ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্যসেবা আইনে জেল দেয়ার বিধান নেই ডাক্তারদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৯ মে ২০১৬

স্বাস্থ্যসেবা আইনে জেল দেয়ার বিধান নেই ডাক্তারদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত আইনে চিকিৎসকদের কারাদ-ের বিধান রাখা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, রোগীদের জীবন রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন চিকিৎসকরা। তাঁদের কারাদ-ের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। চিকিৎসা সংক্রান্ত অপরাধে অভিযুক্ত চিকিৎসকের জরিমানা করা যেতে পারে। তার লাইসেন্স বাতিল করতে পারে বিএমডিসি। তবে কোন চিকিৎসকের অপরাধ প্রচলিত আইনের আওতায় পড়লে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করার কিছুই থাকবে না। তখন প্রচলিত আইন অনুযায়ীই অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিচার ও শাস্তি হবে। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে জিএমই গ্রুপের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ‘জিএমই হেলথ কেয়ার সামিট এবং মেডিক্যাল ফেয়ার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডাঃ সামিউল ইসলাম সাদি, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুর মোনেম, জিএমই গ্রুপের চেয়ারম্যান ডাঃ ফারহানা মোনেম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ চৌধুরী হাসান মাহমুদ। স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নে বেসরকারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়ন আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত। স্বাস্থ্য সেক্টরসহ দেশের সামগ্রিক উন্নতি বিশ্বের নজরে পড়েছে। বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং মধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশ করতে সরকারী ও বেসরকারী উদোক্তাদের সমন্বিত ভূমিকার বিকল্প নেই। জাপানে অনুষ্ঠিত জি-সেভেন আউটরিচ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পৃথক আলোচনায় বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকা-ের চিত্র তুলে ধরেন। সাধারণ মানুষের সহনীয় পর্যায়ে প্যাথলজি পরীক্ষার ফিসহ চিকিৎসার খরচ নির্ধারণ করতে বেসরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিকদের আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারী তুলনায় ৫ গুণ বেশি ফি নেয়া হয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে। চিকিৎসার উচ্চ ফি মেটাতে না পেরে অনেক দরিদ্র রোগীর অকালে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। তাই গ্রহণযোগ্য ফি নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করছে সরকার। চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ফি নেন, কিন্তু দরিদ্র রোগীদের বিষয়টিও মনে রাখতে হবে। উচ্চ ফি নিয়ে তাদের প্রতি অমানবিক হওয়া ঠিক হবে না। টাকার অভাবে যাতে রোগী মারা না যায়, সেদিকেও নজর রাখা উচিত। স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য খাতে যুগান্তকারী সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য বিষয়ক সহস্রাব্দ লক্ষ্য অর্জনেও এদেশের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। দেশের ৯৯ ভাগ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। দেশে অনুর্ধ ১২ মাস বয়সের শিশুদের সকল টিকা প্রাপ্তির হার ৮১ ভাগ। রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র গড়ে তোলা হয়েছে নতুন নতুন হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ। অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। পোলিও মুক্ত হয়েছে দেশ।
×