ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মহাযুদ্ধের আগে মিলনমেলা!

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৯ মার্চ ২০১৬

মহাযুদ্ধের আগে মিলনমেলা!

স্পোর্টস রিপোর্টার, কলকাতা থেকে ॥ ‘ইস্, জগমোহন ডালমিয়া যদি থাকতেন!’Ñএ আফসোস কি সৌরভ গাঙ্গুলীরও হচ্ছে না? ভালভাবেই হচ্ছে। শুধু টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল ভারতের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম কলকাতার ইডেন গার্ডেনে হবে, এজন্যই নয়; গাঙ্গুলীর আফসোস আরও বেড়ে যাচ্ছে, যখন ইডেন গার্ডেনে প্রথমবারের মতো আজ ভারত-পাকিস্তান বিশ্বকাপের ম্যাচেও থাকতে পারবেন না ডালমিয়া। গত বছরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া ডালমিয়াকে নিয়ে আরও আফসোসে পুড়ছেন গাঙ্গুলী। রাত আটটায় শুরু হওয়া মহাযুদ্ধের এক ঘণ্টা আগে থেকেই যে কত আয়োজন, দুই দেশের ক্রিকেটারদের মিলনমেলার আয়োজন করেছেন গাঙ্গুলী, সেই আয়োজন-মিলমেলায় যে সঙ্গীও হতে পারলেন না ডালমিয়া! ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হচ্ছে ভারতের মাটিতে। তাও আবার কলকাতার ইডেন গার্ডেনে। প্রথমবারের মতো দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে ইডেন গার্ডেনে বিশ্বকাপের ম্যাচ হচ্ছে। বিশেষ আয়োজন না থাকলে কি আর হয়! সেই আয়োজন আছেও। ‘যেন-তেন’ আয়োজন নয়, যে তালিকা দেয়া হলো, আর প্রস্তুতির আভাস মিলল; তাতে বিশ্বের যে কোন ম্যাচের আয়োজনের চেয়ে সেরা আয়োজন হতে চলেছে নিশ্চিতভাবেই বলে দেয়া যায়। ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী এখন সিএবির (ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল) সভাপতি। যে স্থানটিতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলেন ডালমিয়া। সেই স্থানে এখন গাঙ্গুলী আসীন হয়েছেন। ইডেন গার্ডেনও তাই তার নিয়ন্ত্রণেই। এতটাই ভাগ্য ভাল গাঙ্গুলীর যে, সভাপতি পদে আসীন হয়েই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পেয়ে গেছেন। সেই ম্যাচটি আবার বিশ্বকাপের ম্যাচ! গাঙ্গুলী কি আর সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে পারেন। লুফে নিলেন। ম্যাচটির আগে সবাইকে মুগ্ধ করতেও উঠে পড়ে লাগলেন। মাঠে কে থাকবেন না আজ এ ম্যাচটিতে। দুই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে যেন মিলমেলাই হবে। ভারতের পক্ষে বিখ্যাত সব সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার, শচিন টেন্ডুলকর, বীরেন্দর সেবাগ থাকবেন। পাকিস্তানের পক্ষে থাকবেন ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, ইনজামাম উল হক। এরসঙ্গে আরও দুইজন অন্য ভুবনের তারকাও থাকবেন। একজন ভারতের বলিউড সেরা তারকা অমিতাভ বচ্চন ও আরেকজন পাকিস্তানের গজল সম্রাট সাফকাত আমানাত আলী। ভারতের পক্ষে আবার জাতীয় সঙ্গীত গাইবেন অমিতাভ আর পাকিস্তানের পক্ষে গাইবেন সাফকাত। সাবেক ক্রিকেটারদের আবার সংবর্ধনা দেয়া হবে। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়ে উপস্থিত হবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি সাড়ে ৬টায় ভাষণ দেবেন। মমতার ভাষণের পরই আধঘণ্টা ধরে চলবে গান-বাজনা, সংবর্ধনা দেয়া এবং টস। খেলা শুরু হওয়ার আগে অমিতাভ ও সাফকাত জাতীয় সঙ্গীত গাইবেন। শেষে শুরু হয়ে যাবে ভারত-পাকিস্তান মহাযুদ্ধ। যে যুদ্ধের আগে মিলনমেলায় একটি নাম ঘোষণা না হওয়ায় আবার হতবাকও হতে হলো। তিনি ১৯৮৩ সালে ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কপিল দেব! ‘কারো পোষ মাস, কারো সর্বনাশ।’ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকে ঘিরে এমন প্রবাদই এখন চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশ্বকাপে এ দুই দলের ম্যাচটি জুড়ে সবসময়ই উত্তাপ ছড়ায়। এবার সেই উত্তাপ যে কোন সময়ের চেয়ে বেড়ে গেছে। খেলাটি কলকাতার ঐতিহাসিক স্টেডিয়াম ইডেন গার্ডেনে বলেই সেই উত্তাপ, উত্তেজনা সবার মধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ কলকাতাবাসীর এ উত্তাপ গায়ে লাগারই কথা ছিল না। কলকাতার কাছে পোষ মাস হয়েই ম্যাচটি ধরা দিয়েছে। আর সর্বনাশ হয়েছে ধর্মশালাবাসীর! ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল ধর্মশালায়। কত আয়োজন, কত প্রস্তুতি ছিল ম্যাচকে ঘিরে।
×