ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাগতিক ফ্রান্সের শুরু নাটকীয় জয়ে

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ১২ জুন ২০১৬

স্বাগতিক ফ্রান্সের শুরু নাটকীয় জয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুক্রবার পর্দা উঠল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের। ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে স্বাগতিক ফ্রান্স আর রোমানিয়ার ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু করে ২০১৬ ইউরো। ঘরের মাঠ আর নিজেদের সমর্থকদের সামনে খেলা। যে কারণে স্বাভাবিকভাবেই ফেবারিট ফ্রান্স। তাছাড়া স্বাগতিকের ভূমিকায় ফ্রান্স সবসময়ই দুর্দান্ত। ১৯৮৪ সালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে আয়োজক হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল তারা। এবারের ইউরোর শুরুতেও তাদের আশাজাগানিয়া পারফর্মেন্স। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফ্রান্স ২-১ গোলে রোমানিয়াকে হারিয়ে ইউরোপের সেরা ফুটবল প্রতিযোগিতায় শুভসূচনা করে। প্যারিসের বিখ্যাত স্তাদে দি ফ্রান্সে স্বাগতিক দলের জয়ের নায়ক দিমিত্রি পায়েট। রোমানিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের করা দুটো গোলের পেছনেই তার অবদান। প্রথমটি সতীর্থকে দিয়ে করিয়েছেন। আর দুর্দান্ত শটে দ্বিতীয়টি নিজেই করেছেন পায়েট। অথচ শুরুতে ফ্রান্সকে বেশ ভালভাবেই রুখে দিয়েছিল রোমানিয়া। যে কারণে প্রথমার্ধে কোন গোলই করতে পারেনি স্বাগতিকরা। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭ মিনিটে পায়েটের দারুণ ক্রস থেকে হেডে গোল করে স্বাগতিক সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসার সুযোগ করে দেন অলিভিয়ের জিরাউড। তবে এগিয়ে থাকার আনন্দ বেশিক্ষণ উপভোগ করতে পারেনি ফরাসীরা। প্রথম গোলের আট মিনিট পর নিকোলাই স্তানচুকে বক্সের মধ্যে প্যাত্রিস এভ্রা ফাউল করলে পেনাল্টি পায় রোমানিয়া। বোগদান স্তাংকু সুযোগটা কাজে লাগাতে ভুল করেননি। ১-১ হওয়ার পর প্রতিপক্ষের আঁটোসাঁটো রক্ষণভাগ ভাঙ্গতে পারছিল না কোন দলই। খেলা যখন ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছিল ঠিক তখনই পায়েটের চমক। ৮৯ মিনিটে প্রায় ২৫ মিটার দূর থেকে নেয়া এই মিডফিল্ডারের চোখধাঁধানো শট সবাইকে বিস্মিত করে আছড়ে পড়েছে রোমানিয়ার জালে। আর ওয়েস্টহ্যামের এই তারকার গোলেই নিশ্চিত হয়েছে আয়োজকদের তিন পয়েন্ট। অনেক কষ্টার্জিত হলেও জয় দিয়ে শুরু করতে পেরে দারুণ খুশি ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম। ম্যাচ শেষে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ও ২০০০ ইউরো জয়ী অধিনায়ক নিজের অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘ওদের বাধা এড়িয়ে গোল পেতে বেশ কষ্ট হয়েছে আমাদের। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা পুরস্কার পেয়েছি। প্রথম ম্যাচ জিতে প্রতিযোগিতা শুরু করার চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না।’ রোমানিয়ার বিপক্ষে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়া পায়েটের প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ দেশম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দিমিত্রির প্রতিভা নিয়ে আমার কখনই সন্দেহ ছিল না। সে সবসময়ই দলের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। সেইসঙ্গে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচের পার্থক্য গড়তেও তার ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ আগামী ১৬ জুন নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবে ফ্রান্স। প্রতিপক্ষ খর্বশক্তির দল আলবেনিয়া। ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে তারা খেলবে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে। স্বাগতিক হিসেবে দুইবার বড় টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ইতিহাস রয়েছে ফ্রান্সের। ১৯৮৪ ইউরোর পর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে। এবারও ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের এই টুর্নামেন্টের আয়োজক ফ্রান্স। এবারের দলটাও বেশ ব্যালেন্সড। আর নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত এবারের আসরেও স্বাগতিকদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলে মনে করেন দলটির স্ট্রাইকার এ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান। তবে তার মতে, শিরোপা জিততে হলে ভাগ্যেরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে গত দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের এই তারকা ফুটবলার বলেন, ‘আমাদের দলে দুর্দান্ত কিছু ফুটবলার রয়েছে যা আমাদের দলকে অসাধারণ করে তুলেছে। সুতরাং আমি মনে করি এই দল নিয়ে আমাদের শিরোপ জয় সম্ভব। তবে আমাদের আরও শক্তিশালী হতে হবে। প্রথমত আমাদের গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের সবকটিতেই জিততে হবে। পরে কি হয় দেখা যাবে। আমাদের দলের পরিবেশটাও এখন খুব ভাল। আমরা ড্রেসিং রুমে প্রচুর মজা করি। আর মাঠেও এটি বজায় থাকবে। খেলায় আমরা নিজেদের শতভাগই দেয়ার চেষ্টা করব।’
×