ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ড. মো. আনোয়ার হোসেন

রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে প্রয়োজন সৎ মানুষ

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ১৫ মার্চ ২০১৬

রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে প্রয়োজন সৎ মানুষ

আমার বয়স ৬৬ পার হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার ৪১ বছরও সম্প্রতি অতিক্রম করেছি। সামনের বছর (২০১৭) জুনে আমি অবসরকালীন ছুটিতে যাব। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাড়তি এক বছর এবং আমার জন্ম জুনের পর আগস্ট মাসে হওয়াতে বয়স ৬৫ পেরুলেও এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছি। আমরা অবসরে যাই জুন মাসে। জীবনের এই ক্ষণে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেব এবং তা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বা জাসদে, যার সঙ্গে আমি অতীতে যুক্ত ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ আইনে পরিচালিত হয়। সে আইনে শিক্ষকদের সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হতে বাধা নেই। দলের সদস্যও হতে পারেন তারা। তারপরও আমি জানি নানা কৈফিয়ত আমাকে দিতে হবে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-শুভানুধ্যায়ী, সহকর্মী-শিক্ষককুল, ছাত্র-ছাত্রী-তরুণ প্রজন্ম, সুশীল সমাজ, মিডিয়া, বিদ্যজন ও মান্যজন, নানা দর্শনের রাজনীতিবিদগণ এবং সর্বোপরি নিজের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে নানা প্রশ্নে। আমার জাসদে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে নিজেকে যুক্ত করার পেছনের কারণগুলো প্রথমে উল্লেখ করে তারপর উপরের সম্ভাব্য প্রশ্নগুলোর বিষয়ে আমার কৈফিয়ত দিতে চেষ্টা করব। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় রকমের শূন্যতা বিরাজ করছে। রাজনীতি মুখ্যত ডান বলয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত এবং জাতীয় পার্টি এই বলয়ের রাজনৈতিক দল। এসব দলের মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনেকাংশে ধারণ করে। মুখ্যত এই দল সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২’র সংবিধানের চার মূলনীতি : গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। তবে ১৯৭২ সালের সংবিধানে প্রধানত প্রত্যাবর্তন করলেও দুটি মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র থেকে আওয়ামী লীগ চেতনাগতভাবে ও কার্যত সরে এসেছে। ডান বলয়ের রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সমাজের ধনবান শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করেও সমাজের মূল উৎপাদক শ্রেণী ও বিত্তহীন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নানা সংস্কারমূলক কর্মসূচী নিয়ে থাকে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বিদেশী ঋণনির্ভর না হয়ে স্বয়ম্ভর জাতীয় অর্থনীতি বিকাশে শেখ হাসিনার দৃঢ়চিত্ত সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের সুফল বাংলাদেশ ও তার বিশাল জনগোষ্ঠী পাচ্ছে। তারপরও সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডান বলয়ের বাকি তিনটি দল মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। সংবিধানের চার মূলনীতির কোনটিই তারা বিশ্বাস করে না। দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি এদের কোন আনুগত্য নেই। এই তিনটি দলের নষ্ট অতীত এবং সামরিক স্বৈরশাসন ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ঘাতক ও যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ের প্রবল গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে জেগে ওঠা বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের চেতনার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের কারণে তারা আজ ক্ষয়িষ্ণু ও বিলীয়মান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দণ্ড কার্যকর এবং জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণে জামায়াত এখন দৌড়ের ওপর আছে। জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য অটুট রাখতে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নীতিগত অবস্থান ও জঙ্গী ঘাতকদের সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র বিএনপিকে অতি দ্রুত একটি অকার্যকর রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেছে। এই দু’জনকে নেতৃত্বে রেখে বিএনপির পক্ষে রাজনীতির মাঠ পুনর্দখল সম্ভব হবে না। বিকল্প কোন নেতাও এই দলে দৃশ্যমান নেই। রাজনীতিতে ক্লাউন হিসেবে পরিচিত জেনারেল এরশাদের জাতীয় পার্টি দ্রুত ভাঙ্গনের মুখে। এরশাদের বিদায়ের মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টিও বিলীন হয়ে যাবে। বাম বা মধ্যবাম বলয়ে রাজনৈতিক শক্তি শতধা বিভক্ত ও এই মুহূর্তে খুবই দুর্বল। সমাজের উৎপাদক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষাকারী দল হিসেবে তারা আবির্ভূত হতে পারেনি। বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪ দলীয় বাম মোর্চা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হলেও গত দু’বছরে এই মোর্চার সম্ভাবনাময় দুটি দল জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি এখনও জনমনে তেমন ছাপ ফেলতে পারেনি। এই মোর্চার বাইরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও দ্বিধাবিভক্ত বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ক্রমাগত তাদের ভ্রান্ত রাজনীতির কারণে আরো ক্ষুদ্র দলে পরিণত হয়েছে। জনমনে তাদের প্রতি আস্থা এখন আর তেমন অবশিষ্ট নেই। সব মিলিয়ে রাজনীতির পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দেশে কার্যত কোন বিরোধী দল নেই। আপাতদৃষ্টিতে আওয়ামী লীগের জন্য এখন খুবই সুসময়। দূর ও নিকট অতীতে জামায়াত-বিএনপি ও ইসলাম নামধারী জঙ্গীদের জ্বালাও-পোড়াও-হত্যা ও সম্পদ ধ্বংসের প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল হিসেবে শেখ হাসিনার পরিচালনায় আওয়ামী লীগের এমন একক সবল অবস্থান দেশের উন্নয়নের জন্য কাম্য বলে বিবেচিতও হতে পারে। বাস্তবেও তার ইতিবাচক ফলাফল স্পষ্ট দৃশ্যমান। বিএনপি-জামায়াত ও এরশাদের দীর্ঘ অপশাসনে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ সবই ভাল ও ইতিবাচক। প্রশ্ন হচ্ছে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থবহভাবে ধারণ করে ও সংবিধানের চার মূলনীতি বাস্তবায়নে দৃঢ়চিত্ত থাকে এমন বিকল্প রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতিতে বর্তমানের দৃশ্যমান সুসময় কতদিন বিরাজ করবে? তেমন রাজনৈতিক শক্তি কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত না হলে কি পরিণতি হতে পারে দেশের? তেমন অবস্থায় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ করবে কোন্ শক্তি? তা কি বর্তমানের উত্থানপর্বের বাংলাদেশের জন্য কোন ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে? এ সব বিষয়ে বাংলাদেশের অতীত অবস্থাটি পর্যালোচনা করলে আমরা একটি বেদনাদায়ক ও ভয়াবহ চিত্রের সম্মুখীন হব। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীবলে বহুদলীয় সংসদীয় সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি শাসিত একদলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। দেশের সকল রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল নামের একক রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাকশাল শাসন আপাতদৃষ্টিতে অত্যন্ত শক্তিশালী হিসেবে প্রতিভাত হলেও দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক শূন্যতায় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী শক্তি রাষ্ট্রযন্ত্রের অভ্যন্তরে নিজেদের সংগঠিত করে এবং মাত্র ৭ মাসের মাথায় সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশের সর্বময় ক্ষমতা দখল করে নেয়। এই ষড়যন্ত্রে আওয়ামী লীগে বঙ্গবন্ধুর অতি ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা ও বাকশালের কার্যকরী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশতাক ও রাষ্ট্রীয় সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রে বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিতজনেরা মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় বঙ্গবন্ধু বাকশাল ব্যবস্থার যে লক্ষ্য ও রূপরেখা উপস্থাপন করেছিলেন তা বাস্তবায়িত হতে পারলে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে বিদ্যমান রাষ্ট্রের স্থলে স্বাধীন দেশের উপযোগী বিকল্প রাজনৈতিক শাসন গড়ে উঠতে পারত। স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরেই তেমন একটি ব্যবস্থা কায়েমের দাবি করেছিল মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে অগ্রগামী ও বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন তরুণ নেতৃত্ব। কয়েকশত বছরে গেড়ে বসা ঔপনিবেশিক শাসনের কঠিন নিগড় ভেঙ্গে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের উপযোগী রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের যথার্থ সময় ছিল তখন। কারণ মুক্তিযুদ্ধে জয়ী জনগণের স্বপ্ন, আকাক্সক্ষা ও সাহস তখন ছিল আকাশচুম্বী। সশরীরে না থাকলেও বঙ্গবন্ধুর নামেই মুক্তিযুদ্ধ করেছে মানুষ, অকাতরে জীবন দিয়েছে তাঁর নাম উচ্চারণ করেই। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই সম্ভব ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্রটি গুঁড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে জেগে ওঠা বিপুল শক্তিকে দিয়ে নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা। তার সেনাবাহিনী ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কিন্তু সময়ের কাজ সময়ে না করা বা করতে না পারার ফলে একদিকে সাধারণ মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়েছে, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বিদ্যমান রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী, আমলাতন্ত্র, বিচার ব্যবস্থাসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ সকল শাখায় নিজেদের সংগঠিত করেছে, ষড়যন্ত্র করেছে। মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগামী অংশ যারা সেই ষাটের দশক থেকে বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামকে ফলবতী করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে গেছেন, স্বাধীনতার পরপর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিপ্লবী জাতীয় সরকারের সঠিক দাবিটি উত্থাপন করেছেন, তাদেরই নেমে পড়তে হয়েছে বঙ্গবন্ধুবিরোধী অবস্থানে। অবশ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে সিরাজুল আলম খানের দিকনির্দেশনায় মুক্তিযুদ্ধের পরীক্ষিত শক্তির এত দ্রুত বঙ্গবন্ধুবিরোধী অবস্থান গ্রহণ সময়ের বিচারে সঠিক ছিল কিনা তা নিয়েও সঙ্গত প্রশ্ন আছে। তবে জাসদ নামে আবির্ভূত মুক্তিযুদ্ধের তারুণ্যমণ্ডিত রাজনৈতিক শক্তিকে একটি কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে গড়ে উঠতে দিলে রাজনৈতিক শূন্যতায় নিমজ্জিত হতো না বাংলাদেশ। ষড়যন্ত্রকারীরা শূন্যস্থান পূরণে সমর্থ হতো না। উপরের পর্যালোচনার আলোকে এবং অতীতের ভুল-শুদ্ধের কষ্টিপাথরে আপন অবস্থান সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে করণীয় নির্ধারণ হবে আমাদের মুখ্য রাজনৈতিক কর্তব্য। আওয়ামী লীগের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থবহভাবে ধারণ করে এমন মধ্যবাম রাজনৈতিক শক্তির একমাত্র বিবেচনা হবে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে নিজেদের সংগঠিত করা। সমাজের উৎপাদক শ্রেণীর আস্থাভাজন বিকল্প শক্তি হয়ে ওঠা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য বজায় রেখেও কার্যকর এবং শক্তিশালী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা। আগেই বলেছি রাজনৈতির ময়দানে ডানপন্থী বিভিন্ন শক্তির মধ্যেই ক্ষমতা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতিতে সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাসী শক্তির অপেক্ষায় আছে দেশের মেহনতি মানুষ, সত্যিকার সুশীল সমাজ ও নতুন প্রজন্ম। আমার বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে এমন মধ্যবাম রাজনৈতিক দলের মধ্যে একমাত্র জাসদের পক্ষেই এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন সম্ভব। কারণ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে এই শক্তির অভিজ্ঞতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে জাসদের অনমনীয় সাহস, দৃঢ়তা ও নেতাকর্মীদের অকাতরে জীবনদানের দৃষ্টান্ত, জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের পর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা, প্রতিবিপ্লবের মুখে পরাজয়ের অভিজ্ঞতা, নানা বিভক্তির পরও জাসদের মূল ধারাটির মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে অনমনীয় অবস্থান গ্রহণ, আওয়ামী লীগ ও বাম রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে সামরিক স্বৈরশাসন ও বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গীদের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে নিয়োজিত থাকাÑ এসব বিরল অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ জাসদ। অতীতে এই দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এবং এখনও বেঁচে আছেন এমন অসংখ্য রাজনীতিসচেতন মানুষ সারাদেশে ছড়িয়ে আছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন বেগবান সংগ্রামে, বিশেষ করে ঘাতক-দালাল-যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলন ও শাহবাগে জাতীয় পুনর্জাগরণে শামিল হওয়া তরুণ প্রজন্ম যারা সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছে, তাদের প্রত্যাশা পূরণে অন্যতম রাজনৈতিক দল হিসেবে জাসদকেই এগিয়ে আসতে হবে। তাই সক্রিয় রাজনীতিতে নিজেকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে জাসদকে বেছে নিতে আমাকে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হয়নি। যেসব সম্ভাব্য প্রশ্নের কৈফিয়ত আমাকে দিতে হবে : ১. ‘আমরা রাজনীতিকে ঘৃণা করি’। কেন ঐ ক্লেদে নিজেকে জড়াবেন? সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের চালু করা এমন অপসংস্কৃতি দেশে বিরাজনীতিকরণে প্রভূত ভূমিকা রেখেছে; রাজনীতিবিমুখ করেছে মেধাবী জনগোষ্ঠীকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্ব সময় ও স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরেও রাজনীতিকে এমন হেয় দৃষ্টিতে দেখা হয়নি। রাজনীতিতে যোগ দেয়াকে গৌরব জ্ঞান করেছে তারুণ্য। তার ফলেই মহান সব অর্জন সম্ভব হয়েছে। তেমন একটি অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সকলের রাজনৈতিক সচেতনতা অর্জন এবং সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ জরুরী। রাজনীতিকে ক্লেদমুক্ত করতেও তা প্রয়োজন। বাংলার প্রবাদ “উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সঙ্গে, তিনিই মধ্যম, যিনি চলেন তফাতে” আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। ২. শিক্ষকতার মহান পেশাই আপনার জন্য উত্তম। সক্রিয় রাজনীতিতে নামা যথার্থ হবে না। উন্নততর এবং আলোকিত সমাজ গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, তাতে কোন সন্দেহ নেই। চার দশকের অধিক সময় আমি এই মহান পেশায় নিবিষ্ট থেকে শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে অবিচল থেকেছি, দায়িত্ব পালনে কখনও শিথিলতা প্রদর্শন করিনি। শিক্ষকতায় থেকেও দেশের নানা সঙ্কটে ভূমিকা রেখেছি, দু’দুবার কারাবরণও করেছি। নিঃসন্দেহে এই পেশায় জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় আমি কাটিয়েছি। শিক্ষক জীবনের শেষ প্রান্তে এসে রাজনীতিতে আমার সক্রিয় অংশগ্রহণ দেশের ব্যাপক ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের কাছে এই বার্তা হোক যে, তাদের শিক্ষক ও সহকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ-ি পেরিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে জীবনের পাঠশালায় ফিরে গেছেন। ৩. সক্রিয় রাজনীতির বাইরে থেকেও আপনি সুস্থ রাজনীতি বিকাশে অবদান রাখতে পারেন। সে দায়িত্ব পালনে আমি সবসময় সচেষ্ট থেকেছি। এবার রাজনীতির কঠিন সংগ্রামে নিয়োজিত হয়ে জীবনের বাকি সময়টুকু আমি পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে চাই। শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখালেখির যে চর্চা আমি করে এসেছি তাও অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব। ৪. বাংলাদেশে জাসদের আবির্ভাব দেশের এবং জনগণের জন্য কোন সুফল বয়ে আনেনি। জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের জন্য জাসদ পরোক্ষভাবে দায়ী। এই অভিযোগের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত নই। বাংলাদেশে জাসদ শুধু একা নয়, আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আমরা সবাই নানা গুরুতর ভুল করেছি, কঠিন মাসুলও দিয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি, হারিয়েছি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন তেমন জাতীয় নেতাদের। হারিয়েছি কর্নেল তাহেরের মতো বিপ্লবী প্রাণকে, কাজী আরেফের মতো অনমনীয় ও সৎ রাজনৈতিক সংগঠককে, হারিয়েছি অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে। জাসদ সম্পর্কে শেষ কথা বলে দেয়ার সময় এখনও আসেনি। এর মূল্যায়ন চলছে, আগামী দিনেও চলবে। তবে একথা স্পষ্টতই বলা যায় যে, জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের পর জাসদই হয়েছে দক্ষিণপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির আঘাতের মূল লক্ষ্যবস্তু। জাসদ ছিল বলেই একটি মধ্যপন্থী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ রক্ষা পেয়েছে। তা না হলে ইন্দোনেশিয়ার জাতির জনক সুকর্নর দলের পরিণতি হতো আওয়ামী লীগের। ৫. সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির ক্ষমতাসীন হওয়া এবং দুই যুগের বেশি নিরঙ্কুশভাবে দেশ শাসনের কারণে বাংলাদেশ যে বহু বছর পিছিয়ে গেল তার দায়ভাগ জাসদের। জাসদের সহযোগিতায় কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে ৭ নবেম্বরের সিপাহী অভ্যুত্থান জিয়াউর রহমানের প্রতিবিপ্লবের কাছে পরাজিত হয়েছিল বলে জিয়ার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি ক্ষমতাসীন হতে পেরেছিল। সেই অর্থে এই অভিযোগের দায়ভাগ জাসদ, কর্নেল তাহের ও সিরাজুল আলম খান এড়াতে পারেন না। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতা দখলকারী মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সাধারণ সিপাহীদের অভ্যুত্থান রচনা করে জাসদ অন্তত একটি উদ্যোগ নিয়েছিল, আওয়ামী লীগ বা অন্য কোন রাজনৈতিক দল তাও নিতে পারেনি। জাতির সেই দুঃসময়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জাসদ যদি কোন ভূমিকা না রাখত তাহলেও আওয়ামী লীগ নয়, দক্ষিণপন্থীরাই ক্ষমতায় আসত। তার কারণ জাসদ সৃষ্টি করেনি। স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তানী রাষ্ট্রযন্ত্র অটুট রাখাই মূল কাল হয়ে দেখা দিয়েছিল। তাকে ভাঙতে জাসদ চেষ্টা করেছে, সফল হয়নি। ফলে প্রতিবিপ্লবী শক্তির মূল আঘাত নিজেকে সহ্য করতে হয়েছে। ৬. জাসদ বহুধা বিভক্ত। এই দলের কোন ভবিষ্যত নেই। জনসমর্থনও নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আস্থা অর্জন ছাড়া কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বড় বিজয় লাভ সম্ভব হয় না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ তা করতে পেরেছিল বলেই ’৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়লাভ ও তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্ভব হয়েছিল। যে নিবিড় জনসংযোগ ও গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু সারাদেশের সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন, তা রচনায় মুখ্য ভূমিকা রেখেছিল যে তরুণ নেতৃত্ব তারাই জাসদ প্রতিষ্ঠা করেছিল স্বাধীন বাংলাদেশে। সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অতি দ্রুত জাসদ আওয়ামী লীগের বাইরে একটি জনসম্পৃক্ত সম্ভাবনাময় দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছিল। কিন্তু ৭ নবেম্বর অভ্যুত্থানে পরাজয়, গোপন বিচার প্রহসনে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি এবং শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাজা ও সারাদেশে নেতাকর্মীদের ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নে জাসদ দুর্বল হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দলের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এমন বিপর্যয়ের ঘটনার বহু নিদর্শন পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের ইতিহাসেও এমন দৃষ্টান্ত আছে। লক্ষ্যে স্থির দৃঢ়চিত্ত ও সাহসী প্রজ্ঞাবান নেতৃত্ব আপোসহীন থেকে পুনরায় জনসমর্থনে পুষ্ট হয়ে পূর্বের চেয়েও শক্তিশালী দলে পরিণত হয়, বড় বিজয় অর্জন করে। জাসদের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতা সিরাজুল আলম খানের পোশাক বদল তত্ত্বের মোড়কে বিশ্বাসঘাতক সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে অনৈতিক আপোসের ফল হিসেবে তিনি নিজে এবং মেজর জলিল, আসম রব ও শাজাহান সিরাজ জেল থেকে বেরিয়ে আসায় জনমনে জাসদের আপোসহীন ভাবমূর্তিটি মলিন হয়ে পড়ে। নীতিহীন আপোসের পথ ধরলে যে পরিণতি হওয়ার কথা জাসদের ক্ষেত্রে তাই হলো। মুক্তিযুদ্ধের চার বরেণ্য নেতা সম্পূর্ণ অপাঙক্তেয় ব্যক্তিতে পরিণত হলেন। জাসদ বহুধা বিভক্ত হলো। কিন্তু এসব বিভক্তির পরও জাসদের মূল স্রোত দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও সফলতা-ব্যর্থতার পথ পেরিয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যত রাজনীতির সঠিক পথটি অনুসরণ করছে। তা হলো মুক্তিযুদ্ধের ফসল সংবিধানের চার মূলনীতির পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে অবিচল থাকা। একটি মধ্যবাম রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আশা-আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচী হাজির করা। বর্তমান দেশীয় ও বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে একটি ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সামাজিক গণতন্ত্রকে (ঝড়পরধষ উবসড়পৎধপু) মূল রাজনৈতিক লক্ষ্য স্থির করে জনগণের আস্থা অর্জনে সতত নিয়োজিত থাকা। জাতীয় সংসদে আসন বৃদ্ধি করে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়া। তা সম্ভব হবে যদি জাসদ জনগণের সঙ্গে নিবিড় ও আস্থার সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। এই দুরূহ পথ অতিক্রম করতে পারলে জাসদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত থাকবে। আওয়ামী লীগের বিকল্প রাজনৈতিক দল হিসেবে জনসমর্থনও পাবে। ৭. রাজনীতিতে যোগ দিতে হলে আওয়ামী লীগে যোগ দিন। বহু বছর ধরে আওয়ামী লীগ ও তার সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে এসেছেন আপনি। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে এই দল ও তার কাণ্ডারি শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেয়াকে যথার্থ বলে মনে করেছি। জাসদে যোগ দেয়ার পরও সংবিধানের চার মূলনীতি বাস্তবায়নে ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি বা অসাংবিধানিক শক্তির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার প্রতি আমার সক্রিয় সমর্থন অব্যাহত থাকবে। পূর্বেই উল্লেখ করেছি ডান বলয়ের আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের মূল জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে তেমন কোন অবদান রাখা যাবে না। ৮. দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের শক্তি যে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আছে তাকে আরও শক্তিশালী করা এই মুহূর্তের রাজনৈতিক কর্তব্য। আপনার জাসদে যোগদান তাকে দুর্বল করবে। আমার জাসদে যোগদানের অর্থ এই নয় যে, মুক্তিযুদ্ধের শক্তির ঐক্যবদ্ধ অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসা। বরং এই ঐক্যকে অর্থবহ করা হবে অন্যতম লক্ষ্য। মুক্তিযুদ্ধের একটি দলের শক্তিশালী অবস্থান ১৪ দলীয় জোটকে শক্তিশালী করবে। ৯. জাসদের অতীত রাজনীতির পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না। জাসদ অতীতের রাজনীতির অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করেই নতুন রূপে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবির্ভূত হবে। তার রূপরেখা পূর্বে উল্লেখ করেছি। ১০. শেখ হাসিনার সরকারের কাছ থেকে আপনার কিছু পাবার আশা নেই। তাই আপনার জাসদে যোগদান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাকে আমি সব সময় পরম জ্ঞান করেছি। আমার চাওয়া থেকে নয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠিন দুঃসময়ে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক ইচ্ছাকে সম্মান জানাতেই উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। স্বল্পতম সময়ে সিনেট ডেকে নির্বাচিত উপাচার্য হিসেবে উচ্চ নৈতিকতার স্থান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছি। দায়িত্ব পালনে কোন শিথিলতা দেখাইনি। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশ সৃষ্ট লাগাতার অনৈতিক ও চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে পদত্যাগই ছিল একজন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন শিক্ষকের একমাত্র করণীয়। সে পথ অনুসরণ করে আপন কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসেছি। যদিও নির্বাচিত উপাচার্য নিজে পদত্যাগ না করলে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া যেত না। পদত্যাগের বিনিময়ে সরকারের কাছে অন্য কোন পদও চাইনি। অন্যদিকে জাসদের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে আমার ব্যক্তিগতভাবে পাওয়ার কিছু নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করব, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সুস্থ বিকাশের জন্য জাসদের মতো দলের সবল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের প্রয়োজনীয়তা যেন তিনি উপলব্ধি করেন। তাঁর কাছ থেকে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় পাওয়া। চলবে... লেখক : অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
×