ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘এবার আমরাই শিরোপা জিতব’

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ২৩ জুন ২০১৬

‘এবার আমরাই শিরোপা জিতব’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতে কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার পাশে নাম লেখানোর সুযোগ ছিল লিওনের মেসির। কিন্তু ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে সুযোগটা হারান বর্তমান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ২০১৫ সালে ক্ষতে প্রলেপ দেয়ার সুযোগ হারান আরেকটি ফাইনালে হেরে। আরও একবার ফাইনাল মঞ্চে আর্জেন্টিনা। আগের দুইবার ফসকে গেলেও এবার আর্জেন্টিাইন ট্রফি জিতবে বলে বিশ্বাস করছেন মেসি। বুধবার সেমিফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দেয়ার পর এমন আশাবাদের কথা শুনিয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। সেমিতে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার পর মেসি সতীর্থদের এই কৃতিত্ব উৎস্বর্গ করেছেন। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত মেসি বলেন, প্রথম দিন থেকেই আমরা সবাই ভাল খেলেছি এবং ফাইনালে যাওয়াটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। রেকর্ড গড়তে পেরে আমি আনন্দিত। আর এটা সম্ভব করে তুলেছে আমার সতীর্থরা। তাদের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি সত্যিই খুব খুশি। এটা আমি তাদের জন্য উৎস্বর্গ করছি। কোয়ার্টার ফাইনালে ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে গোল করে আর্জেন্টিনার পক্ষে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেছিলেন মেসি। বাতিগোল হিসেবে খ্যাত গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার সঙ্গে ভাগাভাগি করেন রেকর্ডটি। এবার সেই বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে এককভাবে রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন বর্তমান ফিফা সেরা ফুটবলার মেসি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে মেসির গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫টিতে। ১১২ ম্যাচ খেলে গোলগুলো করেছেন তিনি। আর্জেন্টিনার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডটি দীর্ঘদিন ছিল বাতিস্তুতার দখলে। ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায়ের আগে ৫৪ গোল করেন বাতিগোল। বাতিস্তুতার রেকর্ড যে এক সময় মেসির দখলে চলে যাবে, তা জানাই ছিল। তবে তিনি যে কোপা আমেরিকার এবারের আসরেই সেই রেকর্ড স্পর্শ করে ফেলবেন, তা হয় তো অনেকেই ভাবেননি। ইনজুরির কারণে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচটি খেলতে পারেননি মেসি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ৩০ মিনিটের জন্য মাঠে নেমেই করেন হ্যাটট্রিক। ওই ম্যাচেই চলে যান বাতিস্তুতার রেকর্ডের কাছে। ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে এক গোল করেই স্পর্শ করেন রেকর্ডটি। বুধবার সেই রেকর্ড ছাপিয়ে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন তিনি। রেকর্ডগড়া গোলটিও মেসি করেন দর্শনীয় ঢংয়ে। ৩২ মিনিটে ফ্রিকিক নেয়ার আগে বুটের ফিতা একটু সময় নিয়ে বাঁধেন মেসি। তারপর নেন বাঁ পায়ের শট। বল রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে পার হয়ে একটু বাঁক খেয়ে ডান কোণের ক্রসবার ঘেঁষে জালে জড়ায়। ম্যাচ শেষে গোল প্রসঙ্গে মেসি বলেন, আমি দাঁড়িয়ে সবকিছু বিশ্লেষণ করে দেখছিলাম। ভাল একটা স্ট্যান্স নিতে চেয়েছি, যেন রানআপের সময় পেছলে না যাই। এরপর ওয়ালটা দেখলাম, দেখলাম গোলকিপার কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। তারপর ঠিক করলাম বলটা কোথায় পাঠাব। এতদূর আসতে পেরে আমি আনন্দিত, রেকর্ডটা পেয়েও। তবে আমরা এখানে এসেছি অন্য কিছুর জন্য। ফাইনালে অনেক কিছুই হতে পারে। তবে ট্রফি ছাড়া কিছুই ভাবছেন না মেসি। বলেন, ফাইনালে হয় আপনি জিতবেন, নয় তো হারবেন। টানা তিনটা ফাইনালে উঠে আসাও কিন্তু অনেক বড় বিষয়, এর ?কৃতিত্বও দিতে হবে। আশা করি, এবার আমরা ট্রফি জিতব। এবার শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী দেখা যাচ্ছে আর্জেন্টিনাকে। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে মেসি বলেন, আমাদের দলটা কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে। চিলির মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ থেকেই প্রতিটা কাজ আমরা ভালভাবে করছি। কোপা এগোতে এগোতে দল হিসেবেও আমরা এগিয়েছি। আক্রমণভাগের পাশাপাশি রক্ষণেও দারুণ উন্নতি এসেছে। আমরা ক্রমান্বয়ে উন্নতি করছি, কারণ এই শিরোপা আর টুর্নামেন্টের প্রতি আমাদের আকাক্সক্ষা আর শ্রদ্ধা অনেক বেশি। টানা তিনটি ফাইনালে খেলা বিরাট বিষয় জানিয়ে মেসি বলেন, আরও একটা ফাইনালে উঠতে পেরে আমি অবশ্যই আনন্দিত। টানা তিনটা ফাইনাল, কম কথা নয়। আমরা এখন বলতে পারি, আমরা টানা তিনটা ফাইনালে উঠেছি। এই দলটা যা করেছে সত্যিই অবিশ্বাস্য। আশা করি, এবার আমরা শেষটাও জয় দিয়ে টেনে দিতে পারব। কারণ এটাই আমাদের প্রাপ্য।
×