ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু

এই সময়ে তারুণ্যের পোশাক

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ২২ এপ্রিল ২০১৬

এই সময়ে তারুণ্যের পোশাক

সকালের সূর্যটা যতবেশি বিকিরণ ছড়াতে থাকে রোদ্রের প্রখরতা দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকে। গ্রীষ্মের এ দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। এ সময়টা অন্যান্য ঋতুর তুলনায় একটু বেশিই উষ্ণ। ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। ছয়টি ঋতুই পরিবর্তিত হয় আপন মহিমায়। তারই হাত ধরে প্রকৃতিতে খেলা করছে বৈশাখী তেজ। বৈশাখী ঝড়ের তীব্রতার মতেইা এর রোদ্রের তেজ। যে কারণে বাধ্য হয়েই পরিবর্তিত হয় দৈনন্দিন চলাফেরা এবং যাপিতজীবন। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুতেই আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রস্তুতি নেয়া হয়। প্রকৃতির পালাবদলে বইছে উষ্ণ হাওয়া। চারদিকে বিরাজ করছে রোদ তাতানো গরম। আর এ সময়টাতে চলে নিজেকে রোদ থেকে রক্ষার প্রস্তুতি। চলাফেরা সবকিছুতেই চলে সাবধানতা। পরিবর্তনের এ তালিকায় পোশাক এবং খাওয়া-দাওয়া অন্যতম। অর্থাৎ সময়োপযোগী আরামদায়ক পোশাকের দিকে নজর সবার। যে কারণে পোশাকের ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত। পোশাক যদি আরামদায়ক না হয় তাহলে ঘামে ভিজে একাকার হয়ে যাবার উপক্রম। সৃষ্টি হয় অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির। অতএব আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পোশাক না পরলে অস্বস্থিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। যে কারণে ঋতুভিত্তিক পোশাক মানুষের এখন প্রথম পছন্দ। ফ্যাশন হাউসগুলো এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। একটা সময় ছিল যখন এদেশের মানুষ উৎসব কিংবা বড় কোন অনুষ্ঠান ছাড়া ফ্যাশন হাউসগুলোতে ভির জমাতো না। তবে প্রেক্ষাপট অনেকটাই বদলে গেছে। বাঙালী এখন ফ্যাশন সচেতন জাতি হিসেবে স্বীকৃত। ঋতুভিত্তিক পোশাক এখন ফ্যাশন ট্রেন্ডের পরিচিত রূপ। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের ফ্যাশন ট্রেন্ড। যা সত্যিকার অর্থেই ইতিবাচক দিক। ইন্টারনেটের বদৌলতে প্রতিদিন বিশ্বে ফ্যাশন জগতে কি কি পরিবর্তন হচ্ছে তা সহজেই জানা যায়। তাছাড়া কবে কোথায় কোন কোন ফ্যাশন হাউসের ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হবে তার অগ্রিম খবর জেনে নেয়া যায়। যার ফলে ফ্যাশন ট্রেন্ডের হালহাকিকত সম্পর্কে সহজেই পরিচিত হওয়া যায়। যে কারণে আমাদের দেশীয় পোশাকের বাজারের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের ফ্যাশনও যোগ হয়েছে আমাদের ফ্যাশন ট্রেন্ডে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে শুরু করে পশ্চিমা পোশাকের প্যাটার্ন এখন আমাদের দেশে নিয়মিত চোখে পড়ে। আমাদের দেশের মানুষ এখন অনেক বেশি ফ্যাশন সচেতন। আগেকার সনাতনি ধারণাকে পেছনে ফেলে অনেকদূর এগিয়ে গেছে বর্তমান ফ্যাশন ট্রেন্ড। একটা সময় পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক উগ্র বলে আখ্যায়িত করা হতো। কিন্তু কালের পরিক্রমায় তা নিত্য ব্যবহারে দাঁড়িয়েছে। যেমন হাতাকাটা বা সিøভলেস ড্রেস আগে আমাদের সমাজে তেমনভাবে স্বীকৃত ছিল না। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে তা আজ ফ্যাশন ট্রেন্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের কাছে হাতাকাটা পোশাক বেশ জনপ্রিয়। খুব বেশিদিন হয়নি এ ড্রেসটি ফ্যাশন ট্রেন্ডে যোগ হয়েছে তথাপি অল্পসময়ের মধ্যে তা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। একটা সময় সিøভলেস ব্লাউজ ছাড়া সিøভলেস ড্রেস তেমন একটা চোখে পড়ত না। অথচ বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসে সিøভলেস ড্রেস চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে এই গরমে বলাইবাহুল্য। যদিও পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক এগুলো তারপরেও এখন তা দেশীয় ফ্যাশন ট্রেন্ডের অংশ হয়ে গেছে। শুরুতে পশ্চিমা ধাঁচটা অনুসরণ করা হলেও এখন তা দেশীয় ডিজাইনারদের অন্যতম ব্যস্ততার কারণ। অর্থাৎ আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী কাপড় সিলেক্ট এবং ডিজাইন করা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ডিজাইনাররা। এ প্রসঙ্গে নিমা আহমেদ জানান, একটা সময় হুবহু পশ্চিমা ডিজাইন ফলো করা হতো। কিন্তু হিসেব করে দেখা গেছে সব ধরনের ডিজাইন আমাদের দেশে মানানসই নয়। তাছাড়া কাপড় সিলেকশন বড় একটা ব্যাপার। এসব বিষয় চিন্তা করে দেশীয় কাপড় এবং ডিজাইনের সমন্বয় ঘটানোতে রেজাল্টও ভাল পাওয়া গেছে। দেখা গেছে ক্রেতারা হুবহু পশ্চিমা ড্রেসের ডিজাইনের চেয়ে আমাদের ডিজাইনকৃত পোশাকের দিকেই বেশি ঝুঁকছে। কারণ আমরা দেশীয় আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাপড় সিলেক্ট করে থাকি। শুধু দেখতে ভাল হলেই তো হবে না তা পড়তেও আরামদায়ক হতে হবে। সিøভলেস ড্রেস এখন কটন, এন্ডি কটন, সিল্ক এবং এন্ডি সিল্কের মতো কাপড় দিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে। ইদানীং টি-শার্টের ফেব্রিক দিয়েও সিøভলেস ড্রেস তৈরি হচ্ছে যা খুবই কম্ফোর্টেবল। ডিজাইনেও রাখা হয়েছে ভ্যারিয়েশন। সংমিশ্রণ ঘটানো হয়েছে পশ্চিমা এবং দেশীয় ডিজাইনের। প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসেই দেখা মিলবে সিøভলেস পোশাকের। এর মধ্যে আড়ং, দেশী দশ, এক্সট্যাসি, রেক্স, মনসুন রেইন, মানজা, আর্টিস্টি, ইয়েলো, ওয়েজেসসহ আরও অনেক শো-রুমে। গরম থেকে প্রশান্তি, ইজি মুভমেন্ট এবং ফ্যাশন ট্রেন্ডের আধুনিকতার ছোয়া সব মিলিয়ে সিøভলেস ড্রেস বর্তমান তরুণীদের দারুণ পছন্দের। প্যাটার্ন এবং ডিজাইন ভেদে ড্রেসগুলোর মূল্য পড়বে ১২৫০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা। ছবি : নাসিফ আহমেদ মডেল : অজান্ত ও রানা পোশাক : লারিভ মেকআপ : রেড
×