কমনওয়েলথ গেমসের রুপা জয়ী আবদুল্লাহ হেল বাকি অংশ নেবেন অলিম্পিকে। যোগ্যতা দেখিয়ে সুযোগ পাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও তাকে যেতে হচ্ছে ওয়াইল্ড কার্ড নিয়েই। অলিম্পিকে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে খেলবেন তিনি। প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে অংশ নিতে যাচ্ছেন সাঁতারু সোনিয়া আক্তার টুম্পা। রাশিয়ার কাজানে গত বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ৫০ মিটার বাটারফ্লাই ইভেন্টে ৩২.৮১ সেকেন্ড সময় নিয়ে ৬৪ জনের মধ্যে ৬০তম হয়েছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে হওয়া বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের আরচারির পারফর্মেন্স বিবেচনা করে শ্যামলী রায়কে দেয়া হয়েছে ওয়াইল্ড কার্ড। ওই আসরে ৩২তম হওয়া শ্যামলী অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাওয়ার ভাসছেন আনন্দে।
×