অনলাইন ডেস্ক ॥ আমুলের বিজ্ঞাপন আমার দারুণ লাগে। খুব সিরিয়াস বিষয়ও ওরা যে রসিকতা আর বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দেখায়, জাগতিক জ্ঞানের চেয়ে সেটা বেশি গ্রহণযোগ্য। সত্যম কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে আমুলের একটা বিজ্ঞাপন মনে আছে। কার্টুনে চশমা পরা, গোঁফওয়ালা একটা লোকের হাতে টাকার ব্যাগ। হেডলাইনটা দুর্ধর্ষ— সত্যম, শরম, স্ক্যান্ডলম। বিজ্ঞাপনের কপিরাইটারকে পারলে অ্যাডভার্টাইজিং পুরস্কার দিয়ে দিই।
হালফিলে সলমন খানের রিও অলিম্পিক্সের শুভেচ্ছাদূত হওয়াটা যে আমুল কপিরাইটারের মনে ধরেছে, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। এ বারের কপিটাও খারাপ নয়। বিজ্ঞাপনে লেখা আছে— অ্যাথলিটরা সলমন নয়, সম্মান চান। সঙ্গে তিন বিভ্রান্ত অ্যাথলিটের কার্টুন।
আমিও এই বিষয়টার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছি। সলমনের নতুন ভূমিকা নিয়ে কী ভাবছি, এক সাংবাদিক আমাকে প্রশ্নটা করেন। আমি যে উত্তরটা দিয়েছিলাম, তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর ব্যঙ্গ আর গালাগালি হজম করেছি। তবু মত বদলাইনি। সলমনের সঙ্গে আমার কোনও বিরোধিতা নেই। বিশেষ করে ‘বিইং হিউমান’ সমাজসেবী সংস্থা গঠন করে ও যা যা করছে, দারুণ। কিন্তু অলিম্পিক্স স্পোর্টস প্রোমোশন করছেন একজন ফিল্ম স্টার, এটা কিছুতেই মানতে পারলাম না।
তার মানে তো এটাই বুঝতে হবে যে, খেলাধুলো এবং খেলোয়াড়দের যে দেশে তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর ক্ষমতা নেই, সেটা চুপচাপ মেনে নিচ্ছে আইওএ। ওরা তা হলে এটাই বলতে চাইছে যে, অভিনব বিন্দ্রা, মেরি কম, যোগেশ্বর দত্তের মতো পদকজয়ী অ্যাথলিট যা করেন, তা দেশের তরুণদের যথেষ্ট অনুপ্রেরণা দিতে অক্ষম। তাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এক জন ‘খান’কে দরকার পড়ছে। স্যরি, কিন্তু আইওএ খুব বড় ভুল করেছে এ বার। খেলাধুলোর যা দরকার তা হল উন্নত প্রশাসন। দরকার এমন কাউকে যার খেলাধুলো, পরিকল্পনা আর সততা নিয়ে আবেগ রয়েছে। আর আমুল কপিরাইটারের কথায়, অ্যাথলিটদের প্রতি ‘সম্মান’ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন আমাকে নিয়ে বিদ্রুপ চলছে, আমি তখন এই মুম্বইয়ে দারুণ সময় কাটালাম। আমার জীবনের তিন নারীর মধ্যে দু’জন এখানে। হোটেলের ঘরে বসে থাকতে আমার যতটা ভাল লাগে, ওরা দু’জন ততটাই ভালবাসে বাইরে ঘুরতে। আমরা সবাই জাপানি খাবার দিয়ে ডিনার সেরে তার পর বেশ রাতে হাজি আলির আশেপাশে একটু ঘুরে এলাম।
খুব কম সময়ের জন্য শাহরুখ ভাইয়ের সঙ্গেও দেখা হল। ‘ফ্যান’-এর সাফল্যের জন্য ওঁকে অভিনন্দন জানালাম। পুণেয় একটা বিশেষ শো-এ গোটা কেকেআর টিম সিনেমাটা দেখেছি। সিনেমা দেখার সময়টুকু সব ভুলে থাকা যায়। পরিচালক আর সিনেমার চরিত্রের সঙ্গে বেশ একটা অভিযানে বেরনো যায়। তাই সিনেমা হলে ঢুকে আমি নিজেকে সমর্পণ করে দিই। সঙ্গে অবশ্য এক বালতি পপকর্ন চাই। ‘ফ্যান’-ও সে ভাবেই দেখেছি।
এ বার একটু টিমের কথায় আসি। খবরাখবর সব ভালই। মণীশ পাণ্ডের অসুস্থতার কথা বাদ দিলে সবাই মাঠে নামতে তৈরি। ওয়াংখেড়ে পিচ সেই একই রকম— মুম্বই-পুণে হাইওয়ের মতো শান্ত। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচের আগে দুটো ভাল প্র্যাকটিস সেশন পেয়েছি। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আমাদের রেকর্ড ভাল নয়। কে একটা যেন বলছিল, মুম্বই আমাদের ‘মসকা’ টিম বলে ডাকে। মাখনকে মুম্বইয়ের চলতি ভাষায় মসকা বলা হয়। শুনলাম ওরা আমাদের এই নামটা দিয়েছে কারণ ওদের মনে হয়, আমাদের হারানোটা পাঁউরুটিতে মাখন লাগানোর মতোই সহজ।
মসকা নামটা কে দিল কে জানে! মুম্বইয়ের কোনও প্লেয়ার? না কি আমুলের ওই কপিরাইটার?
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা